مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ شُعْبَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ خُبَيْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُعَلَّى قَالَ كُنْتُ أُصَلِّيْ فِي الْمَسْجِدِ فَدَعَانِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ أُجِبْهُ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ كُنْتُ أُصَلِّيْ فَقَالَ أَلَمْ يَقُلْ اللهُ {اسْتَجِيْبُوْا لِلهِ وَلِلرَّسُوْلِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيْكُمْ} ثُمَّ قَالَ لِيْ لَأُعَلِّمَنَّكَ سُوْرَةً هِيَ أَعْظَمُ السُّوَرِ فِي الْقُرْآنِ قَبْلَ أَنْ تَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ ثُمَّ أَخَذَ بِيَدِيْ فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يَخْرُجَ قُلْتُ لَهُ أَلَمْ تَقُلْ لَأُعَلِّمَنَّكَ سُوْرَةً هِيَ أَعْظَمُ سُوْرَةٍ فِي الْقُرْآنِ قَالَ {الْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ}هِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِيْ وَالْقُرْآنُ الْعَظِيْمُ الَّذِيْ أُوْتِيْتُهُ
আবূ সা‘ঈদ ইবনু মু‘আল্লা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একদা মাসজিদে নাববীতে সলাত আদায় করছিলাম, এমন সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে ডাকেন। কিন্তু ডাকে আমি সাড়া দেইনি। পরে আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি সলাত আদায় করছিলাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ কি বলেননি যে, ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা সাড়া দেবে আল্লাহ্ ও রসূলের ডাকে, যখন তিনি তোমাদেরকে ডাক দেন (সূরাহ আনফাল ৮/২৪)। তারপর তিনি আমাকে বললেন, তুমি মাসজিদ থেকে বের হওয়ার আগেই তোমাকে আমি কুরআনের এক অতি মহান সূরাহ্ শিক্ষা দিব। তারপর তিনি আমার হাত ধরেন। এরপর যখন তিনি মাসজিদ থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা করেন তখন আমি তাঁকে বললাম, আপনি কি বলেননি যে আমাকে কুরআনের অতি মহান সূরাহ্ শিক্ষা দিবেন? তিনি বললেন, الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য যিনি বিশ্ব জগতের প্রতিপালক, এটা বারবার পঠিত সাতটি আয়াত এবং মহান কুরআন যা কেবল আমাকেই দেয়া হয়েছে। [৪৬৪৭, ৪৭০৩, ৫০০৬] (আ.প্র. ৪১১৬, ই.ফা. ৪১১৯)
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ سُمَيٍّ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا قَالَ الإِمَامُ {غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّيْنَ} فَقُوْلُوْا آمِيْنَ فَمَنْ وَافَقَ قَوْلُهُ قَوْلَ الْمَلَائِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যখন ইমাম বলবে غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ তখন তোমরা বলবে آمِينَ আল্লাহ আপনি কবূল করুন। যার পড়া মালায়িকাদের পড়ার সময় হবে, তার আগের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। [৭৮২] (আ.প্র. ৪১১৭, ই.ফা. ৪১২০)
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ح و قَالَ لِيْ خَلِيْفَةُ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيْدٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَجْتَمِعُ الْمُؤْمِنُوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُوْلُوْنَ لَوْ اسْتَشْفَعْنَا إِلَى رَبِّنَا فَيَأْتُوْنَ آدَمَ فَيَقُوْلُوْنَ أَنْتَ أَبُو النَّاسِ خَلَقَكَ اللهُ بِيَدِهِ وَأَسْجَدَ لَكَ مَلَائِكَتَهُ وَعَلَّمَكَ أَسْمَاءَ كُلِّ شَيْءٍ فَاشْفَعْ لَنَا عِنْدَ رَبِّكَ حَتَّى يُرِيْحَنَا مِنْ مَكَانِنَا هَذَا فَيَقُوْلُ لَسْتُ هُنَاكُمْ وَيَذْكُرُ ذَنْبَهُ فَيَسْتَحِي ائْتُوْا نُوْحًا فَإِنَّهُ أَوَّلُ رَسُوْلٍ بَعَثَهُ اللهُ إِلَى أَهْلِ الْأَرْضِ فَيَأْتُوْنَهُ فَيَقُوْلُ لَسْتُ هُنَاكُمْ وَيَذْكُرُ سُؤَالَهُ رَبَّهُ مَا لَيْسَ لَهُ بِهِ عِلْمٌ فَيَسْتَحِيْ فَيَقُوْلُ ائْتُوْا خَلِيْلَ الرَّحْمَنِ فَيَأْتُوْنَهُ فَيَقُوْلُ لَسْتُ هُنَاكُمْ ائْتُوْا مُوْسَى عَبْدًا كَلَّمَهُ اللهُ وَأَعْطَاهُ التَّوْرَاةَ فَيَأْتُوْنَهُ فَيَقُوْلُ لَسْتُ هُنَاكُمْ وَيَذْكُرُ قَتْلَ النَّفْسِ بِغَيْرِ نَفْسٍ فَيَسْتَحِيْ مِنْ رَبِّهِ فَيَقُوْلُ ائْتُوْا عِيْسَى عَبْدَ اللهِ وَرَسُوْلَهُ وَكَلِمَةَ اللهِ وَرُوْحَهُ فَيَقُوْلُ لَسْتُ هُنَاكُمْ ائْتُوْا مُحَمَّدًا عَبْدًا غَفَرَ اللهُ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ فَيَأْتُوْنِيْ فَأَنْطَلِقُ حَتَّى أَسْتَأْذِنَ عَلَى رَبِّيْ فَيُؤْذَنَ لِيْ فَإِذَا رَأَيْتُ رَبِّيْ وَقَعْتُ سَاجِدًا فَيَدَعُنِيْ مَا شَاءَ اللهُ ثُمَّ يُقَالُ ارْفَعْ رَأْسَكَ وَسَلْ تُعْطَهْ وَقُلْ يُسْمَعْ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ فَأَرْفَعُ رَأْسِيْ فَأَحْمَدُهُ بِتَحْمِيْدٍ يُعَلِّمُنِيْهِ ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِيْ حَدًّا فَأُدْخِلُهُمْ الْجَنَّةَ ثُمَّ أَعُوْدُ إِلَيْهِ فَإِذَا رَأَيْتُ رَبِّيْ مِثْلَهُ ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِيْ حَدًّا فَأُدْخِلُهُمْ الْجَنَّةَ ثُمَّ أَعُوْدُ الرَّابِعَةَ فَأَقُوْلُ مَا بَقِيَ فِي النَّارِ إِلَّا مَنْ حَبَسَهُ الْقُرْآنُ وَوَجَبَ عَلَيْهِ الْخُلُوْدُ
قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ إِلَّا مَنْ حَبَسَهُ الْقُرْآنُ يَعْنِيْ قَوْلَ اللهِ تَعَالَى {خَالِدِيْنَ فِيْهَا}
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ক্বিয়ামাতের দিন মু’মিনগণ একত্রিত হবে এবং তারা বলবে, আমরা যদি আমাদের রবের কাছে আমাদের জন্য একজন সুপারিশকারী পেতাম। এরপর তারা আদম (‘আ.)-এর কাছে আসবে এবং তাঁকে বলবে, আপনি মানব জাতির পিতা। আপনাকে আল্লাহ তা‘আলা নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন। তাঁর মালায়িকাহ দ্বারা আপনাকে সাজদাহ্ করিয়েছেন এবং যাবতীয় বস্তুর নাম আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন। অতএব আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন, যেন আমাদের কঠিন স্থান থেকে আরাম দিতে পারেন। তিনি বলবেন, আমি এ কাজের যোগ্য নই। তিনি নিজ ভুলের কথা স্মরণ করে লজ্জাবোধ করবেন। (তিনি বলবেন) তোমরা নূহ (‘আ.)-এর কাছে যাও। তিনিই প্রথম রসূল (‘আ.) যাকে আল্লাহ জগৎবাসীর কাছে পাঠিয়েছেন। তখন তারা তাঁর কাছে আসবে। তিনিও বলবেন, এ কাজ আমার দ্বারা হওয়ার নয়। তিনি তাঁর রবের কাছে প্রশ্ন করেছিলেন এমন বিষয়ে যা তাঁর জানা ছিল না। সে কথা স্মরণ করে তিনি লজ্জাবোধ করবেন এবং বলবেন বরং তোমরা আল্লাহ্র খলীল (ইব্রাহীম) (‘আ.)-এর কাছে যাও। তারা তখন তাঁর কাছে আসবে, তখন তিনি বলবেন, এ কাজ আমার দ্বারা হওয়ার নয়। তোমরা মূসা (‘আ.)-এর কাছে যাও। তিনি এমন বান্দা যে, তাঁর সঙ্গে আল্লাহ কথা বলেছেন এবং তাঁকে তাওরাত গ্রন্থ দান করেছেন। তখন তারা তাঁর কাছে আসবে। তিনি বলবেন, তোমাদের এ কাজের জন্য আমার সাহস হচ্ছে না এবং তিনি এক কিবতীকে বিনা দোষে হত্যা করার কথা স্মরণ করে তাঁর রবের নিকট লজ্জাবোধ করবেন। তিনি বলবেন, তোমরা ঈসা (‘আ.)-এর কাছে যাও। তিনি আল্লাহ্র বান্দা ও রসূল এবং আল্লাহ্র বাণী ও রূহ্। (তারা সেখানে যাবে) তিনি বলবেন, এ কাজ আমার দ্বারা হওয়ার নয়। তোমরা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে যাও। তিনি এমন এক বান্দা যার পূর্ব ও পরের ভুলত্র“টি আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। তখন তারা আমার কাছে আসবে। তখন আমি আমার রবের কাছে যাব এবং অনুমতি চাব, আমাকে অনুমতি প্রদান করা হবে। আর আমি যখন আমার রবকে দেখব, তখন আমি সাজদাহ্য় লুটিয়ে পড়ব। আল্লাহ যতক্ষণ চান এ অবস্থায় আমাকে রাখবেন। তারপর বলা হবে, আপনার মাথা উঠান এবং চান দেয়া হবে, বলুন শোনা হবে, সুপারিশ করুন কবূল করা হবে। তখন আমি আমার মাথা উঠাব এবং আমাকে যে প্রশংসাসূচক বাক্য শিক্ষা দিবেন তা দ্বারা আমি তাঁর প্রশংসা করব। তারপর সুপারিশ করব। আমাকে একটি সীমারেখা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। (সেই সীমিত সংখ্যায়) আমি তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাব। আমি পুনরায় রবের সমীপে ফিরে আসব। যখন আমি আমার রবকে দেখব তখন আগের মত সবকিছু করব। তারপর আমি সুপারিশ করব। আর আমাকে একটি সীমারেখা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। তদনুসারে আমি তাদের জান্নাতে দাখিল করাব। (তারপর তৃতীয়বার) আমি আবার রবের দরবারে উপস্থিত হয়ে অনুরূপ করব। এরপর আমি চতুর্থবার ফিরে আসব এবং আরয করব এখন তারাই কেবল জাহান্নামে অবশিষ্ট রয়ে গেছে যারা কুরআনের ঘোষণা অনুযায়ী অনেক আছে যাদের উপর জাহান্নামে চিরবাস অবধারিত হয়ে গেছে।
আবূ ‘আবদুল্লাহ বুখারী (রহ.) বলেন, কুরআনের যে ঘোষণায় তারা জাহান্নামে আবদ্ধ রয়েছে তা হল মহান আল্লাহ্র বাণী ঃ “তারা চিরকাল জাহান্নামে থাকবে।” [৪৪; মুসলিম ১/৮৪, হাঃ ১৯৩, আহমাদ ১২১৫৩] (আ.প্র. ৪১১৮, ই.ফা. ৪১২১)
عُثْمَانُ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُرَحْبِيْلَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ سَأَلْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَيُّ الذَّنْبِ أَعْظَمُ عِنْدَ اللهِ قَالَ أَنْ تَجْعَلَ لِلهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ قُلْتُ إِنَّ ذَلِكَ لَعَظِيْمٌ قُلْتُ ثُمَّ أَيُّ قَالَ وَأَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ تَخَافُ أَنْ يَطْعَمَ مَعَكَ قُلْتُ ثُمَّ أَيُّ قَالَ أَنْ تُزَانِيَ حَلِيْلَةَ جَارِكَ.
‘আবদুল্লাহ (ইবনু মাস‘ঊদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, কোন্ গুনাহ আল্লাহ্র কাছে সবচেয়ে বড়? তিনি বললেন, আল্লাহ্র জন্য অংশীদার দাঁড় করান। অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি বললাম, এতো সত্যিই বড় গুনাহ। আমি বললাম, তারপর কোন্ গুনাহ? তিনি উত্তর দিলেন, তুমি তোমার সন্তানকে এই ভয়ে হত্যা করবে যে, সে তোমার সঙ্গে আহার করবে। আমি আরয করলাম, এরপর কোনটি? তিনি উত্তর দিলেন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে তোমার ব্যভিচার করা। [৪৭৬১, ৬০০১, ৬৮১১, ৬৮৬১, ৭৫২০, ৭৫৩২; মুসলিম ১/৩৭, হাঃ ৮৬০] (আ.প্র. ৪১১৯, ই.ফা. ৪১২২)
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ عَنْ عَمْرِو بْنِ حُرَيْثٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ زَيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْكَمْأَةُ مِنَ الْمَنِّ وَمَاؤُهَا شِفَاءٌ لِلْعَيْنِ
সা‘ঈদ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ ...... আল কামাআত (ব্যাঙের ছাতা) মান্ন জাতীয়। আর তার পানি চোখের রোগের প্রতিষেধক। [৪৬৩৯, ৫৭০৮; মুসলিম ৩৬/২৮, হাঃ ২০৪৯, আহমাদ ১৬২৫] (আ.প্র. ৪১২০, ই.ফা. ৪১২৩)
مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ عَنْ ابْنِ الْمُبَارَكِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ قِيْلَ لِبَنِيْ إِسْرَائِيْلَ {ادْخُلُوا الْبَابَ سُجَّدًا وَقُوْلُوْا حِطَّةٌ} فَدَخَلُوْا يَزْحَفُوْنَ عَلَى أَسْتَاهِهِمْ فَبَدَّلُوْا وَقَالُوْا حِطَّةٌ حَبَّةٌ فِيْ شَعَرَةٍ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, বানী ইসরাঈলকে বলা হয়েছিল যে, তোমরা সাজদাহ্ অবস্থায় নগর দ্বারে প্রবেশ কর এবং বল حِطَّةٌ (ক্ষমা চাই) কিন্তু তারা প্রবেশ করল নিতম্ব হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে এবং শব্দকে পরিবর্তন করে তদস্থলে বলল, গম ও যবের দানা। [৩৪০৩] (আ.প্র. ৪১২১, ই.ফা. ৪১২৪)
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُنِيْرٍ سَمِعَ عَبْدَ اللهِ بْنَ بَكْرٍ حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ عَنْ أَنَسٍ قَالَ سَمِعَ عَبْدُ اللهِ بْنُ سَلَامٍ بِقُدُوْمِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ فِيْ أَرْضٍ يَخْتَرِفُ فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنِّيْ سَائِلُكَ عَنْ ثَلَاثٍ لَا يَعْلَمُهُنَّ إِلَّا نَبِيٌّ فَمَا أَوَّلُ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ وَمَا أَوَّلُ طَعَامِ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَمَا يَنْزِعُ الْوَلَدُ إِلَى أَبِيْهِ أَوْ إِلَى أُمِّهِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ بِهِنَّ جِبْرِيْلُ آنِفًا قَالَ جِبْرِيْلُ قَالَ نَعَمْ قَالَ ذَاكَ عَدُوُّ الْيَهُوْدِ مِنَ الْمَلَائِكَةِ فَقَرَأَ هَذِهِ الْآيَةَ {مَنْ كَانَ عَدُوًّا لِّجِبْرِيْلَ فَإِنَّه” نَزَّلَه” عَلٰى قَلْبِكَ} بِإِذْنِ اللهِ أَمَّا أَوَّلُ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ فَنَارٌ تَحْشُرُ النَّاسَ مِنَ الْمَشْرِقِ إِلَى الْمَغْرِبِ وَأَمَّا أَوَّلُ طَعَامٍ يَأْكُلُهُ أَهْلُ الْجَنَّةِ فَزِيَادَةُ كَبِدِ حُوْتٍ وَإِذَا سَبَقَ مَاءُ الرَّجُلِ مَاءَ الْمَرْأَةِ نَزَعَ الْوَلَدَ وَإِذَا سَبَقَ مَاءُ الْمَرْأَةِ نَزَعَتْ قَالَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُوْلُ اللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ الْيَهُوْدَ قَوْمٌ بُهُتٌ وَإِنَّهُمْ إِنْ يَعْلَمُوْا بِإِسْلَامِيْ قَبْلَ أَنْ تَسْأَلَهُمْ يَبْهَتُوْنِيْ فَجَاءَتْ الْيَهُوْدُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَيُّ رَجُلٍ عَبْدُ اللهِ فِيْكُمْ قَالُوْا خَيْرُنَا وَابْنُ خَيْرِنَا وَسَيِّدُنَا وَابْنُ سَيِّدِنَا قَالَ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَسْلَمَ عَبْدُ اللهِ بْنُ سَلَامٍ فَقَالُوْا أَعَاذَهُ اللهُ مِنْ ذَلِكَ فَخَرَجَ عَبْدُ اللهِ فَقَالَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ فَقَالُوْا شَرُّنَا وَابْنُ شَرِّنَا وَانْتَقَصُوْهُ قَالَ فَهَذَا الَّذِيْ كُنْتُ أَخَافُ يَا رَسُوْلَ اللهِ.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর শুভাগমনের খবর পেলেন। তখন তিনি (‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম) বাগানে ফল সংগ্রহ করছিলেন। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এসে বললেন, আমি আপনাকে তিনটি বিষয়ে জিজ্ঞেস করব যা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ব্যতীত অন্য কেউ জানেন না। তা হল ক্বিয়ামাতের প্রথম আলামাত কী? জান্নাতীদের প্রথম খাদ্য কী হবে? এবং সন্তান কখন পিতার মত হয় আর কখন মাতার মত হয়? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমাকে জিব্রীল (‘আ.) এখনই এসব ব্যাপারে জানিয়ে গেলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম বললেন, জিবরীল? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলল, হ্যাঁ। ইবনু সালাম বললেন, সে তো মালায়িকাদের মধ্যে ইয়াহূদীদের শত্রু। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই আয়াত পাঠ করলেন, আপনি বলে দিনঃ যে কেউ জিবরাঈলের শত্র“ এ কারণে যে, সে আল্লাহ্র নির্দেশে আপনার অন্তরে কুরআন অবতীর্ণ করেছে (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/৯৭)। ক্বিয়ামাতের প্রথম আলামাত হল, এক রকম আগুন মানুষদেরকে পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত একত্রিত করবে। আর জান্নাতীরা প্রথমে যা খাবেন তা হল মাছের কলিজার টুকরা। আর যখন পুরুষের বীর্য স্ত্রীর উপর প্রাধান্য লাভ করে তখন সন্তান পিতার আকৃতি পায় এবং যখন স্ত্রীর বীর্য পুরুষের উপর প্রাধান্য লাভ করে তখন সন্তান মাতার আকৃতি পায়। তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি অবশ্যই আল্লাহ্র রসূল। হে আল্লাহ্র রসূল! ইয়াহূদরা চরম মিথ্যারোপকারী। যদি তারা আপনার প্রশ্ন করার পূর্বেই আমার ইসলাম গ্রহণের সংবাদ জেনে যায় তবে তারা আমার প্রতি অপবাদ আরোপ করবে। ইতোমধ্যে ইয়াহূদীরা এসে গেল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইয়াহূদীদের জিজ্ঞেস করলেন, আবদুল্লাহ তোমাদের মধ্যে কেমন লোক? তারা উত্তর দিল, তিনি আমাদের মধ্যে উত্তম এবং আমাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির পুত্র। তিনি আমাদের নেতা এবং আমাদের নেতার ছেলে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যদি ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম ইসলাম গ্রহণ করেন, তাহলে তোমাদের অভিমত কী? তারা বলল, আল্লাহ তাকে এর থেকে রক্ষা করুন। তখন [‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ)] বের হয়ে এসে বললেন, আমি সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অবশ্যই আল্লাহ্র প্রেরিত রসূল। তখন তারা বলল, সে আমাদের মধ্যে মন্দ ব্যক্তি ও মন্দ ব্যক্তির ছেলে। তারপর তারা ইবনু সালাম (রাঃ)-কে দোষী সাব্যস্ত করে সমালোচনা করতে লাগল। তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! এটাই আমি আশঙ্কা করছিলাম। [৩৩২৯] (আ.প্র. ৪১২২, ই.ফা. ৪১২৫)
عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ حَبِيْبٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَقْرَؤُنَا أُبَيٌّ وَأَقْضَانَا عَلِيٌّ وَإِنَّا لَنَدَعُ مِنْ قَوْلِ أُبَيٍّ وَذَاكَ أَنَّ أُبَيًّا يَقُوْلُ لَا أَدَعُ شَيْئًا سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ قَالَ اللهُ تَعَالَى {مَا نَنْسَخْ مِنْ اٰيَةٍ أَوْ نُنْسِهَا}
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) বলেন, উবাই (রাঃ) আমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম ক্বারী, আর ‘আলী (রাঃ) আমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম বিচারক। কিন্তু আমরা উবাই (রাঃ)-এর কিছু কথা বাদ দেই। কারণ উবাই (রাঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে যা শুনেছি তার কিছুই ছাড়ব না। অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি যে আয়াত রহিত করি অথবা ভুলিয়ে দেই ........ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১০৬)। [৫০০৫] (আ.প্র. ৪১২৩, ই.ফা. ৪১২৬)
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ حُسَيْنٍ حَدَّثَنَا نَافِعُ بْنُ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ قَالَ اللهُ كَذَّبَنِي ابْنُ آدَمَ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ ذَلِكَ وَشَتَمَنِيْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ ذَلِكَ فَأَمَّا تَكْذِيْبُهُ إِيَّايَ فَزَعَمَ أَنِّيْ لَا أَقْدِرُ أَنْ أُعِيْدَهُ كَمَا كَانَ وَأَمَّا شَتْمُهُ إِيَّايَ فَقَوْلُهُ لِيْ وَلَدٌ فَسُبْحَانِيْ أَنْ أَتَّخِذَ صَاحِبَةً أَوْ وَلَدًا
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আদম সন্তান আমার ব্যাপারে মিথ্যা কথা বলে। অথচ তার এ কাজ ঠিক নয়। আমাকে গালি দিয়েছে অথচ তার জন্য এটা ঠিক নয়। তার আমার প্রতি মিথ্যারোপ হল, সে বলে যে, আমি তাকে (মৃত্যুর) পূর্বের মত পুনরায় জীবিত করতে সক্ষম নই। আর আমাকে তার গালি দেয়া হলতার এ কথা যে, আমার সন্তান আছে অথচ আমি স্ত্রী ও সন্তান গ্রহণ থেকে পবিত্র। (আ.প্র. ৪১২৩, ই.ফা. ৪১১৭)
مُسَدَّدٌ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ عُمَرُ وَافَقْتُ اللهَ فِيْ ثَلَاثٍ أَوْ وَافَقَنِيْ رَبِّيْ فِيْ ثَلَاثٍ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ لَوْ اتَّخَذْتَ مَقَامَ إِبْرَاهِيْمَ مُصَلًّى وَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ يَدْخُلُ عَلَيْكَ الْبَرُّ وَالْفَاجِرُ فَلَوْ أَمَرْتَ أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْنَ بِالْحِجَابِ فَأَنْزَلَ اللهُ آيَةَ الْحِجَابِ قَالَ وَبَلَغَنِيْ مُعَاتَبَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بَعْضَ نِسَائِهِ فَدَخَلْتُ عَلَيْهِنَّ قُلْتُ إِنْ انْتَهَيْتُنَّ أَوْ لَيُبَدِّلَنَّ اللهُ رَسُوْلَهُ صلى الله عليه وسلم خَيْرًا مِنْكُنَّ حَتَّى أَتَيْتُ إِحْدَى نِسَائِهِ قَالَتْ يَا عُمَرُ أَمَا فِيْ رَسُوْلِ اللهِ مَا يَعِظُ نِسَاءَهُ حَتَّى تَعِظَهُنَّ أَنْتَ فَأَنْزَلَ اللهُ : {عَسٰى رَبُّه” إِنْ طَلَّقَكُنَّ أَنْ يُّبَدِّلَه” أَزْوَاجًا خَيْرًا مِّنْكُنَّ مُسْلِمٰتٍ}
وَقَالَ ابْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوْبَ حَدَّثَنِيْ حُمَيْدٌ سَمِعْتُ أَنَسًا عَنْ عُمَرَ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) বলেছেন, তিনটি বিষয়ে আমার মতামত আল্লাহ্র ওয়াহীর অনুরূপ হয়েছে অথবা (তিনি বলেছেন) তিনটি বিষয়ে আমার মতামতের অনুকূলে আল্লাহ ওয়াহী অবতীর্ণ করেছেন। তা হল, আমি বলেছিলাম হে আল্লাহ্র রসূল! যদি আপনি মাকামে ইব্রাহীমকে সলাতের স্থান হিসাবে গ্রহণ করতেন। এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন ....... তোমরা ইবরাহীমের দাঁড়ানোর জায়গাকে সলাতের জায়গারূপে গ্রহণ কর (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১২৫)। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনার কাছে ভাল ও মন্দ উভয় প্রকারের লোক আসে। কাজেই আপনি যদি উম্মাহাতুল মু’মিনীনদেরকে পর্দা করার আদেশ করবেন। তখন আল্লাহ তা‘আলা পর্দার আয়াত অবতীর্ণ করেন। তিনি আরো বলেন, আমি জানতে পেরেছিলাম যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর কতক স্ত্রীর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তখন আমি তাদের কাছে উপস্থিত হই এবং বলি যে, আপনারা এর থেকে বিরত থাকুন নচেৎ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে আপনাদের পরিবর্তে উত্তম স্ত্রী দান করবেন। এরপর আমি তাঁর কোন স্ত্রীর কাছে আসি, তখন তিনি বললেন, হে ‘উমার! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপারেও নাক গলাতে শুরু করেছ। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্ত্রীগণকে নাসীহাত করে থাকেন আর এখন তুমি তাদের নাসীহাত করতে আরম্ভ করেছ? তখন আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন ঃ عَسَى رَبُّهُ إِنْ طَلَّقَكُنَّ أَنْ يُبَدِّلَهُ أَزْوَاجًا خَيْرًا مِنْكُنَّ مُسْلِمَاتٍ “যদি নাবী তোমাদের সবাইকে তালাক দেন, তবে তাঁর রব অচিরেই তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের চেয়ে উত্তম স্ত্রী তাঁকে দিবেন, যারা হবে আজ্ঞাবহ, ঈমানদার, অনুগত, তাওবাহকারিণী, ‘ইবাদাতকারিণী, সিয়াম পালনকারী, অকুমারী ও কুমারী” (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/৫)।
ইবনু আবী মারইয়াম (রহ.) বলেন, আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, ‘উমার (রাঃ) আমার কাছে এরূপ বলেছেন। [৪০২] (আ.প্র. ৪১২৫, ই.ফা. ৪১২৮)
إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِيْ بَكْرٍ أَخْبَرَ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَلَمْ تَرَيْ أَنْ قَوْمَكِ بَنَوْا الْكَعْبَةَ وَاقْتَصَرُوْا عَنْ قَوَاعِدِ إِبْرَاهِيْمَ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلَا تَرُدُّهَا عَلَى قَوَاعِدِ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ لَوْلَا حِدْثَانُ قَوْمِكِ بِالْكُفْرِ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ لَئِنْ كَانَتْ عَائِشَةُ سَمِعَتْ هَذَا مِنْ رَسُوْلِ اللهِ مَا أُرَى رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَرَكَ اسْتِلَامَ الرُّكْنَيْنِ اللَّذَيْنِ يَلِيَانِ الْحِجْرَ إِلَّا أَنَّ الْبَيْتَ لَمْ يُتَمَّمْ عَلَى قَوَاعِدِ إِبْرَاهِيْمَ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তোমার কি জানা নেই যে, তোমার সম্প্রদায় কুরাইশ কা‘বা তৈরী করেছে এবং ইবরাহীম (‘আ.)-এর ভিত্তির থেকে ছোট নির্মাণ করেছে? [‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন] আমি তখন বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি কি ইবরাহীম (‘আ.)-এর ভিত্তির উপর কা‘বাকে আবার নির্মাণ করবেন না? তিনি বললেন, যদি তোমার গোত্রের কুফরীর যুগ নিকট অতীতে না হত। এ কথা শুনে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, যদি ‘আয়িশাহ (রাঃ) এ কথা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে শুনে থাকেন, তবে আমার মনে হয় যে এ কারণেই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাজরে আসওয়াদ সংলগ্ন দু’ রুকনকে চুম্বন করতেন না, বর্জন করেছেন, যেহেতু বাইতুল্লাহ্র নির্মাণ কাজ ইবরাহীম (‘আ.)-এর ভিতের উপর সম্পূর্ণ করা হয়নি। [১২৬] (আ.প্র. ৪১২৬, ই.ফা. ৪১২৯)
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ الْمُبَارَكِ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِيْ كَثِيْرٍ عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَ أَهْلُ الْكِتَابِ يَقْرَءُوْنَ التَّوْرَاةَ بِالْعِبْرَانِيَّةِ وَيُفَسِّرُوْنَهَا بِالْعَرَبِيَّةِ لِأَهْلِ الإِسْلَامِ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَا تُصَدِّقُوْا أَهْلَ الْكِتَابِ وَلَا تُكَذِّبُوْهُمْ وَقُوْلُوْا {اٰٰمَنَّا بِاللهِ وَمَآ أُنْزِلَ إِلَيْنَا}
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আহলে কিতাব (ইয়াহূদী) ইবরানী ভাষায় তাওরাত পাঠ করে মুসলিমদের কাছে তা আরবী ভাষায় ব্যাখ্যা করত। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা আহলে কিতাবকে বিশ্বাসও কর না আর অবিশ্বাসও কর না এবং (আল্লাহ্র বাণী) “তোমরা বল, আমরা আল্লাহ্তে ঈমান এনেছি এবং যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তাতে . . . .” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৩৬)। [৭৩৬২, ৭৫৪২] (আ.প্র. ৪১২৭, ই.ফা. ৪১৩০)
أَبُوْ نُعَيْمٍ سَمِعَ زُهَيْرًا عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى إِلَى بَيْتِ الْمَقْدِسِ سِتَّةَ عَشَرَ شَهْرًا أَوْ سَبْعَةَ عَشَرَ شَهْرًا وَكَانَ يُعْجِبُهُ أَنْ تَكُوْنَ قِبْلَتُهُ قِبَلَ الْبَيْتِ وَأَنَّهُ صَلَّى أَوْ صَلَّاهَا صَلَاةَ الْعَصْرِ وَصَلَّى مَعَهُ قَوْمٌ فَخَرَجَ رَجُلٌ مِمَّنْ كَانَ صَلَّى مَعَهُ فَمَرَّ عَلَى أَهْلِ الْمَسْجِدِ وَهُمْ رَاكِعُوْنَ قَالَ أَشْهَدُ بِاللهِ لَقَدْ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قِبَلَ مَكَّةَ فَدَارُوْا كَمَا هُمْ قِبَلَ الْبَيْتِ وَكَانَ الَّذِيْ مَاتَ عَلَى الْقِبْلَةِ قَبْلَ أَنْ تُحَوَّلَ قِبَلَ الْبَيْتِ رِجَالٌ قُتِلُوْا لَمْ نَدْرِ مَا نَقُوْلُ فِيْهِمْ فَأَنْزَلَ اللهُ {وَمَا كَانَ اللهُ لِيُضِيْعَ إِيْمَانَكُمْ إِنَّ اللهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوْفٌ رَّحِيْمٌ}
বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাদীনাতে ষোল অথবা সতের মাস যাবৎ বাইতুল মাকদাসের দিকে মুখ করে সলাত আদায় করেন। অথচ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বাইতুল্লাহর দিকে তার কিবলা হওয়াকে পছন্দ করতেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘আসর এর সলাত (কা‘বার দিকে মুখ করে) আদায় করেন এবং লোকেরাও তাঁর সঙ্গে সলাত আদায় করেন। এরপর তাঁর সঙ্গে সলাত আদায়কারী একজন বের হন এবং তিনি একটি মাসজিদের লোকেদের পার্শ্ব দিয়ে গেলেন তখন তারা রুকু অবস্থায় ছিলেন। তিনি বললেন, আমি আল্লাহ্কে সাক্ষী রেখে বলছি যে, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে মাক্কাহর দিকে মুখ করে সলাত আদায় করেছি। এ কথা শোনার পর তাঁরা যে অবস্থায় ছিলেন, সে অবস্থায় বাইতুল্লাহর দিকে ফিরে গেলেন। আর যারা কিবলা বাইতুল্লাহর দিকে পরিবর্তনের পূর্বে বাইতুল মাকদাসের দিকে সলাত আদায় অবস্থায় মারা গিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন, তাদের সম্পর্কে আমরা কী বলব তা আমাদের জানা ছিল না। তখন আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন “আল্লাহ এমন নন যে, তোমাদের ঈমান ব্যর্থ করে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি পরম মমতাময়, পরম দয়ালু” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪৩)। [৪০] (আ.প্র. ৪১২৮, ই.ফা. ৪১৩১)
يُوْسُفُ بْنُ رَاشِدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ وَأَبُوْ أُسَامَةَ وَاللَّفْظُ لِجَرِيْرٍ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ وَقَالَ أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا أَبُوْ صَالِحٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُدْعَى نُوْحٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُوْلُ لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ يَا رَبِّ فَيَقُوْلُ هَلْ بَلَّغْتَ فَيَقُوْلُ نَعَمْ فَيُقَالُ لِأُمَّتِهِ هَلْ بَلَّغَكُمْ فَيَقُوْلُوْنَ مَا أَتَانَا مِنْ نَذِيْرٍ فَيَقُوْلُ مَنْ يَشْهَدُ لَكَ فَيَقُوْلُ مُحَمَّدٌ وَأُمَّتُهُ فَتَشْهَدُوْنَ أَنَّهُ قَدْ بَلَّغَ وَيَكُوْنَ الرَّسُوْلُ عَلَيْكُمْ شَهِيْدًا فَذَلِكَ قَوْلُهُ جَلَّ ذِكْرُهُ : {وَكَذٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَّسَطًا لِّتَكُوْنُوْا شُهَدَآءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُوْنَ الرَّسُوْلُ عَلَيْكُمْ شَهِيْدً} وَالْوَسَطُ الْعَدْلُز.
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ক্বিয়ামাতের দিন নূহ্ (‘আ.)-কে ডাকা হবে। তখন তিনি বলবেনঃ হে আমাদের রব! আমি আপনার পবিত্র দরবারে হাযির (তখন আল্লাহ জিজ্ঞেস করবেন) তুমি কি (আল্লাহ্র বাণী) পৌঁছে দিয়েছিলে? তিনি বলবেন, হ্যাঁ। এরপর তার উম্মতকে জিজ্ঞেস করা হবে, [নূহ (‘আ.) কি] তোমাদের নিকট (আল্লাহ্র বাণী) পৌঁছে দিয়েছে? তারা তখন বলবে, আমাদের কাছে কোন ভয়প্রদর্শনকারী আসেনি। তখন আল্লাহ তা‘আলা [নূহ (‘আ.)-কে] বলবেন, তোমার পক্ষে কে সাক্ষ্য দেবে? তিনি বলবেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং তাঁর উম্মতগণ। তখন তারা সাক্ষ্য দেবে যে, নূহ (‘আ.) তাঁর উম্মতের নিকট আল্লাহ্র বাণী পৌঁছে দিয়েছেন এবং রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমাদের জন্য সাক্ষী হবেন। এটাই মহান আল্লাহ্র বাণী “আর এ ভাবেই আমি তোমাদেরকে একটি মধ্যপন্থী উম্মাত করেছি যাতে তোমরা মানবজাতির সাক্ষী হতে পার আর রসূল তোমাদের সাক্ষী হন।” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪৩) ‘ওয়াসাত’ ন্যায়নিষ্ঠ। [৩৩৩৯] (আ.প্র. ৪১২৯, ই.ফা. ৪১৩২)
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا بَيْنَا النَّاسُ يُصَلُّوْنَ الصُّبْحَ فِيْ مَسْجِدِ قُبَاءٍ إِذْ جَاءَ جَاءٍ فَقَالَ أَنْزَلَ اللهُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قُرْآنًا أَنْ يَسْتَقْبِلَ الْكَعْبَةَ فَاسْتَقْبِلُوْهَا فَتَوَجَّهُوْا إِلَى الْكَعْبَةِ.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদিন লোকেরা কূবা মাসজিদে ফাজ্রের সলাত আদায় করছিলেন। এমন সময় এক আগন্তুক এসে বলল, আল্লাহ তা‘আলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি কুরআনের এ আয়াত অবতীর্ণ করেছেন যে, তিনি যেন (সলাতে) কা‘বার দিকে মুখ করেন। কাজেই আপনারাও কা‘বার দিকে মুখ করুন। তখন লোকেরা কা‘বার দিকে মুখ ফিরিয়ে নেন। [৪০৩] (আ.প্র. ৪১৩০, ই.ফা. ৪১৩৩)
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمْ يَبْقَ مِمَّنْ صَلَّى الْقِبْلَتَيْنِ غَيْرِي
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যারা উভয় কিবলার (বাইতুল মাকদাস কা‘বা-এর) দিকে মুখ করে সলাত আদায় করেছেন তাদের মধ্যে আমি ব্যতীত আর কেউ বেঁচে নেই। (আ.প্র. ৪১৩১, ই.ফা. ৪১৩৪)
دَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ دِيْنَارٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا بَيْنَمَا النَّاسُ فِي الصُّبْحِ بِقُبَاءٍ جَاءَهُمْ رَجُلٌ فَقَالَ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ أُنْزِلَ عَلَيْهِ اللَّيْلَةَ قُرْآنٌ وَأُمِرَ أَنْ يَسْتَقْبِلَ الْكَعْبَةَ أَلَا فَاسْتَقْبِلُوْهَا وَكَانَ وَجْهُ النَّاسِ إِلَى الشَّأْمِ فَاسْتَدَارُوْا بِوُجُوْهِهِمْ إِلَى الْكَعْبَةِ.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা লোকেরা মাসজিদে কুবায় ফাজ্রের সলাত আদায় করছিলেন। এমন সময় তাদের কাছে একজন লোক এসে বলল, এ রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপর কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে এবং কা‘বার দিকে মুখ করে সলাত আদায় করার জন্য তিনি নির্দেশিত হয়েছেন। অতএব আপনারা কা‘বার দিকে মুখ ফিরিয়ে নিন। আর তখন লোকেদের চেহারা শামের দিকে ছিল। তখন তারা তাদের চেহারা কা‘বার দিকে ঘুরিয়ে নিলেন। [৪০৩] (আ.প্র. ৪১৩২, ই.ফা. ৪১৩৫)
يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ بَيْنَا النَّاسُ بِقُبَاءٍ فِيْ صَلَاةِ الصُّبْحِ إِذْ جَاءَهُمْ آتٍ فَقَالَ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَدْ أُنْزِلَ عَلَيْهِ اللَّيْلَةَ قُرْآنٌ وَقَدْ أُمِرَ أَنْ يَسْتَقْبِلَ الْكَعْبَةَ فَاسْتَقْبِلُوْهَا وَكَانَتْ وُجُوْهُهُمْ إِلَى الشَّأْمِ فَاسْتَدَارُوْا إِلَى الْكَعْبَةِ.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা লোকেরা কুবা মাসজিদে ফাজ্রের সলাতে ছিলেন, তখন তাদের কাছে একজন আগন্তুক এসে বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি এ রাতে কুরআন (এর আয়াত) অবতীর্ণ করা হয়েছে, আর এতে তিনি কা‘বার দিকে মুখ ফিরানোর জন্য নির্দেশিত হয়েছেন। কাজেই আপনারা কা’বার দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিন। আর তখন তাদের মুখ শামের দিকে ছিল। তখন তারা কা‘বার দিকে ঘুরে গেলেন। [৪০৩] (আ.প্র. ৪১৩৩, ই.ফা. ৪১৩৬)
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَبُو الْحَسَنِ أَخْبَرَنَا حَجَّاجٌ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ يَعْلَى عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا : {وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ إِنْ كَانَ بِكُمْ أَذًى مِّنْ مَطَرٍ أَوْ كُنْتُمْ مَرْضٰى} قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ وَكَانَ جَرِيْحًا.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
إِنْ كَانَ بِكُمْ أَذًى مِنْ مَطَرٍ أَوْ كُنْتُمْ مَرْضَى আয়াতটি নাযিল হয়েছিল যখন ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) আহত হয়েছিলেন। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪২৩৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪২৪১)
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ صَلَّيْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ بَيْتِ الْمَقْدِسِ سِتَّةَ عَشَرَ أَوْ سَبْعَةَ عَشَرَ شَهْرًا ثُمَّ صَرَفَهُ نَحْوَ الْقِبْلَةِ
বারাআ (ইবনু ‘আযিব) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ষোল অথবা সতের মাস ব্যাপী (মাদীনাতে) বাইতুল মাকদাসের দিকে মুখ করে সলাত আদায় করেছি। তারপর আল্লাহ তাঁকে কা‘বার পানে ফিরিয়ে দেন। [৪০] (আ.প্র. ৪১৩৪, ই.ফা. ৪১৩৭)
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ دِيْنَارٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ بَيْنَا النَّاسُ فِي الصُّبْحِ بِقُبَاءٍ إِذْ جَاءَهُمْ رَجُلٌ فَقَالَ أُنْزِلَ اللَّيْلَةَ قُرْآنٌ فَأُمِرَ أَنْ يَسْتَقْبِلَ الْكَعْبَةَ فَاسْتَقْبِلُوْهَا وَاسْتَدَارُوْا كَهَيْئَتِهِمْ فَتَوَجَّهُوْا إِلَى الْكَعْبَةِ وَكَانَ وَجْهُ النَّاس إِلَى الشَّأْمِ.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা কূবা মাসজিদে সহাবীগণ ফাজ্রের সলাত সম্পাদন করছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বলল, আজ রাতে [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি] কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে, তাতে কা‘বার দিকে মুখ ফিরানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কাজেই আপনারা সেদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিন। তখন তারা আপন আপন অবস্থায় মুখ ঘুরিয়ে নেন এবং কা‘বার দিকে মুখ করেন। তখন তাদের মুখ সিরিয়ার দিকে ছিল। [৪০৩] (আ.প্র. ৪১৩৫, ই.ফা. ৪১৩৮)
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ بَيْنَمَا النَّاسُ فِي صَلاَةِ الصُّبْحِ بِقُبَاءٍ إِذْ جَاءَهُمْ آتٍ فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ أُنْزِلَ عَلَيْهِ اللَّيْلَةَ، وَقَدْ أُمِرَ أَنْ يَسْتَقْبِلَ الْكَعْبَةَ، فَاسْتَقْبِلُوهَا. وَكَانَتْ وُجُوهُهُمْ إِلَى الشَّأْمِ فَاسْتَدَارُوا إِلَى الْقِبْلَةِ.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা কূবাতে সহাবীগণ ফাজ্রের সলাত সম্পাদন করছিলেন এমন সময় এক আগন্তুক এসে বলল, রসূলুল্লাহ -এর প্রতি আজ রাতে কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে এবং তিনি কা‘বার দিকে মুখ ফিরানোর নির্দেশপ্রাপ্ত হয়েছেন। অতএব আপনারাও সেদিকে মুখ ফিরিয়ে নিন। তাদের মুখ তখন ছিল সিরিয়ার দিকে। তখন তারা কা‘বার দিকে ফিরে গেলেন। [৪০৩] (আ.প্র. ৪১৩৬, ই.ফা. ৪১৩৯)
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّهُ قَالَ قُلْتُ لِعَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا يَوْمَئِذٍ حَدِيْثُ السِّنِّ أَرَأَيْتِ قَوْلَ اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى {إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَآئِرِ اللهِ ج فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَّطَّوَّفَ بِهِمَا} فَمَا أُرَى عَلَى أَحَدٍ شَيْئًا أَنْ لَا يَطَّوَّفَ بِهِمَا فَقَالَتْ عَائِشَةُ كَلَّا لَوْ كَانَتْ كَمَا تَقُوْلُ كَانَتْ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ لَا يَطَّوَّفَ بِهِمَا إِنَّمَا أُنْزِلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ فِي الْأَنْصَارِ كَانُوْا يُهِلُّوْنَ لِمَنَاةَ وَكَانَتْ مَنَاةُ حَذْوَ قُدَيْدٍ وَكَانُوْا يَتَحَرَّجُوْنَ أَنْ يَطُوْفُوْا بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ فَلَمَّا جَاءَ الإِسْلَامُ سَأَلُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ ذَلِكَ فَأَنْزَلَ اللهُ {إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَآئِرِ اللهِ ج فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَّطَّوَّفَ بِهِمَا}.
‘উরওয়াহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম আর তখন আমি অল্প বয়সের ছিলাম।
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ এ আয়াত সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? “নিশ্চয় সাফা ও মারওয়াহ হল আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে কেউ কা‘বা ঘরে হাজ্জ বা ‘উমরাহ পালন করে তার পক্ষে এ দু‘টির মধ্যে প্রদক্ষিণ করাতে কোন পাপ নেই” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৫৮)। আমি মনে করি উক্ত দুই পর্বত সায়ী না করলে কোন ব্যক্তির উপর গুনাহ বর্তাবে না। তখন ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, কক্ষনো তা নয়। তুমি যা বলছ যদি তাই হত তাহলে বলা হত এভাবে فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ “উভয় পর্বত তাওয়াফ না করাতে কোন গুনাহ বর্তাবে না। বস্তুতঃ এই আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে আনসারদের ব্যাপারে। তারা ‘মানাত’-এর পূজা করত। আর ‘মানাত’ ছিল কুদায়েদের পথে অবস্থিত। আনসারগণ সাফা এবং মারওয়াহর মধ্যে সায়ী করা খারাপ জানত। ইসলামের আগমনের পর তারা এ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করল। তখন আল্লাহ অবতীর্ণ করলেন إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوْ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا। [১৬৪৩] (আ.প্র. ৪১৩৭, ই.ফা. ৪১৪০)
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَاصِمِ بْنِ سُلَيْمَانَ قَالَ سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ فَقَالَ كُنَّا نَرَى أَنَّهُمَا مِنْ أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ فَلَمَّا كَانَ الإِسْلَامُ أَمْسَكْنَا عَنْهُمَا فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَآئِرِ اللهِ ج فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَّطَّوَّفَ بِهِمَا}.
‘আসিম ইবনু সুলাইমান (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে সাফা ও মারওয়াহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমরা ঐ দু’টিকে জাহিলী যুগের কাজ বলে মনে করতাম। যখন ইসলাম আসল, তখন আমরা এ দু’টির মধ্যে সায়ী করা থেকে বিরত থাকি। তখন আল্লাহ আয়াত অবতীর্ণ করেন إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ থেকে أَنْ يَطَّوَّفَ পর্যন্ত। [১৬৪৮] (আ.প্র. ৪১৩৮, ই.ফা. ৪১৪১)
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি কথা বললেন, আর আমি একটি বললাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে তাঁর সমকক্ষ হিসেবে আহ্বান করা অবস্থায় মারা যায়, সে জাহান্নামে যাবে। আর আমি বললাম, যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সঙ্গে কাউকে সমকক্ষ হিসেবে আহ্বান না করা অবস্থায় মারা যায়? (তিনি বললেন) সে জান্নাতে যাবে। [১২৩৮] (আ.প্র. ৪১৩৯, ই.ফা. ৪১৪২)
الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَمْرٌو قَالَ سَمِعْتُ مُجَاهِدًا قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ كَانَ فِيْ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ الْقِصَاصُ وَلَمْ تَكُنْ فِيْهِمْ الدِّيَةُ فَقَالَ اللهُ تَعَالَى لِهَذِهِ الْأُمَّةِ {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِصَاصُ فِي الْقَتْلٰى ط اَلْحُرُّ بِالْحُرِّ وَالْعَبْدُ بِالْعَبْدِ وَالْأُنْثٰى بِالْأُنْثٰى ط فَمَنْ عُفِيَ لَه”مِنْ أَخِيْهِ شَيْءٌ} فَالْعَفْوُ أَنْ يَقْبَلَ الدِّيَةَ فِي الْعَمْدِ. {فَاتِّبَاعٌم بِالْمَعْرُوْفِ وَأَدَآءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ} يَتَّبِعُ بِالْمَعْرُوْفِ وَيُؤَدِّيْ بِإِحْسَانٍ {ذٰلِكَ تَخْفِيْفٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَرَحْمَة} مِمَّا كُتِبَ عَلَى مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ {فَمَنِ اعْتَدٰى بَعْدَ ذٰلِكَ فَلَه”عَذَابٌ أَلِيْمٌ} قَتَلَ بَعْدَ قَبُوْلِ الدِّيَةِ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বানী ইসরাঈল সম্প্রদায়ের কিসাস প্রথা চালু ছিল কিন্তু দিয়াত তাদের মধ্যে চালু ছিল না। অনন্তর আল্লাহ তা‘আলা এ উম্মতের জন্য এ আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ হত্যার ক্ষেত্রে কিসাস বা খুনের বদলে খুন তোমাদের জন্য ফরয করা হয়েছে। স্বাধীন মানুষের বদলে স্বাধীন মানুষ, ক্রীতদাসের বদলে ক্রীতদাস এবং স্ত্রীলোকের বদলে স্ত্রীলোকের কিসাস নেয়া হবে। হাঁ, কোন হত্যাকারীর সঙ্গে তার কোন (মুসলিম) ভাই নম্রতা দেখাতে চাইলে। উল্লিখিত আয়াতে আলআফুব فَالْعَفْوُ -এর অর্থ ইচ্ছাকৃত হত্যার ক্ষেত্রে দিয়াত গ্রহণ করতঃ কিসাস ক্ষমা করে দেয়া। فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ وَأَدَاءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ অর্থাৎ এ ব্যাপারে যথাযথ বিধি মেনে চলবে এবং নিষ্ঠার সঙ্গে দিয়াত আদায় করে দেবে। তোমাদের পূর্বের লোকেদের উপরে আরোপিত কিসাস হতে তোমাদের প্রতি দিয়াত ব্যবস্থা আল্লাহ্র পক্ষ হতে তোমাদের প্রতি শাস্তি হ্রাস ও বিশেষ অনুগ্রহ। দিয়াত কবূল করার পরও যদি হত্যা করে তাহলে তার জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে। [৬৮৮১] (আ.প্র. ৪১৪০, ই.ফা. ৪১৪৩)
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيُّ حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ أَنَّ أَنَسًا حَدَّثَهُمْ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ كِتَابُ اللهِ الْقِصَاصُ.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাদের কাছে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আল্লাহ্র কিতাবের নির্দেশ হল কিসাস। [২৭০৩] (আ.প্র. ৪১৪৩, ই.ফা. ৪১৪৪)
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُنِيْرٍ سَمِعَ عَبْدَ اللهِ بْنَ بَكْرٍ السَّهْمِيَّ حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ الرُّبَيِّعَ عَمَّتَهُ كَسَرَتْ ثَنِيَّةَ جَارِيَةٍ فَطَلَبُوْا إِلَيْهَا الْعَفْوَ فَأَبَوْا فَعَرَضُوا الْأَرْشَ فَأَبَوْا فَأَتَوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبَوْا إِلَّا الْقِصَاصَ فَأَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِالْقِصَاصِ فَقَالَ أَنَسُ بْنُ النَّضْرِ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَتُكْسَرُ ثَنِيَّةُ الرُّبَيِّعِ لَا وَالَّذِيْ بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لَا تُكْسَرُ ثَنِيَّتُهَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَا أَنَسُ كِتَابُ اللهِ الْقِصَاصُ فَرَضِيَ الْقَوْمُ فَعَفَوْا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللهِ مَنْ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللهِ لَأَبَرَّهُ.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আনাসের ফুফু রুবাঈ এক বাঁদির সম্মুখ দাঁত ভেঙ্গে ফেলে। এরপর বাঁদির কাছে রুবাঈয়ের লোকজন ক্ষমা চাইলে বাঁদির লোকেরা অস্বীকার করে। তখন তাদের কাছে দিয়াত পেশ করা হল, তখন তা তারা গ্রহণ করল না। অগত্যা তারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সমীপে এসে ঘটনা জানাল। কিন্তু কিসাস ব্যতীত অন্য কিছু গ্রহণ করতে তারা অস্বীকার করল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কিসাসের নির্দেশ দিলেন। তখন আনাস ইবনু নযর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! রুবাঈদের সামনের দাঁত ভাঙ্গা হবে? না, যে সত্তা আপনাকে সত্য সহ পাঠিয়েছেন তাঁর শপথ, তাঁর দাঁত ভাঙ্গা হবে না। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে আনাস! আল্লাহ্র কিতাব তো কিসাসের নির্দেশ দেয়। এরপর বাঁদির লোকেরা রাযী হয়ে যায় এবং রুবাঈ‘কে ক্ষমা করে দেয়। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ্র বান্দাদের মাঝে এমন মানুষও আছে যিনি আল্লাহ্র নামে শপথ করলে আল্লাহ তা পূরণ করেন। [২৭০৩] (আ.প্র. ৪১৪২, ই.ফা. ৪১৪৫)
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ نَافِعٌ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ عَاشُوْرَاءُ يَصُوْمُهُ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ فَلَمَّا نَزَلَ رَمَضَانُ قَالَ مَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ لَمْ يَصُمْهُ.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জাহিলী যুগের লোকেরা আশুরার সওম পালন করত। এরপর যখন রমাযানের সওমের বিধান অবতীর্ণ হল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যার ইচ্ছা সে আশুরার সওম পালন করবে আর যার ইচ্ছা সে তার সওম পালন করবে না। [১৮৯২; মুসলিম ১৩/১৯, হাঃ ১১২৬, আহমাদ ৬৩০০] (আ.প্র. ৪১৪৩, ই.ফা. ৪১৪৬)
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا كَانَ عَاشُوْرَاءُ يُصَامُ قَبْلَ رَمَضَانَ فَلَمَّا نَزَلَ رَمَضَانُ قَالَ مَنْ شَاءَ صَامَ وَمَنْ شَاءَ أَفْطَرَ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রমাযানের সওমের (আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার) পূর্বে আশুরার সওম পালন করা হত। এরপর যখন রমাযানের (সম্পর্কিত বিধান) অবতীর্ণ হল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যে ইচ্ছা করে (আশুরার) সওম পালন করবে, আর যে চায় সে সওম পালন করবে না। [১৫৯২] (আ.প্র. ৪১৪৪, ই.ফা. ৪১৪৭)
مَحْمُوْدٌ أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ دَخَلَ عَلَيْهِ الْأَشْعَثُ وَهْوَ يَطْعَمُ فَقَالَ الْيَوْمُ عَاشُوْرَاءُ فَقَالَ كَانَ يُصَامُ قَبْلَ أَنْ يَنْزِلَ رَمَضَانُ فَلَمَّا نَزَلَ رَمَضَانُ تُرِكَ فَادْنُ فَكُلْ.
‘আবদুল্লাহ (রহ.) (ইবনু মাস‘ঊদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাঁর নিকট ‘আশ‘আস (রাঃ) আসেন। এ সময় ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) পানাহার করছিলেন। তখন আশ‘আস (রাঃ) বললেন, আজ তো ‘আশুরা। তিনি বললেন, রমাযানের (এর সওমের বিধান) অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে ‘আশুরার সওম পালন করা হত। যখন রমাযানের (এর সওমের বিধান) অবতীর্ণ হল তখন তা পরিত্যাগ করা হয়েছে। এসো, তুমিও খাও। [মুসলিম ১৩/১৯, হাঃ ১১২৭] (আ.প্র. ৪১৪৫, ই.ফা. ৪১৪৮)
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا هِشَامٌ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ يَوْمُ عَاشُوْرَاءَ تَصُوْمُهُ قُرَيْشٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَصُوْمُهُ فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِيْنَةَ صَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا نَزَلَ رَمَضَانُ كَانَ رَمَضَانُ الْفَرِيْضَةَ وَتُرِكَ عَاشُوْرَاءُ فَكَانَ مَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ لَمْ يَصُمْهُ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জাহিলী যুগে কুরাইশগণ আশুরার দিন সওম পালন করত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-ও সে সওম পালন করতেন। যখন তিনি মদিনায় হিজরাত করলেন তখনও তিনি সে সওম পালন করতেন এবং অন্যদের পালনের নির্দেশ দিতেন। এরপর যখন রমাযান (সম্পর্কিত আয়াত) অবতীর্ণ হলে রমাযানের সওম ফরয হল এবং আশুরার সওম বাদ গেল। এরপর যে চাইত সে উক্ত সওম পালন করত আর যে চাইত তা পালন করত না। [১৫৯২] (আ.প্র. ৪১৪৬, ই.ফা. ৪১৪৯)
عَيَّاشُ بْنُ الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْأَعْلَى حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ قَرَأَ {فِدْيَةٌ طَعَامُ مَسَاكِيْنَ} قَالَ هِيَ مَنْسُوْخَةٌ.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি পাঠ করতেন فِدْيَةٌ طَعَامُ مَسَاكِينَ রাবী বলেন, এ আয়াত (فَمَنْ شَهِدَ الخ আয়াত দ্বারা) রহিত হয়ে গেছে। [১৯৪৯] (আ.প্র. ৪১৪৮, ই.ফা. ৪১৫১)
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ مُضَرَ عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ يَزِيْدَ مَوْلَى سَلَمَةَ بْنِ الْأَكْوَعِ عَنْ سَلَمَةَ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ {وَعَلَى الَّذِيْنَ يُطَوَّقُوْنَه”” فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِيْنٍ} كَانَ مَنْ أَرَادَ أَنْ يُفْطِرَ وَيَفْتَدِيَ حَتَّى نَزَلَتْ الْآيَةُ الَّتِيْ بَعْدَهَا فَنَسَخَتْهَا.
قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ مَاتَ بُكَيْرٌ قَبْلَ يَزِيْدَ.
সালামাহ ইবনু আকওয়া‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ এ আয়াত অবতীর্ণ হল এবং যারা সওম পালনের সামর্থ্য রাখে তারা একজন মিসকীনকে ফিদ্য়া স্বরূপ আহার্য দান করবে। তখন যে ইচ্ছা সওম ভঙ্গ করত এবং তার পরিবর্তে ফিদ্য়া প্রদান করত। এরপর পরবর্তী আয়াত অবতীর্ণ হয় এবং পূর্বোক্ত আয়াতের হুকুম রহিত করে দেয়।
আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহ.) বলেন, ইয়াযীদের পূর্বে বুকায়র মারা যান। [মুসলিম ১৩/২৫, হাঃ ১১৪৫] (আ.প্র. ৪১৪৯, ই.ফা. ৪১৫২)
عُبَيْدُ اللهِ عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ ح و حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عُثْمَانَ حَدَّثَنَا شُرَيْحُ بْنُ مَسْلَمَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ لَمَّا نَزَلَ صَوْمُ رَمَضَانَ كَانُوْا لَا يَقْرَبُوْنَ النِّسَاءَ رَمَضَانَ كُلَّهُ وَكَانَ رِجَالٌ يَخُوْنُوْنَ أَنْفُسَهُمْ فَأَنْزَلَ اللهُ {عَلِمَ اللهُ أَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَخْتَانُوْنَ أَنْفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنْكُمْ}.
বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন রমাযানের সওমের হুকুম অবতীর্ণ হল তখন মুসলিমরা গোটা রমাযান মাস স্ত্রীদের নিকটবর্তী হতেন না আর কিছু সংখ্যক লোক এ ব্যাপারে নিজেদের উপর (স্ত্রী-সম্ভোগ করে) অবিচার করে বসে। তখন আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন عَلِمَ اللهُ أَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَخْتَانُونَ أَنْفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنْكُمْ “আল্লাহ জানতেন যে, তোমরা নিজেদের সঙ্গে প্রতারণা করছিলে। সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করলেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিলেন। অতএব, এখন থেকে তোমরা তাদের সঙ্গে সহবাস করতে পার এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা কিছু বিধিবদ্ধ করেছেন তা লাভ কর” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৮৭)। [১৯১৬] (আ.প্র. ৪১৫১, ই.ফা. ৪১৫৩)
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ حُصَيْنٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ عَدِيٍّ قَالَ أَخَذَ عَدِيٌّ عِقَالًا أَبْيَضَ وَعِقَالًا أَسْوَدَ حَتَّى كَانَ بَعْضُ اللَّيْلِ نَظَرَ فَلَمْ يَسْتَبِيْنَا فَلَمَّا أَصْبَحَ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ جَعَلْتُ تَحْتَ وِسَادِيْ عِقَالَيْنِ قَالَ إِنَّ وِسَادَكَ إِذًا لَعَرِيْضٌ أَنْ كَانَ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ وَالأَسْوَدُ تَحْتَ وِسَادَتِكَ.
আদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (আদী) একটি সাদা ও একটি কালো সুতা সঙ্গে রাখলেন। কিন্তু রাত অতিবাহিত হলে খুলে দেখলেন কিন্তু তার কাছে সাদা কালোর কোন পার্থক্য নিরূপিত হল না। যখন সকাল হল তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি আমার বালিশের নিচে (সাদা ও কালো রংয়ের দু’টি সুতা) রেখেছিলাম (এবং তিনি রাতের ঘটনাটি বললেন)। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার বালিশ তো খুবই বড় দেখছি, যদি কালো ও সাদা সুতা (সুবহি কাযিব ও সুবহি সাদিক) তোমার বালিশের নিচে থেকে থাকে। (রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘আদী (রা.)-এর বর্ণনা শুনে কৌতুক করে বলেছেন যে, গোটা পূর্বাকাশ যদি তোমার বালিশের নিচে রেখে থাক তাহলে সে বালিশ তো খুব বড়ই দেখছি) [১৯১৬] (আ.প্র. ৪১৫২, ই.ফা. ৪১৫৪)
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مُطَرِّفٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ أَهُمَا الْخَيْطَانِ قَالَ إِنَّكَ لَعَرِيْضُ الْقَفَا إِنْ أَبْصَرْتَ الْخَيْطَيْنِ ثُمَّ قَالَ لَا بَلْ هُوَ سَوَادُ اللَّيْلِ وَبَيَاضُ النَّهَارِ
আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! (আল্লাহ্র বাণীতে) الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ সাদা সুতা কালো সুতা থেকে বের হয়ে আসার অর্থ কী? আসলে কি ঐ দু’টি সুতা? তিনি উত্তর দিলেন, তুমি আজব লোক দেখছি যে, সূতা দু’টি তুমি দেখতে পেয়েছ। তারপর তিনি বললেন, তা নয় বরং এ হল রাতের কৃষ্ণতা ও দিনের শুভ্রতা। [১৯১৬] (আ.প্র. ৪১৫৩, ই.ফা. ৪১৫৫)
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ حَدَّثَنَا أَبُوْ غَسَّانَ مُحَمَّدُ بْنُ مُطَرِّفٍ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ وَأُنْزِلَتْ {وَكُلُوْا وَاشْرَبُوْا حَتّٰى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ} وَلَمْ يُنْزَلْ {مِنَ الْفَجْرِ} وَكَانَ رِجَالٌ إِذَا أَرَادُوا الصَّوْمَ رَبَطَ أَحَدُهُمْ فِيْ رِجْلَيْهِ الْخَيْطَ الْأَبْيَضَ وَالْخَيْطَ الْأَسْوَدَ وَلَا يَزَالُ يَأْكُلُ حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَهُ رُؤْيَتُهُمَا فَأَنْزَلَ اللهُ بَعْدَهُ {مِنَ الْفَجْرِ} فَعَلِمُوْا أَنَّمَا يَعْنِي اللَّيْلَ مِنْ النَّهَارِ
সাহল ইবনু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمْ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ এ আয়াত যখন অবতীর্ণ হয় তখন مِنَ الْفَجْرِ ‘ফজর হতে’ কথাটি অবতীর্ণ হয়নি। তাই লোকেরা সওম পালনের ইচ্ছা করলে তখন তাদের কেউ কেউ দুই পায়ে সাদা ও কালো রঙের সূতা বেঁধে রাখত। এরপর ঐ দু’টি সুতা পরিষ্কারভাবে দেখা না যাওয়া পর্যন্ত তারা পানাহার করত। তখন আল্লাহ তা‘আলা পরে مِنَ الْفَجْرِ শব্দটি অবতীর্ণ করেন। এতে লোকেরা জানতে পারেন যে, এ দ্বারা উদ্দেশ্য হল দিন হতে রাত্রির স্পষ্টতা। [১৯১৭] (আ.প্র. ৪১৫৪, ই.ফা. ৪১৫৬)
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ كَانُوْا إِذَا أَحْرَمُوْا فِي الْجَاهِلِيَّةِ أَتَوْا الْبَيْتَ مِنْ ظَهْرِهِ فَأَنْزَلَ اللهُ {وَلَيْسَ الْبِرُّ بِأَنْ تَأْتُوا الْبُيُوْتَ مِنْ ظُهُوْرِهَا وَلٰكِنَّ الْبِرَّ مَنِ اتَّقٰى ج وَأْتُوا الْبُيُوْتَ مِنْ أَبْوٰبِهَا}
বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জাহিলী যুগে যখন লোকেরা ইহরাম বাঁধত, তারা পেছনের দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করত। তখন আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন “আর পেছনের দিক দিয়ে ঘরে প্রবেশ করাতে কোন পুণ্য নেই, বরং পুণ্য আছে কেউ তাকওয়া অবলম্বন করলে। সুতরাং তোমরা দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করো” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৮৯)। [১৮০৩] (আ.প্র. ৪১৫৫, ই.ফা. ৪১৫৭)
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَتَاهُ رَجُلَانِ فِيْ فِتْنَةِ ابْنِ الزُّبَيْرِ فَقَالَا إِنَّ النَّاسَ صَنَعُوْا وَأَنْتَ ابْنُ عُمَرَ وَصَاحِبُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَمَا يَمْنَعُكَ أَنْ تَخْرُجَ فَقَالَ يَمْنَعُنِيْ أَنَّ اللهَ حَرَّمَ دَمَ أَخِيْ فَقَالَا أَلَمْ يَقُلْ اللهُ : {وَقٰتِلُوْهُمْ حَتّٰى لَا تَكُوْنَ فِتْنَةٌ} : فَقَالَ قَاتَلْنَا حَتَّى لَمْ تَكُنْ فِتْنَةٌ وَكَانَ الدِّيْنُ لِلهِ وَأَنْتُمْ تُرِيْدُوْنَ أَنْ تُقَاتِلُوْا حَتَّى تَكُوْنَ فِتْنَةٌ وَيَكُوْنَ الدِّيْنُ لِغَيْرِ اللهِ.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁর কাছে দুই ব্যক্তি ‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়রের যুগে সৃষ্ট ফিতনার সময় আগমন করল এবং বলল, লোকেরা সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আর আপনি ‘‘উমার (রাঃ)-এর পুত্র এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহাবী! কী কারণে আপনি বের হন না? তিনি উত্তর দিলেন আমাকে নিষেধ করেছে এই কথা‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা আমার ভাইয়ের রক্ত হারাম করেছে। তারা দু’জন বললেন, আল্লাহ কি এ কথা বলেননি যে, তোমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ কর যাবৎ না ফিতনার অবসান ঘটে। তখন ইবনু ‘‘উমার (রাঃ) বললেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি যাবৎ না ফিতনার অবসান ঘটেছে এবং দ্বীনও আল্লাহ্র জন্য হয়ে গেছে। আর তোমরা ফিতনা প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করার ইচ্ছা করছ আর যেন আল্লাহ ব্যতীত অন্যের জন্য দ্বীন হয়ে গেছে। [৩১৩০] (আ.প্র. ৪১৫৬, ই.ফা. ৪১৫৮)
وَزَادَ عُثْمَانُ بْنُ صَالِحٍ عَنْ ابْنِ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ فُلَانٌ وَحَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ عَنْ بَكْرِ بْنِ عَمْرٍو الْمَعَافِرِيِّ أَنَّ بُكَيْرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَهُ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ رَجُلًا أَتَى ابْنَ عُمَرَ فَقَالَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ مَا حَمَلَكَ عَلَى أَنْ تَحُجَّ عَامًا وَتَعْتَمِرَ عَامًا وَتَتْرُكَ الْجِهَادَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ وَقَدْ عَلِمْتَ مَا رَغَّبَ اللهُ فِيْهِ قَالَ يَا ابْنَ أَخِيْ بُنِيَ الإِسْلَامُ عَلَى خَمْسٍ إِيْمَانٍ بِاللهِ وَرَسُوْلِهِ وَالصَّلَاةِ الْخَمْسِ وَصِيَامِ رَمَضَانَ وَأَدَاءِ الزَّكَاةِ وَحَجِّ الْبَيْتِ قَالَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَلَا تَسْمَعُ مَا ذَكَرَ اللهُ فِيْ كِتَابِهِ {وَإِنْ طَآئِفَتٰنِ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ اقْتَتَلُوْا فَأَصْلِحُوْا بَيْنَهُمَا ج فَإِنْمبَغَتْ إِحْدَاهُمَا عَلَى الْأُخْرٰى فَقَاتِلُوا الَّتِيْ تَبْغِيْ حَتّٰى تَفِيْٓءَ إِلٰٓى أَمْرِ اللهِ} وَ{قَاتِلُوْهُمْ حَتّٰى لَا تَكُوْنَ فِتْنَةٌ} قَالَ فَعَلْنَا عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ الإِسْلَامُ قَلِيْلًا فَكَانَ الرَّجُلُ يُفْتَنُ فِيْ دِيْنِهِ إِمَّا قَتَلُوْهُ وَإِمَّا يُعَذِّبُوْنَهُ حَتَّى كَثُرَ الإِسْلَامُ فَلَمْ تَكُنْ فِتْنَةٌ
নাফি’ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর নিকট এসে বলল, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! কী কারণে আপনি এক বছর হাজ্জ করেন এবং এক বছর ‘উমরাহ করেন অথচ আল্লাহ্র পথে জিহাদ ত্যাগ করেছেন? আপনি পরিজ্ঞাত আছেন যে, আল্লাহ এ বিষয়ে জিহাদ সম্পর্কে কীভাবে উদ্বুদ্ধ করেছেন। ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে ভাতিজা! ইসলামের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে পাঁচটি বস্তুর উপর ঃ আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সঃ)-এর প্রতি ঈমান আনা, পাঁচ ওয়াক্ত সলাত প্রতিষ্ঠা, রমাযানের সওম পালন, যাকাত প্রদান এবং বাইতুল্লাহ্র হাজ্জ পালন। তখন সে ব্যক্তি বলল, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিতাবে কী বর্ণনা করেছেন তা কি আপনি শুনেননি? وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا فَإِنْ بَغَتْ إِحْدَاهُمَا عَلَى الْأُخْرَى فَقَاتِلُوا الَّتِي تَبْغِي حَتَّى تَفِيءَ إِلَى أَمْرِ اللهِ “আর যদি মু‘মিনদের দু’টি দল পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে সন্ধি স্থাপন করে দিবে। অতঃপর যদি তাদের একদল অন্য দলের উপর বাড়াবাড়ি করে, তবে তোমরা যারা বাড়াবাড়ি করে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহ্র হুকুমের দিকে ফিরে আসে। যদি তারা ফিরে আসে, তবে তোমরা উভয় দলের মধ্যে ন্যায়ের সঙ্গে সন্ধি করে দিবে এবং ইনসাফ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফ কায়িমকারীদেরকে ভালবাসেন।” (সূরাহ আল-হুজরাত ৪৯/৯)
قَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ (এ আয়াতগুলো শ্রবণ করার পর) ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, আমরা এ কাজ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে করেছি এবং তখন ইসলামের অনুসারীর দল স্বল্প সংখ্যক ছিল। যদি কোন লোক দ্বীন সম্পর্কে ফিতনায় নিপতিত হত তখন হয় তাকে হত্যা করা হত অথবা শাস্তি প্রদান করা হত। এভাবে ইসলামের অনুসারীর সংখ্যা বেড়ে গেল। তখন আর কোন ফিতনা রইল না। [৮, ৩১৩০] (আ.প্র. ৪১৫৭, ই.ফা. ৪১৫৮ শেষাংশ)
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْأَصْبَهَانِيِّ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ مَعْقِلٍ قَالَ قَعَدْتُ إِلَى كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ فِيْ هَذَا الْمَسْجِدِ يَعْنِيْ مَسْجِدَ الْكُوْفَةِ فَسَأَلْتُهُ عَنْ فِدْيَةٌ مِنْ صِيَامٍ فَقَالَ حُمِلْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالْقَمْلُ يَتَنَاثَرُ عَلَى وَجْهِيْ فَقَالَ مَا كُنْتُ أُرَى أَنَّ الْجَهْدَ قَدْ بَلَغَ بِكَ هَذَا أَمَا تَجِدُ شَاةً قُلْتُ لَا قَالَ صُمْ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ أَوْ أَطْعِمْ سِتَّةَ مَسَاكِيْنَ لِكُلِّ مِسْكِيْنٍ نِصْفُ صَاعٍ مِنْ طَعَامٍ وَاحْلِقْ رَأْسَكَ فَنَزَلَتْ فِيَّ خَاصَّةً وَهْيَ لَكُمْ عَامَّةً.
‘আবদুল্লাহ ইবনু মা‘কিল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি কা‘ব ইবনু উজরা-এর নিকট এই কূফার মাসজিদে বসে থাকাকালে সওমের ফিদ্য়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আমার চেহারায় উকুন ছড়িয়ে পড়া অবস্থায় আমাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে আনা হয়। তিনি তখন বললেন, আমি মনে করি যে, এতে তোমার কষ্ট হচ্ছে। তুমি কি একটি বকরী সংগ্রহ করতে পার? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তুমি তিনদিন সওম পালন কর অথবা ছয়জন দরিদ্রকে খাদ্য দান কর। প্রতিটি দরিদ্রকে অর্ধ সা‘ খাদ্য দান করতে হবে এবং তোমার মাথার চুল কামিয়ে ফেল। তখন আমার ব্যাপারে বিশেষভাবে আয়াত অবতীর্ণ হয়। তবে তোমাদের সকলের জন্য এই হুকুম। [১৮১৪] (আ.প্র. ৪১৫৯, ই.ফা. ৪১৬০)
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ عِمْرَانَ أَبِيْ بَكْرٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ رَجَاءٍ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أُنْزِلَتْ آيَةُ الْمُتْعَةِ فِيْ كِتَابِ اللهِ فَفَعَلْنَاهَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يُنْزَلْ قُرْآنٌ يُحَرِّمُهُ وَلَمْ يَنْهَ عَنْهَا حَتَّى مَاتَ قَالَ رَجُلٌ بِرَأْيِهِ مَا شَاءَ.
‘ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তামাত্তুর (‘উমরাহ ও হাজ্জ একসঙ্গে করে লাভবাব হওয়ার) আয়াত আল্লাহ্র কিতাবে অবতীর্ণ হয়েছে। এরপর আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে তা) করেছি এবং এর নিষিদ্ধতা ঘোষণা করে কুরআনের কোন আয়াত অবতীর্ণ হয়নি এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইন্তিকাল পর্যন্ত তা থেকে নিষেধও করেনি। এ ব্যাপারে এক ব্যক্তি নিজের ইচ্ছানুযায়ী মতামত ব্যক্ত করেছেন। [১৫৭১; মুসলিম ১৫/২৩, হাঃ ১২২৬, আহমাদ ১৯৮৭১] (আ.প্র. ৪১৬০, ই.ফা. ৪১৬১)
مُحَمَّدٌ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ عَمْرٍو عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَتْ عُكَاظُ وَمَجَنَّةُ وَذُو الْمَجَازِ أَسْوَاقًا فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَتَأَثَّمُوْا أَنْ يَتَّجِرُوْا فِي الْمَوَاسِمِ فَنَزَلَتْ : {لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَبْتَغُوْا فَضْلًا مِّنْ رَّبِّكُ} فِيْ مَوَاسِمِ الْحَجِّ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উকায, মাজান্না এবং যুল-মাজায নামক স্থানে জাহিলী যুগে বাজার ছিল। মুসলিমগণ সেখানে হাজ্জ মওসুমে ব্যবসা করতে যাওয়া দূষণীয় মনে করত। তাই অবতীর্ণ হলঃ “তোমাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ অন্বেষণ করায় তোমাদের কোন পাপ নেই” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৯৮)। [১৭৭০] (আ.প্র. ৪১৬১, ই.ফা. ৪১৬২)
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَازِمٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا كَانَتْ قُرَيْشٌ وَمَنْ دَانَ دِيْنَهَا يَقِفُوْنَ بِالْمُزْدَلِفَةِ وَكَانُوْا يُسَمَّوْنَ الْحُمْسَ وَكَانَ سَائِرُ الْعَرَبِ يَقِفُوْنَ بِعَرَفَاتٍ فَلَمَّا جَاءَ الإِسْلَامُ أَمَرَ اللهُ نَبِيَّهُ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَأْتِيَ عَرَفَاتٍ ثُمَّ يَقِفَ بِهَا ثُمَّ يُفِيْضَ مِنْهَا فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى {ثُمَّ أَفِيْضُوْا مِنْ حَيْثُ أَفَاضَ النَّاسُ}
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কুরাইশ এবং যারা তাদের দ্বীনের অনুসারী ছিল তারা (হাজ্জের সময়) মুযদালাফাহতে অবস্থান করত। আর কুরাইশগণ নিজেদের ‘হুকুম’ ও (ধর্মে অটল) বলে অভিহিত করত এবং অপরাপর আরবগণ আরাফাতে অবস্থান করত। অতঃপর ইসলামের আগমন ঘটলে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে ‘আরাফাতে আসার, সেখানে ওকুফের এবং এরপর সেখান থেকে ফেরার নির্দেশ দিলেন। ثُمَّ أَفِيضُوا مِنْ حَيْثُ أَفَاضَ النَّاسُ আয়াত আল্লাহ এ সম্পর্কেই ব্যক্ত করেছেন। [১৬৬৫] (আ.প্র. ৪১৬২, ই.ফা. ৪১৬৩)
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِيْ بَكْرٍ حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ أَخْبَرَنِيْ كُرَيْبٌ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ يَطَّوَّفُ الرَّجُلُ بِالْبَيْتِ مَا كَانَ حَلَالًا حَتَّى يُهِلَّ بِالْحَجِّ فَإِذَا رَكِبَ إِلَى عَرَفَةَ فَمَنْ تَيَسَّرَ لَهُ هَدِيَّةٌ مِنَ الإِبِلِ أَوِ الْبَقَرِ أَوِ الْغَنَمِ مَا تَيَسَّرَ لَهُ مِنْ ذَلِكَ أَيَّ ذَلِكَ شَاءَ غَيْرَ أَنَّهُ إِنْ لَمْ يَتَيَسَّرْ لَهُ فَعَلَيْهِ ثَلَاثَةُ أَيَّامٍ فِي الْحَجِّ وَذَلِكَ قَبْلَ يَوْمِ عَرَفَةَ فَإِنْ كَانَ آخِرُ يَوْمٍ مِنَ الْأَيَّامِ الثَلَاثَةِ يَوْمَ عَرَفَةَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ ثُمَّ لِيَنْطَلِقْ حَتَّى يَقِفَ بِعَرَفَاتٍ مِنْ صَلَاةِ الْعَصْرِ إِلَى أَنْ يَكُوْنَ الظَّلَامُ ثُمَّ لِيَدْفَعُوْا مِنْ عَرَفَاتٍ إِذَا أَفَاضُوْا مِنْهَا حَتَّى يَبْلُغُوْا جَمْعًا الَّذِيْ يَبِيْتُوْنَ بِهِ ثُمَّ لِيَذْكُرُوا اللهَ كَثِيْرًا وَأَكْثِرُوا التَّكْبِيْرَ وَالتَّهْلِيْلَ قَبْلَ أَنْ تُصْبِحُوْا ثُمَّ أَفِيْضُوْا فَإِنَّ النَّاسَ كَانُوْا يُفِيْضُوْنَ وَقَالَ اللهُ تَعَالَى {ثُمَّ أَفِيْضُوْا مِنْ حَيْثُ أَفَاضَ النَّاسُ وَاسْتَغْفِرُوا اللهَ إِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ} حَتَّى تَرْمُوا الْجَمْرَةَ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তামাত্তু আদায়কারী ‘উমরাহ আদায়ের পর যদ্দিন হালাল অবস্থায় থাকবে তদ্দিন বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করবে। তারপর হাজ্জের জন্য ইহ্রাম বাঁধবে। এরপর যখন ‘আরাফাতে যাবে তখন উট, গরু, ছাগল ইত্যাদি যা মুহ্রিমের জন্য সহজলভ্য হয় তা মীনাতে কুরবানী করবে। আর যে কুরবানীর সঙ্গতি রাখে না সে হাজ্জের দিনসমূহের মধ্যে তিনদিন সওম পালন করবে। আর তা ‘আরাফার দিনের আগে হতে হবে। আর তিনদিনের শেষ দিন যদি ‘আরাফার দিন হয়, তবে তাতে কোন দোষ নেই। তারপর ‘আরাফাত ময়দানে যাবে এবং সেখানে ‘আসরের সলাত হতে সূর্যাস্তের অন্ধকার পর্যন্ত ‘ওকুফ (অবস্থান) করবে। এরপর ‘আরাফা হতে প্রত্যাবর্তন করে মুযদালাফায় পৌঁছে সেখানে পুণ্য অর্জনের কাজ করতে থাকবে আর সেখানে আল্লাহ্কে অধিক অথবা (রাবীর সন্দেহ) সবচেয়ে অধিক স্মরণ করবে। সেখানে ফাজ্র হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাকবীর ও তাহলীল পাঠ করবে। এরপর (মীনার দিকে) প্রত্যাবর্তন করবে যেভাবে অন্যান্য লোক প্রত্যাবর্তন করে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “এরপর প্রত্যাবর্তন কর সেখান হতে, যেখান হতে লোকজন প্রত্যাবর্তন করে এবং আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমাশীল, দয়াময়।” তারপর জামরায় প্রস্তর নিক্ষেপ করবে। (আ.প্র. ৪১৬৩, ই.ফা. ৪১৬৪)
أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيْزِ عَنْ أَنَسٍ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ {اللّٰهُمَّ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ}
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই বলে দু‘আ করতেন ঃ اللهُمَّ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ “হে আমাদের প্রভু! এ দুনিয়াতেও আমাদের কল্যাণ দান কর এবং আখিরাতেও কল্যাণ দান কর এবং দোজখের ‘আযাব থেকে আমাদের রক্ষা কর” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২০১)। (আ.প্র. ৪১৬৪, ই.ফা. ৪১৬৫)
قَبِيْصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ عَائِشَةَ تَرْفَعُهُ قَالَ أَبْغَضُ الرِّجَالِ إِلَى اللهِ الْأَلَدُّ الْخَصِمُ.
وَقَالَ عَبْدُ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنِي ابْنُ جُرَيْجٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লাহ্র নিকট অতিশয় ঘৃণিত মানুষ হচ্ছে অতিরিক্ত ঝগড়াটে ব্যক্তি। [২৪৫৭]
‘আবদুল্লাহ বলেন, আমার কাছে সুফ্ইয়ান হাদীস বর্ণনা করেন, সুফ্ইয়ান বলেন, আমার কাছে ইবনু জুরায়জ ইবনু আবূ মুলাইকাহ হতে ‘আয়িশাহ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে এই মর্মে বর্ণনা করেছেন। (আ.প্র. ৪১৬৫, ই.ফা. ৪১৬৬)
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِيْ مُلَيْكَةَ يَقُوْلُ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا {حَتّٰى إِذَا اسْتَيْأَسَ الرُّسُلُ وَظَنُّوْآ أَنَّهُمْ قَدْ كُذِبُوْا} خَفِيْفَةً ذَهَبَ بِهَا هُنَاكَ وَتَلَا : {حَتّٰى يَقُوْلَ الرَّسُوْلُ وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا مَعَه” مَتٰى نَصْرُ اللهِ أَلَآ إِنَّ نَصْرَ اللهِ قَرِيْبٌ} فَلَقِيْتُ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ فَذَكَرْتُ لَهُ ذَلِكَ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র বাণীঃ এমনকি যখন রসূলগণ নিরাশ হয়ে পড়ল এবং ভাবতে লাগল যে, তাদেরকে মিথ্যা আশ্বাস দেয়া হয়েছে (সূরাহ ইউসুফ ১২/১১০)। তখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এই আয়াতসহ সূরাহ আল-বাকারাহর আয়াতের শরণাপন্ন হন ও তিলাওয়াত করেন, যেমনঃ حَتَّى يَقُولَ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ مَتَى نَصْرُ اللهِ أَلاَ إِنَّ نَصْرَ اللهِ قَرِيبٌ এমনকি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং তাঁর সঙ্গে ঈমান আনয়নকারীগণ বলে উঠেছিলআল্লাহ্র সাহায্য কখন আসবে? হ্যাঁ, হ্যাঁ, আল্লাহ্র সাহায্য নিকটেই (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২১৪)।
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ عَوْنٍ عَنْ نَافِعٍ قَالَ كَانَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا إِذَا قَرَأَ الْقُرْآنَ لَمْ يَتَكَلَّمْ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْهُ فَأَخَذْتُ عَلَيْهِ يَوْمًا فَقَرَأَ سُوْرَةَ الْبَقَرَةِ حَتَّى انْتَهَى إِلَى مَكَانٍ قَالَ تَدْرِيْ فِيْمَ أُنْزِلَتْ قُلْتُ لَا قَالَ أُنْزِلَتْ فِيْ كَذَا وَكَذَا ثُمَّ مَضَى
নাফি‘ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইবনু ‘উমার (রাঃ) যখন কুরআন তিলাওয়াত করতেন তখন কুরআন তিলাওয়াত হতে অবসর না হয়ে কোন কথা বলতেন না। একদা আমি সূরাহ আল-বাকারাহ পাঠরত অবস্থায় তাঁকে পেলাম। পড়তে পড়তে এক স্থানে তিনি পৌঁছলেন। তখন তিনি বললেন, তুমি জান, কী ব্যাপারে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে? আমি বললাম, না। তিনি তখন বললেন, অমুক অমুক ব্যাপারে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। তারপর আবার পাঠে অগ্রসর হলেন। [৪৫২৭] (আ.প্র. ৪১৬৭, ই.ফা. ৪১৬৮)
وَعَنْ عَبْدِ الصَّمَدِ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ حَدَّثَنِيْ أَيُّوْبُ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ {فَأْتُوْا حَرْثَكُمْ أَنّٰى شِئْتُم} قَالَ يَأْتِيْهَا فِيْ رَوَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ.
‘আবদুস সামাদ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করেন, আমার পিতা, তিনি বলেন, আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করেন আইয়ুব, তিনি নাফি‘ থেকে আর নাফি‘ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে। فَأْتُوا حَرْثَكُمْ أَنَّى شِئْتُمْ “অতএব তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা গমন করতে পার” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২২৩)। রাবী বলেন, স্ত্রীলোকের পশ্চাৎদিক দিয়ে সহবাস করতে পারে। মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা‘ঈদ তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘উবাইদুল্লাহ থেকে, তিনি নাফি‘ থেকে এবং তিনি ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। [৪৫২৬] (আ.প্র. ৪১৬৭, ই.ফা. ৪১৬৮)
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ ابْنِ الْمُنْكَدِرِ سَمِعْتُ جَابِرًا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَتْ الْيَهُوْدُ تَقُوْلُ إِذَا جَامَعَهَا مِنْ وَرَائِهَا جَاءَ الْوَلَدُ أَحْوَلَ فَنَزَلَتْ {نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌ لَكُمْ فَأْتُوْا حَرْثَكُمْ أَنّٰى شِئْتُمْ وَقَدِّمُوْا لِأَنْفُسِكُم}
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইয়াহূদীরা বলত যে, যদি কেউ স্ত্রীর পেছন দিক থেকে সহবাস করে তাহলে সন্তান টেরা চোখের হয়। তখন (এর প্রতিবাদে) نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَكُمْ আয়াত অবতীর্ণ হয়। [মুসলিম ত্বলাক/১৮, হাঃ ১৪৩৫] (আ.প্র. ৪১৬৮, ই.ফা. ৪১৬৯)
عُبَيْدُ اللهِ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ رَاشِدٍ حَدَّثَنَا الْحَسَنُ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَعْقِلُ بْنُ يَسَارٍ قَالَ كَانَتْ لِيْ أُخْتٌ تُخْطَبُ إِلَيَّ.
وَقَالَ إِبْرَاهِيْمُ عَنْ يُوْنُسَ عَنِ الْحَسَنِ حَدَّثَنِيْ مَعْقِلُ بْنُ يَسَارٍ ح حَدَّثَنَا أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا يُوْنُسُ عَنِ الْحَسَنِ أَنَّ أُخْتَ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ طَلَّقَهَا زَوْجُهَا فَتَرَكَهَا حَتَّى انْقَضَتْ عِدَّتُهَا فَخَطَبَهَا فَأَبَى مَعْقِلٌ فَنَزَلَتْ {فَلَا تَعْضُلُوْهُنَّ أَنْ يَنْكِحْنَ أَزْوَاجَهُنَّ}.
মা‘কিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার এক বোনের বিয়ের পয়গাম আমার নিকট পেশ করা হয়। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহ.) বলেন যে, ইবরাহীম (রহ.) ইউনুস (রহ.) থেকে, তিনি হাসান বসরী (রহ.) থেকে এবং তিনি মা‘কির ইবনু ইয়াসার (রহ.) থেকে বর্ণনা করেছেন।
আবূ মা‘মার (রহ.) ....... হাসান (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, মা‘কিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ)-এর বোনকে তার স্বামী তালাক দিয়ে আলাদা করে রাখে। যখন ইদ্দত কাল পূর্ণ হয় তখন তার স্বামী তাকে আবার পয়গাম পাঠায়। মা‘কিল (রাঃ) অমত করে পুনর্বিবাহে তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। فَلاَ تَعْضُلُوهُنَّ أَنْ يَنْكِحْنَ أَزْوَاجَهُنَّ “তখন যদি তারা পরস্পর সম্মত হয়ে নিজেদের স্বামীদের বিধিমত বিয়ে করতে চায় তাহলে তোমরা তাদের বাধা দিবে না” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৩২)। [৫১৩০, ৫৩৩০, ৫৩৩১] (আ.প্র. ৪১৬৯, ই.ফা. ৪১৭০)
أُمَيَّةُ بْنُ بِسْطَامٍ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ زُرَيْعٍ عَنْ حَبِيْبٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ قَالَ ابْنُ الزُّبَيْرِ قُلْتُ لِعُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ {وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا} قَالَ قَدْ نَسَخَتْهَا الآيَةُ الْأُخْرَى فَلِمَ تَكْتُبُهَا أَوْ تَدَعُهَا قَالَ يَا ابْنَ أَخِيْ لَا أُغَيِّرُ شَيْئًا مِنْهُ مِنْ مَكَانِهِ.
. ‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘উসমান ইবনু ‘আফ্ফান (রাঃ)-কে উক্ত আয়াত সম্পর্কে বললাম যে, এ আয়াত তো অন্য আয়াত দ্বারা মানসূখ (রহিত) হয়ে গেছে। অতএব উক্ত আয়াত আপনি মুসহাফে কেন লিখেছেন, (অথবা রাবী বলেন) কেন বর্জন করছেন না, তখন তিনি [‘উসমান (রাঃ)] বললেন, হে ভাতিজা! আমি মুসহাফের স্থান থেকে কোন জিনিস পরিবর্তন করব না। [৪৫৩৬] (আ.প্র. ৪১৭০, ই.ফা. ৪১৭১)
إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا رَوْحٌ حَدَّثَنَا شِبْلٌ عَنْ ابْنِ أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ مُجَاهِدٍ : {وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا} قَالَ كَانَتْ هَذِهِ الْعِدَّةُ تَعْتَدُّ عِنْدَ أَهْلِ زَوْجِهَا وَاجِبٌ فَأَنْزَلَ اللهُ : {وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا ﺻﻠﮯج وَّصِيَّةً لِّأَزْوَاجِهِمْ مَّتَاعًا إِلَى الْحَوْلِ غَيْرَ إِخْرَاجٍ ج فَإِنْ خَرَجْنَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيْ مَا فَعَلْنَ فِيْٓ أَنْفُسِهِنَّ مِنْ مَّعْرُوْفٍ ط وَاللهُ عَزِيْزٌ حَكِيْمٌ}. قَالَ : جَعَلَ اللهُ لَهَا تَمَامَ السَّنَةِ سَبْعَةَ أَشْهُرٍ وَعِشْرِيْنَ لَيْلَةً وَصِيَّةً إِنْ شَاءَتْ سَكَنَتْ فِيْ وَصِيَّتِهَا وَإِنْ شَاءَتْ خَرَجَتْ وَهْوَ قَوْلُ اللهِ تَعَالَى : {غَيْرَ إِخْرَاجٍ فَإِنْ خَرَجْنَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ} فَالْعِدَّةُ كَمَا هِيَ وَاجِبٌ عَلَيْهَا زَعَمَ ذَلِكَ عَنْ مُجَاهِدٍ وَقَالَ عَطَاءٌ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ نَسَخَتْ هَذِهِ الْآيَةُ عِدَّتَهَا عِنْدَ أَهْلِهَا فَتَعْتَدُّ حَيْثُ شَاءَتْ وَهْوَ قَوْلُ اللهِ تَعَالَى : {غَيْرَ إِخْرَاجٍ}.
قَالَ عَطَاءٌ إِنْ شَاءَتْ اعْتَدَّتْ عِنْدَ أَهْلِهِ وَسَكَنَتْ فِيْ وَصِيَّتِهَا وَإِنْ شَاءَتْ خَرَجَتْ لِقَوْلِ اللهِ تَعَالَى {فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيْمَا فَعَلْنَ} قَالَ عَطَاءٌ ثُمَّ جَاءَ الْمِيْرَاثُ فَنَسَخَ السُّكْنَى فَتَعْتَدُّ حَيْثُ شَاءَتْ وَلَا سُكْنَى لَهَا وَعَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ عَنْ ابْنِ أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ مُجَاهِدٍ بِهَذَا.
وَعَنْ ابْنِ أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ نَسَخَتْ هَذِهِ الْآيَةُ عِدَّتَهَا فِيْ أَهْلِهَا فَتَعْتَدُّ حَيْثُ شَاءَتْ لِقَوْلِ اللهِ {غَيْرَ إِخْرَاجٍ} نَحْوَهُ.
মুজাহিদ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا আয়াতে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর পরিবারে থেকে ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব। আয়াতে উল্লিখিত يَعْفُوْنَ শব্দের অর্থيَهَبْنَ দান করে। অনন্তর আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেনঃ وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا وَصِيَّةً لِأَزْوَاجِهِمْ مَتَاعًا إِلَى الْحَوْلِ غَيْرَ إِخْرَاجٍ فَإِنْ خَرَجْنَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا فَعَلْنَ فِي أَنْفُسِهِنَّ مِنْ مَعْرُوفٍ وَاللهُ عَزِيْزٌ حَكِيْمٌ “আর তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হবে, তারা (মৃত্যুর পূর্বে) স্ত্রীদের ঘর থেকে বের না করে দিয়ে তাদের জন্য এক বছরের ভরণপোষণের অসিয়াত করে যাবে। কিন্তু যদি তারা নিজেরা বেরিয়ে যায় তবে বিধিমত তারা নিজেদের ব্যাপারে যা করবে তাতে তোমাদের কোন পাপ হবে না। আর আল্লাহ হলেন পরাক্রমশালী, মহাবিজ্ঞ” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৪০)। রাবী বলেন, আল্লাহ তা‘আলা স্ত্রীর জন্য পূর্ণ বছর পূর্ণ করার জন্য সাত মাস এবং বিশ রজনী নির্ধারিত করেছেন ওসীয়ত হিসেবে। সে ইচ্ছা করলে তার ওসীয়তে থাকতে পারে, ইচ্ছা করলে বের হয়েও যেতে পারে। এ কথারই ইঙ্গিত করে আল্লাহ্র বাণী ঃ غَيْرَ إِخْرَاجٍ فَإِنْ خَرَجْنَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ মোটকথা যেভাবেই হোক স্ত্রীর উপর ‘ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব। মুজাহিদ থেকে এরূপই জানা গেছে। কিন্তু ইমাম ‘আত্বা বলেন যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এই আয়াত স্ত্রীর প্রতি তার স্বামীর বাড়িতে ‘ইদ্দত পালন করার হুকুম রহিত করে দিয়েছে। সুতরাং স্ত্রী যথেচ্ছা ‘ইদ্দত পালন করতে পারে। আল্লাহ্র এই বাণীর দলীল বলে ঃ غَيْرَ إِخْرَاجٍ ইমাম ‘আত্বা বলেন, স্ত্রী ইচ্ছা করলে স্বামীর পরিবারে থেকে ‘ইদ্দত পালন করতে পারে এবং তার ওসীয়ত থাকতে পারে অথবা তথা হতে চলেও যেতে পারে। فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيْمَا فَعَلْنَ এর আয়াতের মর্ম মুতাবিক।
ইমাম ‘আত্বা (রহ.) বলেন, তারপর মিরাস বা উত্তরাধিকারের হুকুম فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا فَعَلْنَ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হল। সুতরাং ঘর ও বাসস্থানের নির্দেশ রহিত হয়ে যায়। কাজেই যথেচ্ছা স্ত্রী ‘ইদ্দত পালন করত পারে। আর তার জন্য ঘরের বা বাসস্থানের দাবী অগ্রাহ্য।
মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাদীস বর্ণনা করেন আমার নিকট ওরাকা’ ইবনু আবী নাজীহ্ থেকে আর তিনি মুজাহিদ থেকে এ সম্পর্কে এবং আরও আবূ নাজীহ্ ‘আত্বা থেকে এবং তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এই আয়াত স্ত্রীর ‘ইদ্দত স্বামীর বাড়িতে পালন করার হুকুম রহিত করে দেয়। সুতরাং স্ত্রী যথেচ্ছা ‘ইদ্দত পালন করতে পারে। আল্লাহ্র এই বাণী ঃ غَيْرَ إِخْرَاجٍ এবং অনুরূপ আয়াত এর দলীল অনুসারে। [৫৩৪৪] (আ.প্র. ৪১৭১, ই.ফা. ৪১৭২)
حِبَّانُ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ عَوْنٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيْرِيْنَ قَالَ جَلَسْتُ إِلَى مَجْلِسٍ فِيْهِ عُظْمٌ مِنَ الْأَنْصَارِ وَفِيْهِمْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِيْ لَيْلَى فَذَكَرْتُ حَدِيْثَ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ فِيْ شَأْنِ سُبَيْعَةَ بِنْتِ الْحَارِثِ فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ وَلَكِنَّ عَمَّهُ كَانَ لَا يَقُوْلُ ذَلِكَ فَقُلْتُ إِنِّيْ لَجَرِيْءٌ إِنْ كَذَبْتُ عَلَى رَجُلٍ فِيْ جَانِبِ الْكُوْفَةِ وَرَفَعَ صَوْتَهُ قَالَ ثُمَّ خَرَجْتُ فَلَقِيْتُ مَالِكَ بْنَ عَامِرٍ أَوْ مَالِكَ بْنَ عَوْفٍ قُلْتُ كَيْفَ كَانَ قَوْلُ ابْنِ مَسْعُوْدٍ فِي الْمُتَوَفَّى عَنْهَا زَوْجُهَا وَهْيَ حَامِلٌ فَقَالَ قَالَ ابْنُ مَسْعُوْدٍ أَتَجْعَلُوْنَ عَلَيْهَا التَّغْلِيْظَ وَلَا تَجْعَلُوْنَ لَهَا الرُّخْصَةَ لَنَزَلَتْ سُوْرَةُ النِّسَاءِ الْقُصْرَى بَعْدَ الطُّوْلَى.
وَقَالَ أَيُّوْبُ عَنْ مُحَمَّدٍ لَقِيْتُ أَبَا عَطِيَّةَ مَالِكَ بْنَ عَامِرٍ.
মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এমন একটি মজলিসে উপবিষ্ট ছিলাম যেখানে নেতৃস্থানীয় আনসারদের কতক ছিলেন এবং তাঁদের মাঝে ‘আবদুর রহমান বিন আবূ লাইলা (রহ.)-ও ছিলেন। এরপর সুরাইয়া বিনতে হারিস (রহ.) প্রসঙ্গে বর্ণিত ‘আবদুল্লাহ বিন উত্বা (রহ.)-এর হাদীসটি নিয়ে আলোচনা করলাম, এরপর ‘আবদুর রহমান (রহ.) বললেন, “পক্ষান্তরে তাঁর চাচা এ রকম বলতেন না” অনন্তর আমি বললাম, কূফায় বসবাসরত ব্যক্তিটি সম্পর্কে যদি আমি মিথ্যা বলি তবে আমি হব চরম ধৃষ্ট এবং তিনি তাঁর স্বর উঁচু করলেন, তিনি বললেন, তারপর আমি বের হলাম এবং মালিক বিন ‘আমির (রাঃ) মালিক ইবনু ‘আওফ (রহ.)-এর সঙ্গে আমি বললাম, গর্ভাবস্থায় বিধবা রমণীর ব্যাপারে ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ)-এর মন্তব্য কী ছিল, বললেন যে ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেছেন, তোমরা কি তার উপর কঠোরতা অবলম্বন করছ আর তার জন্য সহজ বিধানটি অবলম্বন করছ না, সংক্ষিপ্ত সূরাহ নাসটি (সূরাহ ত্বালাক) দীর্ঘটি পরে অবতীর্ণ হয়েছে। আইয়ুব (রহ.) মুহাম্মাদ (রহ.) থেকে বর্ণনা করেছেন, আবূ আতিয়াহ মালিক বিন ‘আমির (রহ.)-এর সঙ্গে আমি সাক্ষাৎ করেছিলাম। [৪৯১০] (আ.প্র. ৪১৭২, ই.ফা. ৪১৭৩)
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ عَبِيْدَةَ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ح و حَدَّثَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ عَنْ عَبِيْدَةَ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَوْمَ الْخَنْدَقِ حَبَسُوْنَا عَنْ صَلَاةِ الْوُسْطَى حَتَّى غَابَتْ الشَّمْسُ مَلَا اللهُ قُبُوْرَهُمْ وَبُيُوْتَهُمْ أَوْ أَجْوَافَهُمْ شَكَّ يَحْيَى نَارًا
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘আবদুর রহমান ....... ‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, খন্দক যুদ্ধের দিন কাফিরগণ আমাদেরকে মধ্যবর্তী সলাত থেকে বিরত রাখে এমনকি এ অবস্থায় সূর্য অস্তমিত হয়ে যায়। আল্লাহ তাদের কবর ও তাদের ঘরকে অথবা (রাবীর সন্দেহ) পেটকে আগুন দ্বারা পূর্ণ করুক। [২৯৩১] (আ.প্র. ৪১৭৩, ই.ফা. ৪১৭৪)
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ إِسْمَاعِيْلَ بْنِ أَبِيْ خَالِدٍ عَنِ الْحَارِثِ بْنِ شُبَيْلٍ عَنْ أَبِيْ عَمْرٍو الشَّيْبَانِيِّ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ قَالَ كُنَّا نَتَكَلَّمُ فِي الصَّلَاةِ يُكَلِّمُ أَحَدُنَا أَخَاهُ فِيْ حَاجَتِهِ حَتَّى نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ {حَافِظُوْا عَلَى الصَّلَوٰتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطٰى وَقُوْمُوْا لِلهِ قَانِتِيْنَ} فَأُمِرْنَا بِالسُّكُوْتِ
যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা সলাতের মধ্যে কথাবার্তা বলতাম আর আমাদের কেউ অন্য ভাইয়ের প্রয়োজন নিয়ে কথা বলতেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় ঃحَافِظُوا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلاَةِ الْوُسْطَى وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِينَ তখন আমাদেরকে চুপ থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। [১২০০] (আ.প্র. ৪১৭৪, ই.ফা. ৪১৭৫)
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا كَانَ إِذَا سُئِلَ عَنْ صَلَاةِ الْخَوْفِ قَالَ يَتَقَدَّمُ الإِمَامُ وَطَائِفَةٌ مِنْ النَّاسِ فَيُصَلِّيْ بِهِمْ الإِمَامُ رَكْعَةً وَتَكُوْنُ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ الْعَدُوِّ لَمْ يُصَلُّوْا فَإِذَا صَلَّى الَّذِيْنَ مَعَهُ رَكْعَةً اسْتَأْخَرُوْا مَكَانَ الَّذِيْنَ لَمْ يُصَلُّوْا وَلَا يُسَلِّمُوْنَ وَيَتَقَدَّمُ الَّذِيْنَ لَمْ يُصَلُّوْا فَيُصَلُّوْنَ مَعَهُ رَكْعَةً ثُمَّ يَنْصَرِفُ الإِمَامُ وَقَدْ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ فَيَقُوْمُ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْ الطَّائِفَتَيْنِ فَيُصَلُّوْنَ لِأَنْفُسِهِمْ رَكْعَةً بَعْدَ أَنْ يَنْصَرِفَ الإِمَامُ فَيَكُوْنُ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْ الطَّائِفَتَيْنِ قَدْ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ فَإِنْ كَانَ خَوْفٌ هُوَ أَشَدَّ مِنْ ذَلِكَ صَلَّوْا رِجَالًا قِيَامًا عَلَى أَقْدَامِهِمْ أَوْ رُكْبَانًا مُسْتَقْبِلِي الْقِبْلَةِ أَوْ غَيْرَ مُسْتَقْبِلِيْهَا قَالَ مَالِكٌ قَالَ نَافِعٌ لَا أُرَى عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ ذَكَرَ ذَلِكَ إِلَّا عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
নাফি‘ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-কে যখন সলাতুল খাওফ (যুদ্ধক্ষেত্রে শত্র“র ভয় থাকা অবস্থায় সলাত) প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হত তখন তিনি বলতেন, ইমাম সামনে যাবেন এবং একদল লোকও জামা‘আতে শামিল হবে। তিনি তাদের সঙ্গে এক রাক‘আত সলাত আদায় করবেন এবং তাদের আর একদল জামা‘আতে শামিল না হয়ে তাদের ও শত্র“র মাঝখানে থেকে যারা সলাত আদায় করেনি তাদের পাহারা দিবে। ইমামের সঙ্গে যারা এক রাক‘আত সলাত আদায় করেছে তারা পেছনে গিয়ে যারা এখনও সলাত আদায় করেনি তাদের স্থানে দাঁড়াবে কিন্তু সালাম ফেরাবে না। যারা সলাত আদায় করেনি তারা আগে বাড়বে এবং ইমামের সঙ্গে এক রাক‘আত আদায় করবে। তারপর ইমাম সলাত হতে নিষ্ক্রান্ত হবেন। কেননা তিনি দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করেছেন। এরপর উভয় দল দাঁড়িয়ে নিজে নিজে বাকি এক রাক‘আত ইমামের সলাত শেষে আদায় করে নেবে। তাহলে প্রত্যেক জনেরই দু’ রাক‘আত সলাত আদায় হয়ে যাবে। ভয়-ভীতি এর চেয়েও অধিক হলে নিজে নিজে দাঁড়িয়ে অথবা যানবাহনে আরোহী অবস্থায় কিবলার দিকে মুখ করে বা যেদিকে সম্ভব মুখ করে সলাত আদায় করবে। ইমাম মালিক (রহ.) বলেন, ইমাম নাফি‘ (রহ.) বলেন, আমি অবশ্য মনে করি ইবনু ‘উমার (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে শুনেই এই হাদীস বর্ণনা করেছেন। [৯৪২] (আ.প্র. ৪১৭৫, ই.ফা. ৪১৭৬)
عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِي الْأَسْوَدِ حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ الْأَسْوَدِ وَيَزِيْدُ بْنُ زُرَيْعٍ قَالَا حَدَّثَنَا حَبِيْبُ بْنُ الشَّهِيْدِ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ قَالَ قَالَ ابْنُ الزُّبَيْرِ قُلْتُ لِعُثْمَانَ هَذِهِ الْآيَةُ الَّتِيْ فِي الْبَقَرَةِ {وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا} إِلَى قَوْلِهِ {غَيْرَ إِخْرَاجٍ} قَدْ نَسَخَتْهَا الْأُخْرَى فَلِمَ تَكْتُبُهَا قَالَ تَدَعُهَا يَا ابْنَ أَخِيْ لَا أُغَيِّرُ شَيْئًا مِنْهُ مِنْ مَكَانِهِ قَالَ حُمَيْدٌ أَوْ نَحْوَ هَذَا
ইবনু আবূ মুলাইকাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু যুবায়র (রাঃ) বললেন, আমি ‘উসমান (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, সূরাহ আল-বাকারাহর এ আয়াতটি وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا কে তো অন্য একটি আয়াত রহিত করে দিয়েছে। তারপরও আপনি তা কেন লিখছেন? জবাবে ‘উসমান (রাঃ) বললেন, ভ্রাতুষ্পুত্র। আমরা তা যথাস্থানে রেখে দিয়েছি। আপন স্থান থেকে কোন কিছুই আমরা সরিয়ে ফেলিনি। হুমাইদ (রহ.) বললেন, অথবা প্রায় এ রকমই উত্তর দিয়ে দিলেন। [৪৫৩০] (আ.প্র. ৪১৭৬, ই.ফা. ৪১৭৭)
أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ أَخْبَرَنِيْ يُوْنُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ وَسَعِيْدٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَحْنُ أَحَقُّ بِالشَّكِّ مِنْ إِبْرَاهِيْمَ إِذْ قَالَ {رَبِّ أَرِنِيْ كَيْفَ تُحْيِي الْمَوْتٰى قَالَ أَوَلَمْ تُؤْمِنْ قَالَ بَلٰى وَلٰكِنْ لِيَطْمَئِنَّ قَلْبِيْ}.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন যে, ইবরাহীম (‘আ.) যখন رَبِّ أَرِنِي كَيْفَ تُحْيِي الْمَوْتَى قَالَ أَوَلَمْ تُؤْمِنْ قَالَ بَلَى وَلَكِنْ لِيَطْمَئِنَّ قَلْبِي হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে দেখাও কেমন করে তুমি মৃতকে জীবিত কর? তখন ইবরাহীম (‘আ.)-এর তুলনায় সন্দেহ করার ব্যাপারে আমিই অগ্রসর ছিলাম । [৩৩৭২] (আ.প্র. ৪১৭৭, ই.ফা. ৪১৭৮)
إِبْرَاهِيْمُ أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أَبِيْ مُلَيْكَةَ يُحَدِّثُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ وَسَمِعْتُ أَخَاهُ أَبَا بَكْرِ بْنَ أَبِيْ مُلَيْكَةَ يُحَدِّثُ عَنْ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ قَالَ قَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَوْمًا لِأَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْمَ تَرَوْنَ هَذِهِ الْآيَةَ نَزَلَتْ {أَيَوَدُّ أَحَدُكُمْ أَنْ تَكُوْنَ لَه” جَنَّةٌ} قَالُوا اللهُ أَعْلَمُ فَغَضِبَ عُمَرُ فَقَالَ قُوْلُوْا نَعْلَمُ أَوْ لَا نَعْلَمُ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فِيْ نَفْسِيْ مِنْهَا شَيْءٌ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ قَالَ عُمَرُ يَا ابْنَ أَخِيْ قُلْ وَلَا تَحْقِرْ نَفْسَكَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ ضُرِبَتْ مَثَلًا لِعَمَلٍ قَالَ عُمَرُ أَيُّ عَمَلٍ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لِعَمَلٍ قَالَ عُمَرُ لِرَجُلٍ غَنِيٍّ يَعْمَلُ بِطَاعَةِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ ثُمَّ بَعَثَ اللهُ لَهُ الشَّيْطَانَ فَعَمِلَ بِالْمَعَاصِيْ حَتَّى أَغْرَقَ أَعْمَالَهُ
‘উবায়দ ইবনু ‘উমায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা ‘উমার (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহাবীদের জিজ্ঞেস করলেন যে, أَيَوَدُّ أَحَدُكُمْ أَنْ تَكُونَ لَهُ جَنَّةٌ এ আয়াতটি যে উপলক্ষে অবতীর্ণ হয়েছে, সে ব্যাপারে আপনাদের মতামত কী? তখন তারা বললেন, আল্লাহই জানেন। ‘উমার (রাঃ) এতে রেগে গিয়ে বললেন, বল আমরা জানি অথবা আমরা জানি না। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! এ ব্যাপারে আমার অন্তরে কিছুটা ধারণা আছে। ‘উমার (রাঃ) বললেন, বৎস! বলে ফেল এবং নিজেকে তুচ্ছ ভেবো না। তখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, এটা কর্মের দৃষ্টান্ত হিসেবে পেশ করা হয়েছে। ‘উমার (রাঃ) বললেন, কোন্ কর্মের? ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, একটি কর্মের। ‘উমার (রাঃ) বললেন, এটি উদাহরণ হচ্ছে সেই ধনবান ব্যক্তির, যে মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ্র ‘ইবাদাত করতে থাকে, এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রতি শায়ত্বকে প্রেরণ করেন। অতঃপর সে কাজ করে শেষ পর্যন্ত তাঁর সকল সৎকর্ম বরবাদ করে ফেলে। (আ.প্র. ৪১৭৮, ই.ফা. ৪১৭৯)
ابْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ شَرِيْكُ بْنُ أَبِيْ نَمِرٍ أَنَّ عَطَاءَ بْنَ يَسَارٍ وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَبِيْ عَمْرَةَ الْأَنْصَارِيَّ قَالَا سَمِعْنَا أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَيْسَ الْمِسْكِيْنُ الَّذِيْ تَرُدُّهُ التَّمْرَةُ وَالتَّمْرَتَانِ وَلَا اللُّقْمَةُ وَلَا اللُّقْمَتَانِ إِنَّمَا الْمِسْكِيْنُ الَّذِيْ يَتَعَفَّفُ وَاقْرَءُوْا إِنْ شِئْتُمْ يَعْنِيْ قَوْلَهُ {لَا يَسْأَلُوْنَ النَّاسَ إِلْحَافًا}
‘আত্বা ইবনু ইয়াসার এবং আবূ ‘আম্র আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁরা উভয়ে বলেন যে, আমরা আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, একটি খেজুর কি দু’টি খেজুর আর এক গ্রাস কি দু’ গ্রাস খাদ্য যাকে দ্বারে দ্বারে ঘোরাতে থাকে সে প্রকৃত মিসকীন নয়। মিসকীন তো সে, যে ভিক্ষা করা থেকে বেঁচে থাকে। তোমরা (মিসকীন অর্থ) জানতে চাইলে আল্লাহ্র বাণী পাঠ করতে পার لاَ يَسْأَلُونَ النَّاسَ إِلْحَافًا । [১৪৭৬] (আ.প্র. ৪১৭৯, ই.ফা. ৪১৮০)
عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ لَمَّا نَزَلَتْ الآيَاتُ مِنْ آخِرِ سُوْرَةِ الْبَقَرَةِ فِي الرِّبَا قَرَأَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى النَّاسِ ثُمَّ حَرَّمَ التِّجَارَةَ فِي الْخَمْرِ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সুদ সম্পর্কে সূরাহ আল-বাকারাহর শেষ আয়াতগুলো যখন অবতীর্ণ হল তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) লোকেদের নিকট তা পাঠ করে শোনালেন। তারপর মদের ব্যবসা নিষিদ্ধ করে দিলেন। [৪৫৯] (আ.প্র. ৪১৮০, ই.ফা. ৪১৮১)
بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ سُلَيْمَانَ الْأَعْمَشِ سَمِعْتُ أَبَا الضُّحَى يُحَدِّثُ عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّهَا قَالَتْ لَمَّا أُنْزِلَتْ الْآيَاتُ الْأَوَاخِرُ مِنْ سُوْرَةِ الْبَقَرَةِ خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَتَلَاهُنَّ فِي الْمَسْجِدِ فَحَرَّمَ التِّجَارَةَ فِي الْخَمْرِ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সূরাহ আল-বাকারাহর শেষ আয়াতগুলো যখন অবতীর্ণ হল, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘর থেকে বের হলেন এবং মাসজিদে লোকেদেরকে তা পড়ে শোনালেন। এরপর মদের ব্যবসা নিষিদ্ধ করে দিলেন। [৪৫৯] (আ.প্র. ৪১৮১, ই.ফা. ৪১৮২)
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ لَمَّا أُنْزِلَتْ الآيَاتُ مِنْ آخِرِ سُوْرَةِ الْبَقَرَةِ قَرَأَهُنَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِمْ فِي الْمَسْجِدِ وَحَرَّمَ التِّجَارَةَ فِي الْخَمْرِ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সূরাহ আল-বাকারাহর শেষ আয়াতগুলো যখন অবতীর্ণ হল, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাসজিদে তা পাঠ করে শুনান এবং মদের ব্যবসা নিষিদ্ধ করে দেন। (আ.প্র. ৪১৮২, ই.ফা. ৪১৮৩)
وَ قَالَ لَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ مَنْصُوْرٍ وَالأَعْمَشِ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ لَمَّا أُنْزِلَتْ الآيَاتُ مِنْ آخِرِ سُوْرَةِ الْبَقَرَةِ قَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهُنَّ عَلَيْنَا ثُمَّ حَرَّمَ التِّجَارَةَ فِي الْخَمْرِ
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সূরাহ আল-বাকারার শেষ দিকের আয়াতগুলো যখন অবতীর্ণ হল, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দাঁড়ালেন এবং আমাদের সামনে তা পাঠ করলেন। তারপর মদের ব্যবসা নিষিদ্ধ করে দিলেন। [৪৫৯] (আ.প্র. ৪১৮৩, ই.ফা. ৪১৮৪)
قَبِيْصَةُ بْنُ عُقْبَةَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ آخِرُ آيَةٍ نَزَلَتْ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم آيَةُ الرِّبَا
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপর অবতীর্ণ কৃত শেষ আয়াতটি হল সুদ সম্পর্কিত। (আ.প্র. ৪১৮৪, ই.ফা. ৪১৮৫)
مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا النُّفَيْلِيُّ حَدَّثَنَا مِسْكِيْنٌ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ عَنْ مَرْوَانَ الْأَصْفَرِ عَنْ رَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ ابْنُ عُمَرَ أَنَّهَا قَدْ نُسِخَتْ {وَإِنْ تُبْدُوْا مَا فِىْٓ أَنْفُسِكُمْ أَو تُخْفُوْهُ} الآيَةَ.
মারওয়ান আল আসফার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহাবীদের কোন একজন থেকে বর্ণনা করেন, আর তিনি হচ্ছেন ইবনু ‘উমার (রাঃ) যে, وَإِنْ تُبْدُوا مَا فِي أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ (তোমাদের অন্তরের কথা প্রকাশ কর আর গোপন কর তার হিসাব আল্লাহ তোমাদের থেকে নেবেন) আয়াতটি রহিত হয়ে গেছে। [৪৫৪৬] (আ.প্র. ৪১৮৫, ই.ফা. ৪১৮৬)
إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُوْرٍ أَخْبَرَنَا رَوْحٌ أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ عَنْ مَرْوَانَ الْأَصْفَرِ عَنْ رَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَحْسِبُهُ ابْنَ عُمَرَ {وَإِنْ تُبْدُوْا مَا فِىْٓ أَنْفُسِكُمْ أَو تُخْفُوْهُ}قَالَ : نَسَخَتْهَا الْآيَةُ الَّتِيْ بَعْدَهَا.
মারওয়ানুল আসফার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একজন সহাবী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন আর তিনি ধারণা করেন যে, তিনি ইবনু ‘উমার (রাঃ) হবেন। وَإِنْ تُبْدُوا مَا فِي أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ আয়াতটি মানসুখ হয়ে গেছে। [৪৫৪৫] (আ.প্র. ৪১৮৬, ই.ফা. ৪১৮৭)
عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ التُّسْتَرِيُّ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ تَلَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَذِهِ الْآيَةَ {هُوَ الَّذِيْٓ أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتٰبَ مِنْهُ اٰيٰتٌ مُّحْكَمٰتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتٰبِ وَأُخَرُ مُتَشٰبِهٰتٌ ط فَأَمَّا الَّذِيْنَ فِىْ قُلُوْبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُوْنَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَآءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَآءَ تَأْوِيْلِهٰ ﺻ ج وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيْلَه”ٓ إِلَّا اللهُ ﺻ ﻣ وَالرَّاسِخُوْنَ فِى الْعِلْمِ يَقُوْلُوْنَ اٰمَنَّا بِهٰ لا كُلٌّ مِّنْ عِنْدِ رَبِّنَا ج وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّآ أُولُوا الْأَلْبَابِ (7)} قَالَتْ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : فَإِذَا رَأَيْتِ الَّذِيْنَ يَتَّبِعُوْنَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ فَأُوْلَئِكِ الَّذِيْنَ سَمَّى اللهُ فَاحْذَرُوْهُمْ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আয়াতটি هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ ............ إِلاَّ أُولُو الأَلْبَابِ “তিনিই তোমার প্রতি এ কিতাব অবতীর্ণ করেছেন যার কতক আয়াত সুস্পষ্ট, দ্ব্যর্থহীন। এগুলো কিতাবের মূল অংশ; আর অন্যগুলো রূপক; যাদের অন্তরে সত্য-লঙ্ঘন প্রবণতা রয়েছে শুধু তারাই ফিতনা এবং ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশে যা রূপক তার অনুসরণ করে। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর, তাঁরা বলেন, আর যারা জ্ঞানে সুগভীর তারা বলে ঃ আমরা এতে ঈমান এনেছি, এসবই আমাদের প্রভুর তরফ থেকে এসেছে। জ্ঞানবানরা ব্যতীত কেউ নাসীহাত গ্রহণ করে না” (সূরাহ আলু ইমরান ৩/৭) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পাঠ করলেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘোষণা করেছেন যে, যারা মুতাশাবাহাত আয়াতের পেছনে ছুটে তাদের যখন তুমি দেখবে তখন মনে করবে যে, তাদের কথাই আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে বলেছেন। সুতরাং তাদের ব্যাপারে সাবধান থাকবে। [মুসলিম ৪৭/১, হাঃ ২৬৬৫, আহমাদ ২৬২৫৭] (আ.প্র. ৪১৮৭, ই.ফা. ৪১৮৮)
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا مِنْ مَوْلُوْدٍ يُوْلَدُ إِلَّا وَالشَّيْطَانُ يَمَسُّهُ حِيْنَ يُوْلَدُ فَيَسْتَهِلُّ صَارِخًا مِنْ مَسِّ الشَّيْطَانِ إِيَّاهُ إِلَّا مَرْيَمَ وَابْنَهَا ثُمَّ يَقُوْلُ أَبُوْ هُرَيْرَةَ وَاقْرَءُوْا إِنْ شِئْتُمْ. {وَإِنِّيْ أُعِيْذُهَا بِكَ وَذُرِّيَّتَهَا مِنْ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ}.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, প্রত্যেক নবপ্রসূত বাচ্চার জন্মের সময় শয়তান অবশ্যই তাকে স্পর্শ করে। ফলে শয়তানের স্পর্শমাত্র সে চীৎকার করে উঠে। কিন্তু মারইয়াম (‘আ.) ও তাঁর পুত্র ঈসা (‘আ.)-কে পারেনি। তারপর আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলতেন, যদি তোমরা (এটা জানতে) ইচ্ছা কর তাহলে পড় ঃ وَإِنِّي أُعِيذ ُهَا بِكَ وَذ ُرِّيَّتَهَا مِنْ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ। [৩২৮৬] (আ.প্র. ৪১৮৮, ই.ফা. ৪১৮৯)
عَلِيٌّ هُوَ ابْنُ أَبِيْ هَاشِمٍ سَمِعَ هُشَيْمًا أَخْبَرَنَا الْعَوَّامُ بْنُ حَوْشَبٍ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ أَوْفَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَجُلًا أَقَامَ سِلْعَةً فِي السُّوْقِ فَحَلَفَ فِيْهَا لَقَدْ أَعْطَى بِهَا مَا لَمْ يُعْطِهِ لِيُوْقِعَ فِيْهَا رَجُلًا مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ فَنَزَلَتْ {إِنَّ الَّذِيْنَ يَشْتَرُوْنَ بِعَهْدِ اللهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِيْلًا} إِلَى آخِرِ الآيَةِ.
‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আউফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি বিক্রি করার জন্য বাজারে কিছু জিনিস আনলো এবং কসম করে বলতে শুরু করলো যে, লোকে এ জিনিসের এতো এতো মূল্য দিচ্ছে। অথচ কেউ তা দেয়নি। এ মিথ্যা বলার উদ্দেশ্য হলো, মুসলিমরা যাতে তার এ কথা বিশ্বাস করে তার নিকট থেকে জিনিসটা ক্রয় করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ আয়াত অবতীর্ণ হল ঃ “যারা আল্লাহ্র প্রতিকৃত প্রতিশ্র“তি ও কসম নগণ্য মূল্যে বিক্রি করে, আখিরাতে তাদের অংশে কিছুই অবশিষ্ট থাকলো না। ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি তাকাবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না। আর তাদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে কঠিন কষ্টদায়ক শাস্তি” (সূরাহ আলু ইমরান ৩/৭৭)। [২০৮৮] (আ.প্র. ৪১৯০, ই.ফা. ৪১৯১)
نَصْرُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ نَصْرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ دَاوُدَ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ أَنَّ امْرَأَتَيْنِ كَانَتَا تَخْرِزَانِ فِيْ بَيْتٍ أَوْ فِي الْحُجْرَةِ فَخَرَجَتْ إِحْدَاهُمَا وَقَدْ أُنْفِذَ بِإِشْفَى فِيْ كَفِّهَا فَادَّعَتْ عَلَى الْأُخْرَى فَرُفِعَ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : لَوْ يُعْطَى النَّاسُ بِدَعْوَاهُمْ لذَهَبَ دِمَاءُ قَوْمٍ وَأَمْوَالُهُمْ ذَكِّرُوْهَا بِاللهِ وَاقْرَءُوْا عَلَيْهَا : {إِنَّ الَّذِيْنَ يَشْتَرُوْنَ بِعَهْدِ اللهِ} فَذَكَّرُوْهَا فَاعْتَرَفَتْ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم : الْيَمِيْنُ عَلَى الْمُدَّعَى عَلَيْهِز.
ইবনু আবূ মুলাইকাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
দু’জন মহিলা একটি ঘর কিংবা একটি কক্ষে সেলাই করছিল। হাতের তালুতে সুই বিদ্ধ হয়ে তাদের একজন বেরিয়ে পড়ল এবং অপরজনের বিরুদ্ধে সুই ফুটিয়ে দেয়ার অভিযোগ করল। এই ব্যাপারটি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট পেশ করা হলে তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যদি শুধুমাত্র দাবীর উপর ভিত্তি করে মানুষের দাবী পূরণ করা হয়, তাহলে তাদের জান ও মালের নিরাপত্তা থাকবে না। সুতরাং তোমরা বিবাদীদের আল্লাহ্র নামে শপথ করাও এবং এ আয়াত তার সম্মুখে পাঠ কর। এরপর তারা তাকে শপথ করাল এবং সে নিজ দোষ স্বীকার করল। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, শপথ বিবাদীকে করতে হবে। [২৫১৪; মুসলিম ৩০/১, হাঃ ১৭১১] (আ.প্র. ৪১৯১, ই.ফা. ৪১৯২)
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى عَنْ هِشَامٍ عَنْ مَعْمَرٍ ح وحَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ سُفْيَانَ مِنْ فِيْهِ إِلَى فِيَّ قَالَ انْطَلَقْتُ فِي الْمُدَّةِ الَّتِيْ كَانَتْ بَيْنِيْ وَبَيْنَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَبَيْنَا أَنَا بِالشَّأْمِ إِذْ جِيْءَ بِكِتَابٍ مِنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى هِرَقْلَ قَالَ وَكَانَ دَحْيَةُ الْكَلْبِيُّ جَاءَ بِهِ فَدَفَعَهُ إِلَى عَظِيْمِ بُصْرَى فَدَفَعَهُ عَظِيْمُ بُصْرَى إِلَى هِرَقْلَ قَالَ فَقَالَ هِرَقْلُ هَلْ هَا هُنَا أَحَدٌ مِنْ قَوْمِ هَذَا الرَّجُلِ الَّذِيْ يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالُوْا نَعَمْ قَالَ فَدُعِيْتُ فِيْ نَفَرٍ مِنْ قُرَيْشٍ فَدَخَلْنَا عَلَى هِرَقْلَ فَأُجْلِسْنَا بَيْنَ يَدَيْهِ فَقَالَ أَيُّكُمْ أَقْرَبُ نَسَبًا مِنْ هَذَا الرَّجُلِ الَّذِيْ يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالَ أَبُوْ سُفْيَانَ فَقُلْتُ أَنَا فَأَجْلَسُوْنِيْ بَيْنَ يَدَيْهِ وَأَجْلَسُوْا أَصْحَابِيْ خَلْفِيْ ثُمَّ دَعَا بِتَرْجُمَانِهِ فَقَالَ قُلْ لَهُمْ إِنِّيْ سَائِلٌ هَذَا عَنْ هَذَا الرَّجُلِ الَّذِيْ يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَإِنْ كَذَبَنِيْ فَكَذِّبُوْهُ قَالَ أَبُوْ سُفْيَانَ وَايْمُ اللهِ لَوْلَا أَنْ يُؤْثِرُوْا عَلَيَّ الْكَذِبَ لَكَذَبْتُ ثُمَّ قَالَ لِتَرْجُمَانِهِ سَلْهُ كَيْفَ حَسَبُهُ فِيْكُمْ قَالَ قُلْتُ هُوَ فِيْنَا ذُوْ حَسَبٍ قَالَ فَهَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مَلِكٌ قَالَ قُلْتُ لَا قَالَ فَهَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُوْنَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُوْلَ مَا قَالَ قُلْتُ لَا قَالَ أَيَتَّبِعُهُ أَشْرَافُ النَّاسِ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ قَالَ قُلْتُ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ قَالَ يَزِيْدُوْنَ أَوْ يَنْقُصُوْنَ قَالَ قُلْتُ لَا بَلْ يَزِيْدُوْنَ قَالَ هَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ عَنْ دِيْنِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيْهِ سَخْطَةً لَهُ قَالَ قُلْتُ لَا قَالَ فَهَلْ قَاتَلْتُمُوْهُ قَالَ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ فَكَيْفَ كَانَ قِتَالُكُمْ إِيَّاهُ قَالَ قُلْتُ تَكُوْنُ الْحَرْبُ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُ سِجَالًا يُصِيْبُ مِنَّا وَنُصِيْبُ مِنْهُ قَالَ فَهَلْ يَغْدِرُ قَالَ قُلْتُ لَا وَنَحْنُ مِنْهُ فِيْ هَذِهِ الْمُدَّةِ لَا نَدْرِيْ مَا هُوَ صَانِعٌ فِيْهَا قَالَ وَاللهِ مَا أَمْكَنَنِيْ مِنْ كَلِمَةٍ أُدْخِلُ فِيْهَا شَيْئًا غَيْرَ هَذِهِ قَالَ فَهَلْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ قُلْتُ لَا.
ثُمَّ قَالَ لِتُرْجُمَانِهِ قُلْ لَهُ إِنِّيْ سَأَلْتُكَ عَنْ حَسَبِهِ فِيْكُمْ فَزَعَمْتَ أَنَّهُ فِيْكُمْ ذُوْ حَسَبٍ وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْعَثُ فِيْ أَحْسَابِ قَوْمِهَا وَسَأَلْتُكَ هَلْ كَانَ فِيْ آبَائِهِ مَلِكٌ فَزَعَمْتَ أَنْ لَا فَقُلْتُ لَوْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مَلِكٌ قُلْتُ رَجُلٌ يَطْلُبُ مُلْكَ آبَائِهِ وَسَأَلْتُكَ عَنْ أَتْبَاعِهِ أَضُعَفَاؤُهُمْ أَمْ أَشْرَافُهُمْ فَقُلْتَ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ وَهُمْ أَتْبَاعُ الرُّسُلِ وَسَأَلْتُكَ هَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُوْنَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُوْلَ مَا قَالَ فَزَعَمْتَ أَنْ لَا فَعَرَفْتُ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ لِيَدَعَ الْكَذِبَ عَلَى النَّاسِ ثُمَّ يَذْهَبَ فَيَكْذِبَ عَلَى اللهِ وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ عَنْ دِيْنِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيْهِ سَخْطَةً لَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لَا وَكَذَلِكَ الإِيْمَانُ إِذَا خَالَطَ بَشَاشَةَ الْقُلُوْبِ وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَزِيْدُوْنَ أَمْ يَنْقُصُوْنَ فَزَعَمْتَ أَنَّهُمْ يُزِيْدُوْنَ وَكَذَلِكَ الإِيْمَانُ حَتَّى يَتِمَّ وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَاتَلْتُمُوْهُ فَزَعَمْتَ أَنَّكُمْ قَاتَلْتُمُوْهُ فَتَكُوْنُ الْحَرْبُ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُ سِجَالًا يَنَالُ مِنْكُمْ وَتَنَالُوْنَ مِنْهُ وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْتَلَى ثُمَّ تَكُوْنُ لَهُمْ الْعَاقِبَةُ وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَغْدِرُ فَزَعَمْتَ أَنَّهُ لَا يَغْدِرُ وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ لَا تَغْدِرُ وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَالَ أَحَدٌ هَذَا الْقَوْلَ قَبْلَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لَا فَقُلْتُ لَوْ كَانَ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ قُلْتُ رَجُلٌ ائْتَمَّ بِقَوْلٍ قِيْلَ قَبْلَهُ قَالَ ثُمَّ قَالَ بِمَ يَأْمُرُكُمْ قَالَ قُلْتُ يَأْمُرُنَا بِالصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ وَالصِّلَةِ وَالْعَفَافِ قَالَ إِنْ يَكُ مَا تَقُوْلُ فِيْهِ حَقًّا فَإِنَّهُ نَبِيٌّ وَقَدْ كُنْتُ أَعْلَمُ أَنَّهُ خَارِجٌ وَلَمْ أَكُ أَظُنُّهُ مِنْكُمْ وَلَوْ أَنِّيْ أَعْلَمُ أَنِّيْ أَخْلُصُ إِلَيْهِ لَأَحْبَبْتُ لِقَاءَهُ وَلَوْ كُنْتُ عِنْدَهُ لَغَسَلْتُ عَنْ قَدَمَيْهِ وَلَيَبْلُغَنَّ مُلْكُهُ مَا تَحْتَ قَدَمَيَّ.
قَالَ ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهُ فَإِذَا فِيْهِ.
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُوْلِ اللهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيْمِ الرُّوْمِ سَلَامٌ عَلَى مَنْ اتَّبَعَ الْهُدَى أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّيْ أَدْعُوْكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلَامِ أَسْلِمْ تَسْلَمْ وَأَسْلِمْ يُؤْتِكَ اللهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الْأَرِيْسِيِّيْنَ وَ {قُلْ يٰٓأَهْلَ الْكِتٰبِ تَعَالَوْا إِلٰى كَلِمَةٍ سَوَآءٍم بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَلَّا نَعْبُدَ إِلَّا اللهَ} إِلَى قَوْلِهِ {اشْهَدُوْا بِأَنَّا مُسْلِمُوْنَ} فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ قِرَاءَةِ الْكِتَابِ ارْتَفَعَتْ الْأَصْوَاتُ عِنْدَهُ وَكَثُرَ اللَّغَطُ وَأُمِرَ بِنَا فَأُخْرِجْنَا قَالَ فَقُلْتُ لِأَصْحَابِيْ حِيْنَ خَرَجْنَا لَقَدْ أَمِرَ أَمْرُ ابْنِ أَبِيْ كَبْشَةَ إِنَّهُ لَيَخَافُهُ مَلِكُ بَنِي الْأَصْفَرِ فَمَا زِلْتُ مُوْقِنًا بِأَمْرِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ سَيَظْهَرُ حَتَّى أَدْخَلَ اللهُ عَلَيَّ الإِسْلَامَ قَالَ الزُّهْرِيُّ فَدَعَا هِرَقْلُ عُظَمَاءَ الرُّوْمِ فَجَمَعَهُمْ فِيْ دَارٍ لَهُ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الرُّوْمِ هَلْ لَكُمْ فِي الْفَلَاحِ وَالرَّشَدِ آخِرَ الْأَبَدِ وَأَنْ يَثْبُتَ لَكُمْ مُلْكُكُمْ قَالَ فَحَاصُوْا حَيْصَةَ حُمُرِ الْوَحْشِ إِلَى الْأَبْوَابِ فَوَجَدُوْهَا قَدْ غُلِّقَتْ فَقَالَ عَلَيَّ بِهِمْ فَدَعَا بِهِمْ فَقَالَ إِنِّيْ إِنَّمَا اخْتَبَرْتُ شِدَّتَكُمْ عَلَى دِيْنِكُمْ فَقَدْ رَأَيْتُ مِنْكُمْ الَّذِيْ أَحْبَبْتُ فَسَجَدُوْا لَهُ وَرَضُوْا عَنْهُ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ সুফ্ইয়ান (রাঃ) আমাকে সামনাসামনি হাদীস শুনিয়েছেন। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, আমাদের আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির মেয়াদকালে আমি ভ্রমণে বের হয়েছিলাম। আমি তখন সিরিয়ায় অবস্থান করছিলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে হিরাক্লিয়াসের নিকট একখানা পত্র পৌঁছান হল। দাহ্্ইয়াতুল কালবী এ চিঠিটা বসরার শাসককে দিয়েছিলেন। এরপর তিনি হিরাক্লিয়াসের নিকট পৌঁছিয়ে দিলেন। পত্র পেয়ে হিরাক্লিয়াস বললেন, নাবীর দাবীদার ব্যক্তির গোত্রের কেউ এখানে আছে কি? তারা বলল, হ্যাঁ আছে। কয়েকজন কুরাইশীসহ আমাকে ডাকা হলে আমরা হিরাক্লিয়াসের নিকট গেলাম এবং আমাদেরকে তাঁর সম্মুখে বসানো হল। এরপর তিনি বললেন, নাবীর দাবীদার ব্যক্তির তোমাদের মধ্যে নিকটতম আত্মীয় কে? আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, উত্তরে বললাম, আমিই। তারা আমাকে তার সম্মুখে এবং আমার সাথীদেরকে আমার পেছনে বসালেন। তারপর দোভাষীকে ডাকলেন এবং বললেন, এদেরকে জানিয়ে দাও যে, আমি নাবীর দাবীদার ব্যক্তিটি সম্পর্কে (আবূ সুফ্ইয়ানকে) কিছু জিজ্ঞেস করলে সে যদি আমার নিকট মিথ্যা বলে তোমরা তার মিথ্যা বলা সম্পর্কে ধরবে। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, যদি তাদের পক্ষ থেকে আমাকে মিথ্যুক প্রমাণের আশঙ্কা না থাকত তাহলে আমি অবশ্যই মিথ্যা বলতাম। এরপর দোভাষীকে বললেন, একে জিজ্ঞেস কর যে, তোমাদের মধ্যে এ ব্যক্তির বংশ মর্যাদা কেমন? আবূ সুফ্ইয়ান বললেন, তিনি আমাদের মধ্যে অভিজাত বংশের অধিকারী। তিনি জিজ্ঞেস করলেন যে, তাঁর পূর্বপুরুষদের কেউ কি রাজা-বাদশাহ ছিলেন? আমি বললাম, না। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তাঁর বর্তমানের কথাবার্তার পূর্বে তোমরা তাঁকে কখনো মিথ্যাচারের অপবাদ দিয়েছ কি? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরা তাঁর অনুসরণ করছে, না দুর্বলগণ? আমি বললাম, বরং দুর্বলগণ। তিনি বললেন, তাদের সংখ্যা বাড়ছে না কমছে। আমি বললাম, বরং বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বললেন, তাঁর ধর্মে প্রবিষ্ট হওয়ার পর তাঁর প্রতি বিতৃষ্ণাবশতঃ কেউ কি ধর্ম ত্যাগ করে? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তোমরা তাঁর বিরুদ্ধে কোন যুদ্ধ করেছ কি? বললাম, জ্বী হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধের ফলাফল কী হয়েছে? আমি বললাম, আমাদের ও তাদের মধ্যে যুদ্ধের ফলাফল হল ঃ একবার তিনি জয়ী হন, আর একবার আমরা জয়ী হই। তিনি বললেন, তিনি প্রতিশ্রতি ভঙ্গ করেননি? বললাম, না। তবে বর্তমানে আমরা একটি সন্ধির মেয়াদে আছি। দেখি এতে তিনি কী করেন। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, আল্লাহ্র শপথ! এটি ব্যতীত অন্য কোন কথা ঢুকিয়ে দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। বললেন, তাঁর পূর্বে এমন কথা কেউ বলেছে কি? বললাম, না। তারপর তিনি তাঁর দোভাষীকে বললেন যে, একে জানিয়ে দাও যে, আমি তোমাকে তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তির বংশমর্যাদা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তারপর তুমি বলেছ যে, সে আমাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত। তদ্রুপ রসূলগণ শ্রেষ্ঠ বংশেই জন্মলাভ করে থাকেন। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, তাঁর পূর্বপুরুষের কেউ রাজা-বাদশাহ ছিলেন কিনা? তুমি বলেছ ‘না’। তাই আমি বলছি যে, যদি তাঁর পূর্বপুরুষদের কেউ রাজা-বাদশাহ থাকতেন তাহলে বলতাম, তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের রাজত্ব ফিরে পেতে চাচ্ছেন। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, দুর্বলগণ তাঁর অনুসারী, না সম্ভ্রান্তগণ? তুমি বলেছ, দুর্বলগণই। আমি বলেছি যে, যুগে যুগে দুর্বলগণই রসূলদের অনুসারী হয়ে থাকে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, এ দাবীর পূর্বে তোমরা কখনও তাঁকে মিথ্যাবাদিতার অপবাদ দিয়েছিলে কি? তুমি উত্তরে বলেছ যে, না। তাতে আমি বুঝেছি যে, যে ব্যক্তি প্রথমে মানুষদের সঙ্গে মিথ্যাচার ত্যাগ করেন, তারপর আল্লাহ্র সঙ্গে মিথ্যাচারিতা করবেন, তা হতে পারে না। আমি তোমাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, তাঁর ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর তাঁর প্রতি বিরক্ত হয়ে কেউ ধর্ম ত্যাগ করে কিনা? তুমি বলেছ, ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি বলছি, ঈমান এভাবেই পূর্ণতা লাভ করে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, তোমরা তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছ কি? তুমি বলেছ যে, যুদ্ধ করেছ এবং তাঁর ফলাফল হচ্ছে পানি তোলার বালতির মত। কখনো তোমাদের বিরুদ্ধে তারা জয়লাভ করে আবার কখনো তাদের বিরুদ্ধে তোমরা জয়লাভ কর। এমনিভাবেই রসূলদের পরীক্ষা করা হয়, তারপর চূড়ান্ত বিজয় তাদেরই হয়ে থাকে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিনি প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেন কিনা? তুমি বলেছ, না। তদ্রুপ রসূলগণ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেন না। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, তাঁর পূর্বে কেউ এ দাবী উত্থাপন করেছিল কিনা? তুমি বলেছ, না। আমি বলি যদি কেউ তাঁর পূর্বে এ ধরনের দাবী করে থাকত তাহলে আমি মনে করতাম এ ব্যক্তি পূর্ববর্তী দাবীর অনুসরণ করছে। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, তারপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তিনি তোমাদের কী কাজের হুকুম দেন? আমি বললাম, সলাত কায়িম করতে, যাকাত প্রদান করতে, আত্মীয়তা রক্ষা করতে এবং পাপকাজ থেকে পবিত্র থাকার হুকুম দেন। হিরাক্লিয়াস বললেন, তাঁর সম্পর্কে তোমার বক্তব্য যদি সঠিক হয়, তাহলে তিনি ঠিকই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম), তিনি আবির্ভূত হবেন তা আমি জানতাম বটে তবে তোমাদের মধ্যে আবির্ভূত হবেন তা মনে করিনি। যদি আমি তাঁর সান্নিধ্যে পৌঁছার সুযোগ পেতাম তাহলে আমি তাঁর সাক্ষাৎকে অগ্রাধিকার দিতাম। যদি আমি তাঁর নিকট অবস্থান করতাম তাহলে আমি তাঁর পদযুগল ধুয়ে দিতাম। আমার পায়ের নিচের জমিন পর্যন্ত তাঁর রাজত্ব সীমা পৌঁছে যাবে।
আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, তারপর হিরাক্লিয়াস রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পত্রখানি আনতে বললেন। এরপর পাঠ করতে বললেন। তাতে লেখা ছিল ঃ
দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহ্র নামে, আল্লাহ্র রসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে রোমের অধিপতি হিরাক্লিয়াসের প্রতি। হিদায়াতের অনুসারীর প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। এরপর আমি আপনাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি, ইসলাম গ্রহণ করুন, মুক্তি পাবেন। ইসলাম গ্রহণ করুন, আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে দ্বিগুণ প্রতিদান দেবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে থাকেন তাহলে সকল প্রজার পাপরাশিও আপনার উপর নিপতিত হবে। “হে কিতাবীগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই যে, আমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ‘ইবাদাত করব না, কোন কিছুতেই তাঁর সঙ্গে শরীক করব না। আর আমাদের একে অন্যকে আল্লাহ ব্যতীত প্রতিপালকরূপে গ্রহণ করব না। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে বল, তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা মুসলিম।”
যখন তিনি পত্র পাঠ সমাপ্ত করলেন চতুর্দিকে উচ্চ রব উঠল এবং গুঞ্জন বৃদ্ধি পেল। তারপর তাঁর নির্দেশে আমাদের বাইরে নিয়ে আসা হল। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, আমরা বেরিয়ে আসার পর আমি আমার সাথীদের বললাম যে, আবূ কাবশার সন্তানের তো বিস্তার ঘটেছে। রোমের রাষ্ট্রনায়ক পর্যন্ত তাঁকে ভয় পায়। তখন থেকে আমার মনে এ দৃঢ় বিশ্বাস জন্মেছিল যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দ্বীন অতি সত্বর বিজয় লাভ করবে। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা আমাকে ইসলামে দীক্ষিত করলেন। ইমাম যুহরী (রহ.) বলেন, তারপর হিরাক্লিয়াস রোমের নেতৃবৃন্দকে ডেকে একটি কক্ষে একত্রিত করলেন এবং বললেন, হে রোমবাসী! তোমরা কি আজীবন সৎপথ ও সফলতার প্রত্যাশী এবং তোমরা কি চাও তোমাদের রাজত্ব অটুট থাকুক? এতে তারা বন্য-গর্দভের মত প্রাণপণে পলায়নরত হল। কিন্তু দরজাগুলো সবই বন্ধ পেল। এরপর বাদশাহ নির্দেশ দিলেন যে, তাদের সবাইকে আমার নিকট নিয়ে এসো। তিনি তাদের সবাইকে ডাকলেন এবং বললেন, তোমাদের ধর্মের উপর তোমাদের দৃঢ়তা আমি পরীক্ষা করলাম। আমি যা আশা করেছিলাম তা তোমাদের থেকে পেয়েছি। তখন সবাই তাঁকে সাজদাহ্ করল এবং তাঁর উপর সন্তুষ্ট রইল। [৭] (আ.প্র. ৪১৯২, ই.ফা. ৪১৯৩)
إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَالِكٌ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ طَلْحَةَ أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ كَانَ أَبُوْ طَلْحَةَ أَكْثَرَ أَنْصَارِيٍّ بِالْمَدِيْنَةِ نَخْلًا وَكَانَ أَحَبَّ أَمْوَالِهِ إِلَيْهِ بَيْرُحَاءَ وَكَانَتْ مُسْتَقْبِلَةَ الْمَسْجِدِ وَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَدْخُلُهَا وَيَشْرَبُ مِنْ مَاءٍ فِيْهَا طَيِّبٍ فَلَمَّا أُنْزِلَتْ {لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتّٰى تُنْفِقُوْا مِمَّا تُحِبُّوْنَ} قَامَ أَبُوْ طَلْحَةَ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ اللهَ يَقُوْلُ : {لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتّٰى تُنْفِقُوْا مِمَّا تُحِبُّوْنَ} وَإِنَّ أَحَبَّ أَمْوَالِيْ إِلَيَّ بَيْرُحَاءَ وَإِنَّهَا صَدَقَةٌ لِلهِ أَرْجُوْ بِرَّهَا وَذُخْرَهَا عِنْدَ اللهِ فَضَعْهَا يَا رَسُوْلَ اللهِ حَيْثُ أَرَاكَ اللهُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَخْ ذَلِكَ مَالٌ رَايِحٌ ذَلِكَ مَالٌ رَايِحٌ وَقَدْ سَمِعْتُ مَا قُلْتَ وَإِنِّيْ أَرَى أَنْ تَجْعَلَهَا فِي الْأَقْرَبِيْنَ قَالَ أَبُوْ طَلْحَةَ أَفْعَلُ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَقَسَمَهَا أَبُوْ طَلْحَةَ فِيْ أَقَارِبِهِ وَفِيْ بَنِيْ عَمِّهِ قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ وَرَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ ذَلِكَ مَالٌ رَابِحٌ
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মদিনায় আবূ ত্বলহা (রাঃ)-ই অধিক সংখ্যক খেজুর গাছের মালিক ছিলেন। তাঁর নিকট সর্বাধিক প্রিয় সম্পদ ছিল “বাইরুহা” নামক বাগানটি। এটা ছিল মাসজিদের সম্মুখে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেখানে আসতেন এবং সেখানকার (কূপের) সুমিষ্ট পানি পান করতেন। যখন لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ আয়াতটি অবতীর্ণ হল, তখন আবূ ত্বলহা (রাঃ) উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আল্লাহ বলছেন, “তোমরা কখনও পুণ্য লাভ করবে না যে পর্যন্ত না নিজেদের প্রিয়বস্তু থেকে ব্যয় করবে” (সূরাহ আলু ইমরান ৩/৯২)। আমার সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ বাইরুহা। এটা আল্লাহ্র রাস্তায় আমি দান করে দিলাম। আমি আল্লাহ্র নিকট পুণ্য ও তার ভাণ্ডার চাই। আল্লাহ আপনাকে যেভাবে নির্দেশ দেন সেভাবে তা ব্যয় করুন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, বাহ! ওটি তো অস্থায়ী সম্পদ, ওটা তো অস্থায়ী সম্পদ, তুমি যা বলেছ আমি শুনেছি। তুমি তা তোমার নিকটাত্মীয়কে দিয়ে দাও, আমি এ সিদ্ধান্ত দিচ্ছি। আবূ ত্বলহা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি তা করব। তারপর আবূ ত্বলহা (রাঃ) সেটা তাঁর চাচাত ভাই-বোন ও আত্মীয়দের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ ও ইবনু ‘উবাদাহ্ (রাঃ)-এর বর্ণনায় “ওটা তো লাভজনক সম্পত্তি” বলে উল্লেখিত হয়েছে। [১৪৬১] (আ.প্র. ৪১৯৩, ই.ফা. ৪১৯৪)
ইয়াহ্ইয়া ইবনু ইয়াহ্ইয়া (রহ.) বলেন, আমি মালিক (রহ.)-এর নিকট مَالٌ رَابِحٌ এর অর্থ পড়েছি ‘অস্থায়ী সম্পদ’। [১৪৬১] (আ.প্র. নাই, ই.ফা. ৪১৯৫)
يَحْيَى بْنُ يَحْيَى قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ مَالٌ رَايِحٌ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيُّ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ ثُمَامَةَ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ فَجَعَلَهَا لِحَسَّانَ وَأُبَيٍّ وَأَنَا أَقْرَبُ إِلَيْهِ وَلَمْ يَجْعَلْ لِيْ مِنْهَا شَيْئًا.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এরপর আবূ ত্বলহা (রাঃ) হাস্সান ইবনু সাবিত এবং উবাই ইবনু কা‘বের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। আমি তাঁর নিকটাত্মীয় ছিলাম। কিন্তু আমাকে তা হতে কিছুই দেননি। [১৪৬১] (আ.প্র. ৪১৯৪, ই.ফা. ৪১৯৬)
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا أَبُوْ ضَمْرَةَ حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ الْيَهُوْدَ جَاءُوْا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِرَجُلٍ مِنْهُمْ وَامْرَأَةٍ قَدْ زَنَيَا فَقَالَ لَهُمْ كَيْفَ تَفْعَلُوْنَ بِمَنْ زَنَى مِنْكُمْ قَالُوْا نُحَمِّمُهُمَا وَنَضْرِبُهُمَا فَقَالَ لَا تَجِدُوْنَ فِي التَّوْرَاةِ الرَّجْمَ فَقَالُوْا لَا نَجِدُ فِيْهَا شَيْئًا فَقَالَ لَهُمْ عَبْدُ اللهِ بْنُ سَلَامٍ: كَذَبْتُمْ {فَأْتُوْا بِالتَّوْرَاةِ فَاتْلُوْهَآ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِيْنَ} فَوَضَعَ مِدْرَاسُهَا الَّذِيْ يُدَرِّسُهَا مِنْهُمْ كَفَّهُ عَلَى آيَةِ الرَّجْمِ فَطَفِقَ يَقْرَأُ مَا دُوْنَ يَدِهِ وَمَا وَرَاءَهَا وَلَا يَقْرَأُ آيَةَ الرَّجْمِ فَنَزَعَ يَدَهُ عَنْ آيَةِ الرَّجْمِ فَقَالَ مَا هَذِهِ فَلَمَّا رَأَوْا ذَلِكَ قَالُوْا هِيَ آيَةُ الرَّجْمِ فَأَمَرَ بِهِمَا فَرُجِمَا قَرِيْبًا مِنْ حَيْثُ مَوْضِعُ الْجَنَائِزِ عِنْدَ الْمَسْجِدِ فَرَأَيْتُ صَاحِبَهَا يَحْنِيْ عَلَيْهَا يَقِيْهَا الْحِجَارَةَ.
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ব্যভিচার করেছে এমন এক পুরুষ ও এক মহিলা নিয়ে ইয়াহূদীগণ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দরবারে উপস্থিত হল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের বললেন, তোমাদের ব্যভিচারীদেরকে তোমরা কীভাবে শাস্তি দাও? তারা বলল, আমরা তাদের দু’জনের চেহারা কালিমালিপ্ত করি এবং তাদের প্রহার করি। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা তাওরাতে কি প্রস্তর নিক্ষেপের বিধান পাও না? তারা বলল, আমরা তাতে এ ব্যাপারে কিছুই পাই না। তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) তাদের বললেন, তোমরা মিথ্যা বলছ, তোমরা যদি সত্যবাদী হও, তবে তাওরাত আন এবং তা পাঠ কর। এরপর তাওরাত পাঠের সময় তাদের তাওরাত-শিক্ষক প্রস্তর নিক্ষেপ সম্পর্কিত আয়াতের উপর স্বীয় হস্ত রেখে তার উপর নীচের অংশ পড়তে লাগল। রজমের কথা লিখা আয়াতটি পড়ছিল না। ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) তার হাতটি রজমের আয়াতের উপর থেকে সরিয়ে দিয়ে বললেন, এটা কী? যখন তারা এ অবস্থা দেখল তখন বলল, এটি রজমের আয়াত। অনন্তর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে রজম করার নির্দেশ দিলেন এবং মাসজিদের পার্শ্বে জানাযার স্থানের নিকটে উভয়কে ‘রজম’ করা হল।
ইবনু ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমি সেই পুরুষটিকে দেখলাম তার সঙ্গীনীর উপরে ঝুঁকে পড়ে তাকে প্রস্তরাঘাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। [১৩২৯] (আ.প্র. ৪১৯৫, ই.ফা. ৪১৯৭)
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ مَيْسَرَةَ عَنْ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ {كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ} قَالَ خَيْرَ النَّاسِ لِلنَّاسِ تَأْتُوْنَ بِهِمْ فِي السَّلَاسِلِ فِيْ أَعْنَاقِهِمْ حَتَّى يَدْخُلُوْا فِي الإِسْلَامِ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ আয়াত সম্পর্কে বলেন, মানুষের জন্য মানুষ কল্যাণকর তখনই হয় যখন তাদের গ্রীবাদেশে (আল্লাহ্র আনুগত্যের) শিকল লাগিয়ে নিয়ে আসে। অতঃপর তারা ইসলামে প্রবেশ করে। [৩০১০] (আ.প্র. ৪১৯৬, ই.ফা. ৪১৯৮)
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ قَالَ عَمْرٌو سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ فِيْنَا نَزَلَتْ {إِذْ هَمَّتْ طَّآئِفَتَانِ مِنْكُمْ أَنْ تَفْشَلَا وَاللهُ وَلِيُّهُمَا} : قَالَ : نَحْنُ الطَّائِفَتَانِ بَنُوْ حَارِثَةَ وَبَنُوْ سَلِمَةَ وَمَا نُحِبُّ وَقَالَ سُفْيَانُ مَرَّةً وَمَا يَسُرُّنِيْ أَنَّهَا لَمْ تُنْزَلْ لِقَوْلِ اللهِ : {وَاللهُ وَلِيُّهُمَا}.
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, إِذْ هَمَّتْ طَائِفَتَانِ مِنْكُمْ أَنْ تَفْشَلاَ وَاللهُ وَلِيُّهُمَا আয়াতটি আমাদের ব্যাপারেই অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা দু’দল বানী হারিসা আর বানী সালিমা। যেহেতু এ আয়াতে وَاللهُ وَلِيُّهُمَا “আল্লাহ উভয়ের অভিভাবক” উল্লেখ আছে, সেহেতু এটা অবতীর্ণ না হওয়া আমরা পছন্দ করতাম না। সুফ্ইয়ান (রহ.)-এর এক বর্ণনায় আছে وَمَا يَسُرُّنِي ‘আমাকে ভাল লাগেনি’। [৪০৫১] (আ.প্র. ৪১৯৭, ই.ফা. ৪১৯৯)
حِبَّانُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَالِمٌ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنْ الرُّكُوْعِ فِي الرَّكْعَةِ الْآخِرَةِ مِنَ الْفَجْرِ يَقُوْلُ : اللهُمَّ الْعَنْ فُلَانًا وَفُلَانًا وَفُلَانًا بَعْدَ مَا يَقُوْلُ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ فَأَنْزَلَ اللهُ {لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ} إِلَى قَوْلِهِ {فَإِنَّهُمْ ظَالِمُوْنَ} رَوَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ رَاشِدٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ.
সালিম (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে শুনেছেন যে, তিনি ফাজরের সলাতের শেষ রাকআতে রুকূ‘ থেকে মাথা তুলে ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ্ (আল্লাহ তাঁর প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন। হে আমাদের প্রতিালক! তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা)’, ‘রব্বানা ওয়ালাকাল হাম্দ’ বলার পর এটা বলতেনঃ হে আল্লাহ! অমুক, অমুক এবং অমুককে লানত করুন। তখন আল্লাহ এ আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَيْءٌ ..... فَإِنَّهُمْ ظَالِمُونَ “তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদের শাস্তি দিবেন, এ বিষয়ে তোমার করণীয় কিছুই নেই। কারণ তারা যালিম।” ইসহাক ইবনু রাশিদ (রহ.) ইমাম যুহরী (রহ.) থেকে এটা বর্ণনা করেছেন। [৪০৬৯] (আ.প্র. ৪১৯৮, ই.ফা. ৪২০০)
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ وَأَبِيْ سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَدْعُوَ عَلَى أَحَدٍ أَوْ يَدْعُوَ لِأَحَدٍ قَنَتَ بَعْدَ الرُّكُوْعِ فَرُبَّمَا قَالَ إِذَا قَالَ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ اللهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ اللهُمَّ أَنْجِ الْوَلِيْدَ بْنَ الْوَلِيْدِ وَسَلَمَةَ بْنَ هِشَامٍ وَعَيَّاشَ بْنَ أَبِيْ رَبِيْعَةَ اللهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ وَاجْعَلْهَا سِنِيْنَ كَسِنِيْ يُوْسُفَ يَجْهَرُ بِذَلِكَ وَكَانَ يَقُوْلُ فِيْ بَعْضِ صَلَاتِهِ فِيْ صَلَاةِ الْفَجْرِ اللهُمَّ الْعَنْ فُلَانًا وَفُلَانًا لِأَحْيَاءٍ مِنَ الْعَرَبِ حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ {لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ} الآيَةَ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কারো জন্যে বদদু‘আ অথবা দু‘আ করার মনস্থ করতেন, তখন সলাতের রুকূর পরেই কুনূতে নাযিলা (বদ্দু‘আ ও হিফাযাতের জন্য অবতারিত দু‘আ) পড়তেন। কখনো কখনো سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ, اللهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ ’ বলার পর বলতেন, হে আল্লাহ! ওয়ালিদ ইবনু ওয়ালিদ, সালামাহ ইবনু হিশাম এবং আইয়াশ ইবনু আবূ রাবিয়াহ্কে মুক্তি দিন। হে আল্লাহ! মুদার গোত্রের উপর শাস্তি কঠোর করুন। এ শাস্তিকে ইউসুফ (‘আ.)-এর যুগের দুর্ভিক্ষের মত দুর্ভিক্ষে পরিণত করুন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ কথাগুলোকে উচ্চৈঃস্বরে বলতেন। কখনো কখনো তিনি কয়েকটি গোত্রের ব্যাপারে ফাজরের সলাতে বলতেন, হে আল্লাহ! অমুক এবং অমুককে লা‘নাত দিন। অবশেষে আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন ঃ لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَيْءٌ । [৭৯৭] (আ.প্র. ৪১৯৯, ই.ফা. ৪২০১)
عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ جَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى الرَّجَّالَةِ يَوْمَ أُحُدٍ عَبْدَ اللهِ بْنَ جُبَيْرٍ وَأَقْبَلُوْا مُنْهَزِمِيْنَ فَذَاكَ إِذْ يَدْعُوْهُمْ الرَّسُوْلُ فِيْ أُخْرَاهُمْ وَلَمْ يَبْقَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم غَيْرُ اثْنَيْ عَشَرَ رَجُلًا.
বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উহূদ যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কিছু পদাতিক সৈন্যের উপর ‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ)-কে সেনাপতি নিযুক্ত করেন। এরপর তাদের কতক পরাজিত হলে পালাতে লাগল, এটাই হল, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন তোমাদের পেছন দিক থেকে ডাকছিলেন। মাত্র বারোজন লোক ব্যতীত আর কেউ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলেন না। [৩০৩৯] (আ.প্র. ৪২০০, ই.ফা. ৪২০২)
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَبُوْ يَعْقُوْبَ حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ قَتَادَةَ حَدَّثَنَا أَنَسٌ أَنَّ أَبَا طَلْحَةَ قَالَ غَشِيَنَا النُّعَاسُ وَنَحْنُ فِيْ مَصَافِّنَا يَوْمَ أُحُدٍ قَالَ فَجَعَلَ سَيْفِيْ يَسْقُطُ مِنْ يَدِيْ وَآخُذُهُ وَيَسْقُطُ وَآخُذُهُ.
আবূ ত্বলহা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা উহূদ যুদ্ধের দিন সারিবদ্ধ অবস্থায় ছিলাম যখন তন্দ্রা আমাদের আচ্ছাদিত করে ফেলেছিল। তিনি বলেন, আমার তরবারি আমার হাত থেকে পড়ে যাচ্ছিল, আমি তা উঠাচ্ছিলাম, আবার পড়ে যাচ্ছিল, আবার তা উঠাচ্ছিলাম। [৪০৬৮] (আ.প্র. ৪২০১, ই.ফা. ৪২০৩)
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ ـ أُرَاهُ قَالَ ـ حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، {حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ} قَالَهَا إِبْرَاهِيمُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ حِينَ أُلْقِيَ فِي النَّارِ، وَقَالَهَا مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم حِينَ قَالُوا {إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَانًا وَقَالُوا حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ}
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। حَسْبُنَااللهُوَنِعْمَالْوَكِيلُ কথাটি ইবরাহীম (‘আ.) বলেছিলেন, যখন তিনি আগুনে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছিলেন যখন লোকেরা বলল, “নিশ্চয় তোমাদের বিরুদ্ধে কাফিররা বিরাট সাজ-সরঞ্জামের সমাবেশ করেছে, সুতরাং তোমরা তাদের ভয় কর। এ কথা তাদের ঈমানের তেজ বাড়িয়ে দিল এবং তারা বলল ঃ আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম কার্যনির্বাহক” (সূরাহ আলু ইমরান ৩/১৭৩)। [৪৫৬৪] (আ.প্র. ৪২০২, ই.ফা. ৪২০৪)
مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ أَبِيْ حَصِيْنٍ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ آخِرَ قَوْلِ إِبْرَاهِيْمَ حِيْنَ أُلْقِيَ فِي النَّارِ {حَسْبِيَ اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ}.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, ইবরাহীম (‘আ.) যখন আগুনে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন তখন তাঁর শেষ কথা ছিল ঃ حَسْبِيَاللهُوَنِعْمَالْوَكِيلُ অর্থাৎ “আল্লাহ্ই যথেষ্ট” তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক! [৪৫৬৩] (আ.প্র. ৪২০৩, ই.ফা. ৪২০৫)
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُنِيْرٍ سَمِعَ أَبَا النَّضْرِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ هُوَ ابْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ آتَاهُ اللهُ مَالًا فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَهُ مُثِّلَ لَهُ مَالُهُ شُجَاعًا أَقْرَعَ لَهُ زَبِيْبَتَانِ يُطَوَّقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَأْخُذُ بِلِهْزِمَتَيْهِ يَعْنِيْ بِشِدْقَيْهِ يَقُوْلُ أَنَا مَالُكَ أَنَا كَنْزُكَ ثُمَّ تَلَا هَذِهِ الْآيَةَ {وَلَا يَحْسِبَنَّ الَّذِيْنَ يَبْخَلُوْنَ بِمَآ اٰتَاهُمْ اللهُ مِنْ فَضْلِهٰ} إِلَى آخِرِ الْآيَةِ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যাকে আল্লাহ তা‘আলা ধন-সম্পদ দেন, তারপর সে তার যাকাত আদায় করে না ক্বিয়ামাতের দিন তার ধন-সম্পদকে তার জন্যে লোমবিহীন কালো-চিহ্ন যুক্ত সর্পে রূপ দেয়া হবে এবং তার গলায় পরিয়ে দেয়া হবে। মুখের দু’দিক দিয়ে সে তাকে দংশন করতে থাকবে এবং বলবে, ‘আমি তোমার সম্পদ, আমি তোমার সঞ্চয়’। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই আয়াত তিলাওয়াত করলেন ঃ وَلاَيَحْسِبَنَّالَّذِينَيَبْخَلُونَبِمَاآتَاهُمْاللهُمِنْفَضْلِهِ “এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে যা তাদেরকে দিয়েছেন তাতে যারা কৃপণতা করে তাদের জন্য তা মঙ্গলজনক এটা যেন তারা কিছুতেই মনে না করে ......” আয়াতের শেষ অংশ। [১৪০৩] (আ.প্র. ৪২০৪, ই.ফা. ৪২০৬)
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَكِبَ عَلَى حِمَارٍ عَلَى قَطِيْفَةٍ فَدَكِيَّةٍ وَأَرْدَفَ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ وَرَاءَهُ يَعُوْدُ سَعْدَ بْنَ عُبَادَةَ فِيْ بَنِي الْحَارِثِ بْنِ الْخَزْرَجِ قَبْلَ وَقْعَةِ بَدْرٍ قَالَ حَتَّى مَرَّ بِمَجْلِسٍ فِيْهِ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ ابْنُ سَلُوْلَ وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ يُسْلِمَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ فَإِذَا فِي الْمَجْلِسِ أَخْلَاطٌ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُشْرِكِيْنَ عَبَدَةِ الْأَوْثَانِ وَالْيَهُوْدِ وَالْمُسْلِمِيْنَ وَفِي الْمَجْلِسِ عَبْدُ اللهِ بْنُ رَوَاحَةَ فَلَمَّا غَشِيَتْ الْمَجْلِسَ عَجَاجَةُ الدَّابَّةِ خَمَّرَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ أَنْفَهُ بِرِدَائِهِ ثُمَّ قَالَ لَا تُغَبِّرُوْا عَلَيْنَا فَسَلَّمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِمْ ثُمَّ وَقَفَ فَنَزَلَ فَدَعَاهُمْ إِلَى اللهِ وَقَرَأَ عَلَيْهِمْ الْقُرْآنَ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ ابْنُ سَلُوْلَ أَيُّهَا الْمَرْءُ إِنَّهُ لَا أَحْسَنَ مِمَّا تَقُوْلُ إِنْ كَانَ حَقًّا فَلَا تُؤْذِنَا بِهِ فِيْ مَجْلِسِنَا ارْجِعْ إِلَى رَحْلِكَ فَمَنْ جَاءَكَ فَاقْصُصْ عَلَيْهِ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ رَوَاحَةَ بَلَى يَا رَسُوْلَ اللهِ فَاغْشَنَا بِهِ فِيْ مَجَالِسِنَا فَإِنَّا نُحِبُّ ذَلِكَ فَاسْتَبَّ الْمُسْلِمُوْنَ وَالْمُشْرِكُوْنَ وَالْيَهُوْدُ حَتَّى كَادُوْا يَتَثَاوَرُوْنَ فَلَمْ يَزَلْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُخَفِّضُهُمْ حَتَّى سَكَنُوْا ثُمَّ رَكِبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم دَابَّتَهُ فَسَارَ حَتَّى دَخَلَ عَلَى سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَا سَعْدُ أَلَمْ تَسْمَعْ مَا قَالَ أَبُوْ حُبَابٍ يُرِيْدُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أُبَيٍّ قَالَ كَذَا وَكَذَا قَالَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ يَا رَسُوْلَ اللهِ اعْفُ عَنْهُ وَاصْفَحْ عَنْهُ فَوَالَّذِيْ أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ لَقَدْ جَاءَ اللهُ بِالْحَقِّ الَّذِيْ أَنْزَلَ عَلَيْكَ لَقَدْ اصْطَلَحَ أَهْلُ هَذِهِ الْبُحَيْرَةِ عَلَى أَنْ يُتَوِّجُوْهُ فَيُعَصِّبُوْهُ بِالْعِصَابَةِ فَلَمَّا أَبَى اللهُ ذَلِكَ بِالْحَقِّ الَّذِيْ أَعْطَاكَ اللهُ شَرِقَ بِذَلِكَ فَذَلِكَ فَعَلَ بِهِ مَا رَأَيْتَ فَعَفَا عَنْهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ يَعْفُوْنَ عَنِ الْمُشْرِكِيْنَ وَأَهْلِ الْكِتَابِ كَمَا أَمَرَهُمْ اللهُ وَيَصْبِرُوْنَ عَلَى الْأَذَى قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ : {وَلَتَسْمَعُنَّ مِنَ الَّذِيْنَ أُوْتُوا الْكِتَابَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَمِنَ الَّذِيْنَ أَشْرَكُوْآ أَذًى كَثِيْرًا} الْآيَةَ. وَقَالَ اللهُ : {وَدَّ كَثِيْرٌ مِّنْ أَهْلِ الْكِتٰبِ لَوْ يَرُدُّوْنَكُمْ مِّنْم بَعْدِ إِيْمَانِكُمْ كُفَّارًا ج حَسَدًا مِّنْ عِنْدِ أَنْفُسِهِمْ} إِلَى آخِرِ الْآيَةِ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَتَأَوَّلُ الْعَفْوَ مَا أَمَرَهُ اللهُ بِهِ حَتَّى أَذِنَ اللهُ فِيْهِمْ فَلَمَّا غَزَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَدْرًا فَقَتَلَ اللهُ بِهِ صَنَادِيْدَ كُفَّارِ قُرَيْشٍ قَالَ ابْنُ أُبَيٍّ ابْنُ سَلُوْلَ وَمَنْ مَعَهُ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ وَعَبَدَةِ الْأَوْثَانِ هَذَا أَمْرٌ قَدْ تَوَجَّهَ فَبَايَعُوا الرَّسُوْلَ صلى الله عليه وسلم عَلَى الإِسْلَامِ فَأَسْلَمُوْا.
উসামাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি গাধার পিঠে আরোহণ করেছিলেন, একটি ফদকী চাদর তাঁর পরনে ছিল। উসামাহ ইবনু যায়দ (রাঃ)-কে তাঁর পেছনে বসিয়েছিলেন। তিনি বানী হারিস ইবনু খাযরায গোত্রে অসুস্থ সা‘দ ইবনু ‘উবাদাহ (রাঃ)-কে দেখতে যাচ্ছিলেন। এটা ছিল বদর যুদ্ধের পূর্বেকার ঘটনা। বর্ণনাকারী বলেন যে, যেতে যেতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এমন একটি মজলিসের কাছে পৌঁছলেন, যেখানে ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই বিন সালুলও ছিলসে তখনও ইসলাম গ্রহণ করেনি। সে মজলিসে মুসলিম, মুশরিক, প্রতিমাপূজারী এবং ইয়াহূদী সকল প্রকারের লোক ছিল এবং তথায় ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ)-ও ছিলেন। জন্তুর পদধূলি যখন মজলিসকে আচ্ছন্ন করল, তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই আপন চাদরে নাক ঢেকে ফেলল। তারপর বলল, আমাদের এখানে ধূলো উড়িয়ো না। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এদেরকে সালাম করলেন। তারপর বাহন থেকে অবতরণ করলেন এবং তাদেরকে আল্লাহ্র প্রতি দাওয়াত দিলেন এবং তাদের কাছে কুরআন মাজীদ পাঠ করলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই বলল, এই লোকটি! তুমি যা বলছ তা যদি সত্য হয় তাহলে এর চেয়ে উত্তম কিছুই নেই। তবে আমাদের মজলিসে আমাদেরকে জ্বালাতন করবে না। তুমি তোমার তাঁবুতে যাও। যে তোমার কাছে যাবে যাকে তুমি তোমার কথা বলবে। অনন্তর ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি আমাদের মজলিসে এগুলো আমাদের কাছে বলবেন, কারণ আমরা তা পছন্দ করি। এতে মুসলিম, মুশরিক এবং ইয়াহূদীরা পরস্পর গালাগালি শুরু করল। এমনকি তারা মারামারিতে লিপ্ত হওয়ার পর্যায়ে উপনীত হল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে থামাচ্ছিলেন। অবশেষে তারা থামল। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর পশুটির পিঠে চড়ে রওয়ানা দিলেন এবং সা‘দ ইবনু উবাদাহ (রাঃ)-এর কাছে গেলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বললেন, হে সা‘দ! আবূ হুবাব অর্থাৎ ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই কী বলেছে, তুমি শুনেছ কি? সে এমন বলেছে। সা‘দ ইবনু ‘উবাদাহ্ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! তাকে ক্ষমা করে দিন। তার দিকে ভ্রুক্ষেপ করবেন না। যিনি আপনার উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, তাঁর শপথ করে বলছি, আল্লাহ আপনার উপর যা অবতীর্ণ করেছেন তা সত্য। এতদঞ্চলের অধিবাসীগণ চুক্তি সম্পাদন করেছিল যে, তাকে শাহী টুপী পরাবে এবং নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত করবে। যখন আল্লাহ তা‘আলা সত্য প্রদানের মাধ্যমে এ পরিকল্পনা অস্বীকার করলেন তখন সে ক্রুদ্ধ ও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং আপনার সঙ্গে যে ব্যবহার করেছে যা আপনি দেখেছেন। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে ক্ষমা করে দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং তাঁর সহাবীগণ (রাঃ) মুশরিক এবং কিতাবীদেরকে ক্ষমা করে দিতেন এবং তাদের জ্বালাতনে ধৈর্য ধারণ করতেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, “আর অবশ্যই তোমরা শুনতে পাবে পূর্ববর্তী আহ্লে কিতাবের এবং মুশরিকদের নিকট হতে অনেক কষ্টদায়ক কথা” (সূরাহ আল ইমরান ৩/১৮৬)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেছেন, “কিতাবীদের কাছে সত্য প্রকাশিত হওয়ার পরও তাদের অনেকেই ঈর্ষা বশতঃ তোমাদের ঈমান আনার পর আবার তোমাদের কাফিররূপে ফিরে পাওয়ার আকাক্সক্ষা করে। যতক্ষণ না আল্লাহ্র কোন নির্দেশ আসে ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ক্ষমা কর ও উপেক্ষা কর। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১০৯)।
আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ মোতাবেক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ক্ষমার দিকেই ফিরে যেতেন। শেষ পর্যন্ত তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা অনুমতি দিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন বাদ্রের যুদ্ধ চালিয়ে গেলেন এবং তাঁর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা কাফির কুরায়শ নেতাদেরকে হত্যা করলেন তখন ইবনু উবাই ইবনু সালূল তার সঙ্গী মুশরিক এবং প্রতীমা পূজারীরা বলল, এটাতো এমন একটি ব্যাপার যা বিজয় লাভ করেছে। এরপর তারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে ইসলামের বাই‘আত করে প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহণ করল। [২৯৮৭] (আ.প্র. ৪২০৫, ই.ফা. ৪২০৭)
سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رِجَالًا مِنَ الْمُنَافِقِيْنَ عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْغَزْوِ تَخَلَّفُوْا عَنْهُ وَفَرِحُوْا بِمَقْعَدِهِمْ خِلَافَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم اعْتَذَرُوْا إِلَيْهِ وَحَلَفُوْا وَأَحَبُّوْا أَنْ يُحْمَدُوْا بِمَا لَمْ يَفْعَلُوْا فَنَزَلَتْ : {لَا يَحْسِبَنَّ الَّذِيْنَ يَفْرَحُوْنَ بِمَآ أَتَوْا وَّيُحِبُّوْنَ أَنْ يُّحْمَدُوْا بِمَا لَمْ يَفْعَلُوْا}الآيَةَ.
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে তিনি যখন যুদ্ধে বের হতেন তখন কিছু সংখ্যক মুনাফিক ঘরে বসে থাকত এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বেরিয়ে যাওয়ার পর বসে থাকতে পারায় আনন্দ প্রকাশ করত। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফিরে আসলে তাঁর কাছে শপথ করে ওজর পেশ করত এবং যে কাজ করেনি সে কাজের জন্য প্রশংসিত হতে পছন্দ করত। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল ঃ لاَيَحْسِبَنَّالَّذِينَيَفْرَحُونَ ...... “তুমি কখনও মনে কর না যে, যারা নিজেদের কৃতকর্মের জন্য আনন্দিত হয় এবং নিজেরা যা করেনি তার জন্য প্রশংসিত হতে ভালবাসে, তারা আযাব থেকে পরিত্রাণ পাবে। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (সূরাহ আলু ইমরান ৩/১৮৮)। [মুসলিম ৫০/হাঃ ২৭৭৭] (আ.প্র. ৪২০৬, ই.ফা. ৪২০৮)
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ أَنَّ عَلْقَمَةَ بْنَ وَقَّاصٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ مَرْوَانَ قَالَ لِبَوَّابِهِ اذْهَبْ يَا رَافِعُ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَقُلْ لَئِنْ كَانَ كُلُّ امْرِئٍ فَرِحَ بِمَا أُوْتِيَ وَأَحَبَّ أَنْ يُحْمَدَ بِمَا لَمْ يَفْعَلْ مُعَذَّبًا لَنُعَذَّبَنَّ أَجْمَعُوْنَ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ وَمَا لَكُمْ وَلِهَذِهِ إِنَّمَا دَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَهُوْدَ فَسَأَلَهُمْ عَنْ شَيْءٍ فَكَتَمُوْهُ إِيَّاهُ وَأَخْبَرُوْهُ بِغَيْرِهِ فَأَرَوْهُ أَنْ قَدْ اسْتَحْمَدُوْا إِلَيْهِ بِمَا أَخْبَرُوْهُ عَنْهُ فِيْمَا سَأَلَهُمْ وَفَرِحُوْا بِمَا أُوْتُوْا مِنْ كِتْمَانِهِمْ ثُمَّ قَرَأَ ابْنُ عَبَّاسٍ : {وَإِذْ أَخَذَ اللهُ مِيْثَاقَ الَّذِيْنَ أُوْتُوا الْكِتَابَ} كَذَلِكَ حَتَّى قَوْلِهِ : {يَفْرَحُوْنَ بِمَآ أَتَوْا وَّيُحِبُّوْنَ أَنْ يُّحْمَدُوْا بِمَا لَمْ يَفْعَلُوْا} تَابَعَهُ عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ ح
حَدَّثَنَا ابْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا الْحَجَّاجُ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ مَرْوَانَ بِهَذَا.
‘আলক্বামাহ ইবনু ওয়াক্কাস থেকে বর্ণিতঃ
মারওয়ান (রহ.) তাঁর দারোয়ানকে বললেন, হে নাফি‘! তুমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে বল, যদি প্রাপ্ত বস্তুতে আনন্দিত এবং করেনি এমন কাজ সম্পর্কে প্রশংসিত হতে আশাবাদী প্রত্যেক ব্যক্তিরই শাস্তি প্রাপ্য হয় তাহলে সকল মানুষই শাস্তিপ্রাপ্ত হবে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, এটা তোমাদের মাথা ঘামানোর বিষয় নয়। একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইয়াহূদীদেরকে ডেকে একটা বিষয় জিজ্ঞেস করেছিলেন, তাতে তারা সত্য গোপন করে বিপরীত তথ্য দিয়েছিল। এতদসত্ত্বেও তারা তাদের দেয়া উত্তরের বিনিময়ে প্রশংসা অর্জনের আশা করেছিল এবং তাদের সত্য গোপনের জন্যে আনন্দিত হয়েছিল। তারপর ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) পাঠ করলেন- يَفْرَحُونَبِمَاأَتَوْاوَيُحِبُّونَأَنْيُحْمَدُوابِمَالَمْيَفْعَلُوا ....... وَإِذْأَخَذَاللهُمِيثَاقَالَّذِينَأُوتُواالْكِتَابَ “স্মরণ কর, যখন আল্লাহ্ প্রতিশ্র“তি নিয়েছিলেন আহলে কিতাবের, তোমরা মানুষের কাছে কিতাব স্পষ্টভাবে প্রকাশ করবে এবং তা গোপন করবে না। কিন্তু তারা সে প্রতিশ্র“তি নিজেদের পেছনে ফেলে রাখল এবং তার পরিবর্তে নগণ্য বিনিময় গ্রহণ করল। সুতরাং তারা যা বিনিময় গ্রহণ করল কত নিকৃষ্ট তা! তুমি কখনও মনে কর না যে, যারা নিজেদের কৃতকর্মের জন্য আনন্দিত হয় এবং নিজেরা যা করেনি তার জন্য প্রশংসিত হতে ভালবাসে, তারা আযাব থেকে পরিত্রাণ পাবে। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (সূরাহ আলু ইমরান ৩/১৮৭-১৮৮)। বর্ণনাকারী ‘আবদুর রায্যাক (রহ.) ইবনু জুরাইজ (রহ.) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (আ.প্র. ৪২০৭, ই.ফা. ৪২০৯)
ইবনু মুকাতিল (রহ.) ........... হুমায়দ ইবনু ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) অবহিত করেছেন যে, মারওয়ান এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। [মুসলিম ৫০/হাঃ ২৭৭৮, আহমাদ ২৭১২] (আ.প্র. নাই, ই.ফা. ৪২১০)
سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ شَرِيْكُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ نَمِرٍ عَنْ كُرَيْبٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ بِتُّ عِنْدَ خَالَتِيْ مَيْمُوْنَةَ فَتَحَدَّثَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَعَ أَهْلِهِ سَاعَةً ثُمَّ رَقَدَ فَلَمَّا كَانَ ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ قَعَدَ فَنَظَرَ إِلَى السَّمَاءِ فَقَالَ : {إِنَّ فِيْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَاٰيَاتٍ لِأُوْلِي الْأَلْبَابِ} ثُمَّ قَامَ فَتَوَضَّأَ وَاسْتَنَّ فَصَلَّى إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ أَذَّنَ بِلَالٌ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى الصُّبْحَ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি আমার খালা মাইমূনাহ (রাঃ)-এর কাছে রাত কাটিয়েছিলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর পরিবারবর্গের সঙ্গে কিছুক্ষণ আলাপ-আলোচনা করে শুয়ে পড়লেন। তারপর রাত্রির শেষ তৃতীয়াংশে তিনি উঠলেন এবং আসমানের দিকে তাকিয়ে পাঠ করলেন- إِنَّفِيخَلْقِالسَّمَوَاتِوَالأَرْضِوَاخْتِلاَفِاللَّيْلِوَالنَّهَارِلَآيَاتٍلِأُولِيالأَلْبَابِ। এরপর দাঁড়ালেন এবং উযূ করে মিসওয়াক করে এগার রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। এরপর বিলাল (রাঃ) আযান দিলে তিনি দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। তারপর বের হলেন এবং ফাজ্রের সলাত আদায় করলেন। [১১৭] (আ.প্র. ৪২০৮, ই.ফা. ৪২১১)
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ عَنْ كُرَيْبٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ بِتُّ عِنْدَ خَالَتِيْ مَيْمُوْنَةَ فَقُلْتُ لَأَنْظُرَنَّ إِلَى صَلَاةِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَطُرِحَتْ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وِسَادَةٌ فَنَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ طُوْلِهَا فَجَعَلَ يَمْسَحُ النَّوْمَ عَنْ وَجْهِهِ ثُمَّ قَرَأَ الْآيَاتِ الْعَشْرَ الْأَوَاخِرَ مِنْ آلِ عِمْرَانَ حَتَّى خَتَمَ ثُمَّ أَتَى شَنًّا مُعَلَّقًا فَأَخَذَهُ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ قَامَ يُصَلِّيْ فَقُمْتُ فَصَنَعْتُ مِثْلَ مَا صَنَعَ ثُمَّ جِئْتُ فَقُمْتُ إِلَى جَنْبِهِ فَوَضَعَ يَدَهُ عَلَى رَأْسِيْ ثُمَّ أَخَذَ بِأُذُنِيْ فَجَعَلَ يَفْتِلُهَا ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَوْتَرَ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার খালা মাইমূনাহ (রাঃ)-এর নিকট রাত কাটিয়েছিলাম। আমি স্থির করলাম যে, অবশ্যই আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সলাত আদায় করা দেখব। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জন্য একটি বিছানা বিছানো হল। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেটার লম্বালম্বি দিকে ঘুমালেন। এরপর জাগ্রত হয়ে মুখমণ্ডল থেকে ঘুমের প্রভাব মুছতে লাগলেন এবং সূরাহ আলু ‘ইমরানের শেষ দশ আয়াত পাঠ করে শেষ করলেন। তারপর ঝুলন্ত একটি পুরাতন মশকের পানিপাত্রের নিকটে এসে তা ধরলেন এবং উযূ করে সলাতে দাঁড়ালেন, আমি দাঁড়িয়ে তিনি যা যা করছিলেন তা তা করলাম। তারপর আমি এসে তাঁর পার্শ্বে দাঁড়ালাম। তিনি আমার মাথায় হাত রাখলেন, তারপর আমার কানে ধরে মলতে লাগলেন। তারপর দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত সলাত আদায় করলেন এবং তারপর বিতরের সলাত আদায় করলেন। [১১৭] (আ.প্র. ৪২০৯, ই.ফা. ৪২১২)
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مَعْنُ بْنُ عِيْسَى حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ عَنْ كُرَيْبٍ مَوْلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ بَاتَ عِنْدَ مَيْمُوْنَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهْيَ خَالَتُهُ قَالَ فَاضْطَجَعْتُ فِيْ عَرْضِ الْوِسَادَةِ وَاضْطَجَعَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَهْلُهُ فِيْ طُوْلِهَا فَنَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى انْتَصَفَ اللَّيْلُ أَوْ قَبْلَهُ بِقَلِيْلٍ أَوْ بَعْدَهُ بِقَلِيْلٍ ثُمَّ اسْتَيْقَظَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ يَمْسَحُ النَّوْمَ عَنْ وَجْهِهِ بِيَدَيْهِ ثُمَّ قَرَأَ الْعَشْرَ الْآيَاتِ الْخَوَاتِمَ مِنْ سُوْرَةِ آلِ عِمْرَانَ ثُمَّ قَامَ إِلَى شَنٍّ مُعَلَّقَةٍ فَتَوَضَّأَ مِنْهَا فَأَحْسَنَ وُضُوْءَهُ ثُمَّ قَامَ يُصَلِّيْ فَصَنَعْتُ مِثْلَ مَا صَنَعَ ثُمَّ ذَهَبْتُ فَقُمْتُ إِلَى جَنْبِهِ فَوَضَعَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى رَأْسِيْ وَأَخَذَ بِأُذُنِيْ بِيَدِهِ الْيُمْنَى يَفْتِلُهَا فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَوْتَرَ ثُمَّ اضْطَجَعَ حَتَّى جَاءَهُ الْمُؤَذِّنُ فَقَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيْفَتَيْنِ ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى الصُّبْحَ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, তিনি মাইমূনাহ (রাঃ)-এর নিকট রাত্রি যাপন করেন, তিনি হলেন তাঁর খালা। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি বিছানায় আড়াআড়িভাবে শুয়েছিলাম আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং তাঁর পরিবারবর্গ লম্বালম্বির দিকে শুয়েছিলাম। অর্ধরাত্রি কিংবা এর সামান্য পূর্ব অথবা সামান্য পর পর্যন্ত রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘুমালেন। তারপর তিনি জাগ্রত হলেন। এরপর দু’হাত দিয়ে মুখ থেকে ঘুমের রেশ মুছতে লাগলেন। তারপর সূরাহ আলু ‘ইমরানের শেষ দশ আয়াত পাঠ করলেন। তারপর ঝুলন্ত একটি পুরাতন মশকের কাছে গেলেন এবং সুন্দরভাবে ‘উযু করলেন। এরপর সলাতে দণ্ডায়মান হলেন। তিনি যা যা করেছিলেন আমিও ঠিক তা করলাম। তারপর গিয়ে তাঁর পার্শ্বে দাঁড়ালাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর ডান হাত আমার মাথায় রেখে আমার ডান কান ধরে মলতে লাগলেন। এরপর তিনি দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত তারপর দু’রাক‘আত সলাত আদায় করলেন এবং তারপর বিতরের সলাত আদায় করলেন। তারপর তিনি একটু শুয়ে পড়লেন। অবশেষে মুয়াযযিন আসল, তিনি হালকাভাবে দু’রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। অতঃপর বের হলেন এবং ফাজ্রের সলাত আদায় করলেন। [১১৭] (আ.প্র. ৪২১০, ই.ফা. ৪২১৩)
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ عَنْ مَالِكٍ عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ عَنْ كُرَيْبٍ مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ أَنَّهُ بَاتَ عِنْدَ مَيْمُوْنَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهْيَ خَالَتُهُ قَالَ فَاضْطَجَعْتُ فِيْ عَرْضِ الْوِسَادَةِ وَاضْطَجَعَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَهْلُهُ فِيْ طُوْلِهَا فَنَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى إِذَا انْتَصَفَ اللَّيْلُ أَوْ قَبْلَهُ بِقَلِيْلٍ أَوْ بَعْدَهُ بِقَلِيْلٍ اسْتَيْقَظَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَجَلَسَ يَمْسَحُ النَّوْمَ عَنْ وَجْهِهِ بِيَدِهِ ثُمَّ قَرَأَ الْعَشْرَ الْآيَاتِ الْخَوَاتِمَ مِنْ سُوْرَةِ آلِ عِمْرَانَ ثُمَّ قَامَ إِلَى شَنٍّ مُعَلَّقَةٍ فَتَوَضَّأَ مِنْهَا فَأَحْسَنَ وُضُوْءَهُ ثُمَّ قَامَ يُصَلِّيْ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَقُمْتُ فَصَنَعْتُ مِثْلَ مَا صَنَعَ ثُمَّ ذَهَبْتُ فَقُمْتُ إِلَى جَنْبِهِ فَوَضَعَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى رَأْسِيْ وَأَخَذَ بِأُذُنِي الْيُمْنَى يَفْتِلُهَا فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَوْتَرَ ثُمَّ اضْطَجَعَ حَتَّى جَاءَهُ الْمُؤَذِّنُ فَقَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيْفَتَيْنِ ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى الصُّبْحَ.
কুরায়ব (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তাকে অবহিত করেছেন যে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সহধর্মিণী মাইমূনাহ (রাঃ)-এর নিকট রাত্রি যাপন করেছিলেন। মাইমূনাহ (রাঃ) হলেন তাঁর খালা। তিনি বলেন, আমি বিছানায় আড়াআড়ি শুয়ে পড়লাম এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তাঁর পরিবার লম্বা দিকে শয়ন করলেন। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিদ্রামগ্ন হলেন। অর্ধরাত্রি কিংবা এর সামান্য আগে কিংবা সামান্য পরক্ষণে তিনি ঘুম থেকে জেগে উঠলেন এবং মুখ থেকে ঘুমের ভাব মুছতে মুছতে বসলেন। তারপর সূরা আলু ‘ইমরানের শেষ দশ আয়াত পাঠ করলেন। তারপর ঝুলন্ত একটি পুরাতন মশকের নিকট গিয়ে তাত্থেকে উত্তমরূপে উযূ করলেন। এরপর সলাতে দণ্ডায়মান হলেন। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমিও দাঁড়ালাম এবং তিনি যা করেছেন আমিও তা করলাম। তারপর আমি গিয়ে তাঁর পার্শ্বে দাঁড়ালাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর ডান হাত আমার মাথায় রেখে আমার ডান কান মলতে শুরু করলেন। তারপর তিনি দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর তিনি বিতরের সলাত আদায় করলেন। অতঃপর তিনি শুয়ে পড়লেন। শেষে মুয়াযযিন ফাজ্রের আযান দিলে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্তভাবে দু’রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। তারপর বের হলেন এবং ফাজ্রের সলাত আদায় করলেন। [১১৭] (আ.প্র. ৪২১১, ই.ফা. ৪২১৪)
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ رَجُلًا كَانَتْ لَهُ يَتِيْمَةٌ فَنَكَحَهَا وَكَانَ لَهَا عَذْقٌ وَكَانَ يُمْسِكُهَا عَلَيْهِ وَلَمْ يَكُنْ لَهَا مِنْ نَفْسِهِ شَيْءٌ فَنَزَلَتْ فِيْهِ : {وَإِنْ خِفْتُمْ أَنْ لَّا تُقْسِطُوْا فِي الْيَتَامٰى} أَحْسِبُهُ قَالَ كَانَتْ شَرِيْكَتَهُ فِيْ ذَلِكَ الْعَذْقِ وَفِيْ مَالِهِ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে একজন ইয়াতীম বালিকা ছিল। অতঃপর সে তাকে বিয়ে করল। সে বালিকার একটি বাগান ছিল। তার অন্তরে ঐ বালিকার প্রতি কোন আকর্ষণ না থাকা সত্ত্বেও বাগানের কারণে সে ঐ বালিকাটিকে বিবাহ করে রেখে দিতে চায়। এ সম্পর্কে আয়াত অবতীর্ণ হয় আর যদি আশঙ্কা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না। আমার ধারণা যে, ‘উরওয়াহ বলেন, ইয়াতীম বালিকাটি সে বাগান ও মালের অংশীদার ছিল। [২৪৯৪] (আ.প্র. ৪২১২, ই.ফা. ৪২১৫)
عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ عَنْ قَوْلِ اللهِ تَعَالَى : {وَإِنْ خِفْتُمْ أَنْ لَّا تُقْسِطُوْا فِي الْيَتَامٰى} فَقَالَتْ يَا ابْنَ أُخْتِيْ هَذِهِ الْيَتِيْمَةُ تَكُوْنُ فِيْ حَجْرِ وَلِيِّهَا تَشْرَكُهُ فِيْ مَالِهِ وَيُعْجِبُهُ مَالُهَا وَجَمَالُهَا فَيُرِيْدُ وَلِيُّهَا أَنْ يَتَزَوَّجَهَا بِغَيْرِ أَنْ يُقْسِطَ فِيْ صَدَاقِهَا فَيُعْطِيَهَا مِثْلَ مَا يُعْطِيْهَا غَيْرُهُ فَنُهُوْا عَنْ أَنْ يَنْكِحُوْهُنَّ إِلَّا أَنْ يُقْسِطُوْا لَهُنَّ وَيَبْلُغُوْا لَهُنَّ أَعْلَى سُنَّتِهِنَّ فِي الصَّدَاقِ فَأُمِرُوْا أَنْ يَنْكِحُوْا مَا طَابَ لَهُمْ مِنْ النِّسَاءِ سِوَاهُنَّ قَالَ عُرْوَةُ قَالَتْ عَائِشَةُ وَإِنَّ النَّاسَ اسْتَفْتَوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ هَذِهِ الْآيَةِ فَأَنْزَلَ اللهُ : {وَيَسْتَفْتُوْنَكَ فِي النِّسَآءِ} قَالَتْ عَائِشَةُ : وَقَوْلُ اللهِ تَعَالَى فِيْ آيَةٍ أُخْرَى : {وَتَرْغَبُوْنَ أَنْ تَنْكِحُوْهُنَّ} رَغْبَةُ أَحَدِكُمْ عَنْ يَتِيْمَتِهِ حِيْنَ تَكُوْنُ قَلِيْلَةَ الْمَالِ وَالْجَمَالِ قَالَتْ فَنُهُوْا أَنْ يَنْكِحُوْا عَنْ مَنْ رَغِبُوْا فِيْ مَالِهِ وَجَمَالِهِ فِيْ يَتَامَى النِّسَاءِ إِلَّا بِالْقِسْطِ مِنْ أَجْلِ رَغْبَتِهِمْ عَنْهُنَّ إِذَا كُنَّ قَلِيْلَاتِ الْمَالِ وَالْجَمَالِ.
‘উরওয়াহ ইবনু যুবায়র (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। তিনি ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন মহান আল্লাহ্র বাণী وَإِنْخِفْتُمْأَنْلاَتُقْسِطُوافِيالْيَتَامَى সম্পর্কে। তিনি উত্তরে বললেন, হে ভাগ্নে! সে হচ্ছে পিতৃহীনা বালিকা, অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে থাকে এবং তার সম্পত্তিতে অংশীদার হয় এবং তার রূপ ও সম্পদ তাকে (অভিভাবককে) আকৃষ্ট করে। এরপর সেই অভিভাবক উপযুক্ত মোহর না দিয়ে তাকে বিবাহ করতে চায়। তদুপরি অন্য ব্যক্তি যে পরিমাণ মোহর দেয় তা না দিয়ে এবং তার প্রতি ন্যায়বিচার না করে তাকে বিয়ে করতে চায়। এরপর তাদের পারিবারিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ মোহর এবং ন্যায় ও সমুচিত মোহর প্রদান ব্যতীত তাদের বিয়ে করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং তদ্ব্যতীত যে সকল মহিলা পছন্দ হয় তাদেরকে বিয়ে করতে অনুমতি দেয়া হয়েছে। ‘উরওয়া (রহ.) বলেন যে, ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেছেন, এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর লোকেরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে মহিলাদের ব্যাপারে জানতে চাইলে আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন وَيَسْتَفْتُونَكَفِيالنِّسَاءِ “এবং লোকেরা আপনার কাছে নারীদের বিষয়ে জানতে চান......”। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র বাণী অন্য এক আয়াতেতোমরা তাদেরকে বিয়ে করতে আগ্রহ প্রকাশ কর। ইয়াতীম বালিকার ধন-সম্পদ কম হলে এবং সুন্দরী না হলে তাকে বিবাহ করতে আগ্রহ প্রকাশ করো না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তাই ইয়াতীম বালিকাদের মাল ও সৌন্দর্যের আকর্ষণে বিবাহ করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে ন্যায়বিচার করলে ভিন্ন কথা। কেননা তারা সম্পদের অধিকারী না হলে এবং সুন্দরী না হলে তাদেরকেও বিবাহ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। [২৪৯৪] (আ.প্র. ৪২১৩, ই.ফা. ৪২১৬)
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ نُمَيْرٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا فِيْ قَوْلِهِ تَعَالَى {وَمَنْ كَانَ غَنِيًّا فَلْيَسْتَعْفِفْ وَمَنْ كَانَ فَقِيْرًا فَلْيَأْكُلْ بِالْمَعْرُوْفِ} أَنَّهَا نَزَلَتْ فِيْ وَالِي الْيَتِيْمِ إِذَا كَانَ فَقِيْرًا أَنَّهُ يَأْكُلُ مِنْهُ مَكَانَ قِيَامِهِ عَلَيْهِ بِمَعْرُوْفٍ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্র বাণী وَمَنْكَانَغَنِيًّافَلْيَسْتَعْفِفْوَمَنْكَانَفَقِيرًافَلْيَأْكُلْبِالْمَعْرُوفِ সম্পদশালী গ্রহণ করবে না অবতীর্ণ হয়েছে ইয়াতীমের সম্পদ উপলক্ষে, যদি তত্ত্বাবধায়ক দরিদ্র হয় তাহলে তত্ত্বাবধানের বিনিময়ে ন্যায্য পরিমাণে তা থেকে ভোগ করবে। [২২১২] (আ.প্র. ৪২১৪, ই.ফা. ৪২১৭)
أَحْمَدُ بْنُ حُمَيْدٍ أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللهِ الْأَشْجَعِيُّ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ الشَّيْبَانِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا {وَإِذَا حَضَرَ الْقِسْمَةَ أُولُو الْقُرْبٰى وَالْيَتَامٰى وَالْمَسَاكِيْنُ} قَالَ هِيَ مُحْكَمَةٌ وَلَيْسَتْ بِمَنْسُوْخَةٍ تَابَعَهُ سَعِيْدٌ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আয়াতটি সুস্পষ্ট, মানসুখ নয়। সা‘ঈদ (রাঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে ইকরামাহ (রাঃ)-এর অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ্র বাণী ঃ وَإِذَاحَضَرَالْقِسْمَةَأُولُوالْقُرْبَىوَالْيَتَامَىوَالْمَسَاكِينُ “আর যদি সম্পত্তি বণ্টনকালে আত্মীয়, ইয়াতীম ও মিসকীন উপস্থিত হয়”। (সূরাহ আন্-নিসা ৪/১১)। [২৭৫৯] (আ.প্র. ৪২১৫, ই.ফা. ৪২১৮)
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ وَرْقَاءَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ الْمَالُ لِلْوَلَدِ وَكَانَتْ الْوَصِيَّةُ لِلْوَالِدَيْنِ فَنَسَخَ اللهُ مِنْ ذَلِكَ مَا أَحَبَّ فَجَعَلَ لِلذَّكَرِ مِثْلَ حَظِّ الْأُنْثَيَيْنِ وَجَعَلَ لِلْأَبَوَيْنِ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا السُّدُسَ وَالثُّلُثَ وَجَعَلَ لِلْمَرْأَةِ الثُّمُنَ وَالرُّبُعَ وَللزَّوْجِ الشَّطْرَ وَالرُّبُعَ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মৃত ব্যক্তির সম্পদ লাভ করত সন্তানরা, আর ওয়াসীয়াত ছিল পিতামাতার জন্য। অতঃপর তাত্থেকে আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় পছন্দ অনুযায়ী কিছু রহিত করলেন এবং পুরুষদের জন্য মহিলার দ্বিগুণ নির্দিষ্ট করলেন। পিতামাতা প্রত্যেকের জন্য ষষ্ঠাংশ ও তৃতীয়াংশ নির্ধারণ করলেন, স্ত্রীদের জন্য অষ্টমাংশ ও চতুর্থাংশ নির্ধারণ করলেন এবং স্বামীর জন্য অর্ধাংশ ও চতুর্থাংশ নির্ধারণ করলেন। [২৭৪৭] (আ.প্র. ৪২১৭, ই.ফা. ৪২২০)
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ حَدَّثَنَا أَسْبَاطُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا الشَّيْبَانِيُّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ الشَّيْبَانِيُّ وَذَكَرَهُ أَبُو الْحَسَنِ السُّوَائِيُّ وَلَا أَظُنُّهُ ذَكَرَهُ إِلَّا عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ {لَا يَحِلُّ لَكُمْ أَنْ تَرِثُوا النِّسَآءَ كَرْهًا ط وَلَا تَعْضُلُوْهُنَّ لِتَذْهَبُوْا بِبَعْضِ مَآ اٰتَيْتُمُوْهُنَّ} قَالَ كَانُوْا إِذَا مَاتَ الرَّجُلُ كَانَ أَوْلِيَاؤُهُ أَحَقَّ بِامْرَأَتِهِ إِنْ شَاءَ بَعْضُهُمْ تَزَوَّجَهَا وَإِنْ شَاءُوْا زَوَّجُوْهَا وَإِنْ شَاءُوْا لَمْ يُزَوِّجُوْهَا فَهُمْ أَحَقُّ بِهَا مِنْ أَهْلِهَا فَنَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ فِيْ ذَلِكَ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, يَاأَيُّهَاالَّذِينَآمَنُوالاَيَحِلُّلَكُمْأَنْتَرِثُواالنِّسَاءَكَرْهًاوَلاَتَعْضُلُوهُنَّلِتَذْهَبُوابِبَعْضِمَاآتَيْتُمُوهُنَّ ইসলামের প্রথম যুগে অবস্থা এমন ছিল যে, কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার অভিভাবকগণ তার স্ত্রীর মালিক হয়ে বসত। তারা ইচ্ছা করলে নিজেরা ঐ মহিলাকে বিয়ে করত। ইচ্ছা করলে অন্যের কাছে দিত। কিংবা তাকে মৃত্যু পর্যন্ত আটকে রাখত। কারও কাছে বিয়ে দিত না। মহিলার পরিবারের চেয়ে এরা অধিক হকদার হয়ে বসত। এরপর এ আয়াত অবতীর্ণ হল। [৬৯৪৮] (আ.প্র. ৪২১৮, ই.ফা. ৪২২১)
الصَّلْتُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ إِدْرِيْسَ عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا {وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ} قَالَ وَرَثَةً {وَالَّذِيْنَ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ} كَانَ الْمُهَاجِرُوْنَ لَمَّا قَدِمُوا الْمَدِيْنَةَ يَرِثُ الْمُهَاجِرِيُّ الْأَنْصَارِيَّ دُوْنَ ذَوِيْ رَحِمِهِ لِلْأُخُوَّةِ الَّتِيْ آخَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُمْ فَلَمَّا نَزَلَتْ : {وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ} نُسِخَتْ ثُمَّ قَالَ : {وَالَّذِيْنَ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ}مِنْ النَّصْرِ وَالرِّفَادَةِ وَالنَّصِيْحَةِ وَقَدْ ذَهَبَ الْمِيْرَاثُ وَيُوْصَي لَهُ سَمِعَ أَبُوْ أُسَامَةَ إِدْرِيْسَ وَسَمِعَ إِدْرِيْسُ طَلْحَةَ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, وَلِكُلٍّجَعَلْنَامَوَالِيَ হচ্ছে বংশীয় উত্তরাধিকারী, وَالَّذِينَعَاقَدَتْأَيْمَانُكُمْ হচ্ছে মুহাজিরগণ যখন মদিনায় এসেছিলেন তখন তারা আনসারদের উত্তরাধিকারী হতেন। আত্মীয়তার জন্য নয় বরং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কর্তৃক তাঁদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব স্থাপনের কারণে। যখন وَلِكُلٍّجَعَلْنَامَوَالِيَ অবতীর্ণ হল, তখন এ হুকুম রহিত হয়ে গেল। তারপর বললেন, যাদের সঙ্গে তোমরা চুক্তি করে থাক সাহায্য-সহযোগিতা ও পরস্পরের উপকার করার। আগের উত্তরাধিকার ব্যবস্থা রহিত হল এবং এদের জন্য ওয়াসীয়াত বৈধ করা হল।
হাদীসটি আবূ উসামাহ ইদরীসের কাছে থেকে এবং ইদরীস ত্বলহার নিকট হতে শুনেছেন। [২২৯২] (আ.প্র. ৪২১৯, ই.ফা. ৪২২২)
صَدَقَةُ أَخْبَرَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَبِيْدَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ يَحْيَى بَعْضُ الْحَدِيْثِ عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ قَالَ قَالَ لِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اقْرَأْ عَلَيَّ قُلْتُ آقْرَأُ عَلَيْكَ وَعَلَيْكَ أُنْزِلَ قَالَ فَإِنِّيْ أُحِبُّ أَنْ أَسْمَعَهُ مِنْ غَيْرِيْ فَقَرَأْتُ عَلَيْهِ سُوْرَةَ النِّسَاءِ حَتَّى بَلَغْتُ {فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍم بِشَهِيْدٍ وَّجِئْنَا بِكَ عَلٰى هٰٓؤُلَآءِ شَهِيْدًا} قَالَ : أَمْسِكْ فَإِذَا عَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ.
‘আম্র ইবনু মুররা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে বললেন, আমার কাছে কুরআন পাঠ কর। আমি বললাম, আমি আপনার কাছে পাঠ করব? অথচ আপনার কাছেই তা অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বললেন, অন্যের মুখ থেকে শুনতে আমি পছন্দ করি। এরপর আমি তাঁর নিকট সূরাহ ‘নিসা’ পাঠ করলাম, যখন আমি فَكَيْفَإِذَاجِئْنَامِنْكُلِّأُمَّةٍبِشَهِيدٍوَجِئْنَابِكَعَلَىهَؤُلَاءِشَهِيدً পর্যন্ত পাঠ করলাম, তিনি বললেন, থাম, থাম, তখন তাঁর দু’চোখ হতে টপ টপ করে অশ্র“ ঝরছিল। [৫০৪৯, ৫০৫০, ৫০৫৫, ৫০৫৬] (আ.প্র. ৪২২১, ই.ফা. ৪২২৪)
مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ هَلَكَتْ قِلَادَةٌ لِأَسْمَاءَ فَبَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ طَلَبِهَا رِجَالًا فَحَضَرَتْ الصَّلَاةُ وَلَيْسُوْا عَلَى وُضُوْءٍ وَلَمْ يَجِدُوْا مَاءً فَصَلَّوْا وَهُمْ عَلَى غَيْرِ وُضُوْءٍ فَأَنْزَلَ اللهُ يَعْنِيْ آيَةَ التَّيَمُّمِ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার কাছ থেকে আসমা (রাঃ)-এর একটি হার হারিয়ে গিয়েছিল। সেটা খোঁজার জন্য রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কয়েকজন লোক পাঠিয়েছিলেন। তখন সলাতের সময় হল, তাদের কাছে পানি ছিল না। তারা উযূর অবস্থায় ছিলেন না আবার পানিও পেলেন না। এরপর বিনা অযুতে সলাত আদায় করে ফেললেন। তখন আল্লাহ তা‘আলা তায়াম্মুমের নিয়মবিধি অবতীর্ণ করলেন। [৩৩৪] (আ.প্র. ৪২২২, ই.ফা. ৪২২৫)
صَدَقَةُ بْنُ الْفَضْلِ أَخْبَرَنَا حَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ يَعْلَى بْنِ مُسْلِمٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا {أَطِيْعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ} قَالَ نَزَلَتْ فِيْ عَبْدِ اللهِ بْنِ حُذَافَةَ بْنِ قَيْسِ بْنِ عَدِيٍّ إِذْ بَعَثَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ سَرِيَّةٍ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, أَطِيعُوااللهَوَأَطِيعُواالرَّسُولَوَأُولِيالأَمْرِمِنْكُمْ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে ‘আবদুল্লাহ ইবনু হুযাফাহ ইবনু ক্বায়স ইবনু আদী সম্পর্কে যখন তাঁকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি সৈন্য দলের দলনায়ক করে প্রেরণ করেছিলেন। [মুসলিম ৩৩/৮, হাঃ ১৮৩৪] (আ.প্র. ৪২২৩, ই.ফা. ৪২২৬)
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ قَالَ خَاصَمَ الزُّبَيْرُ رَجُلًا مِنْ الْأَنْصَارِ فِيْ شَرِيْجٍ مِنْ الْحَرَّةِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اسْقِ يَا زُبَيْرُ ثُمَّ أَرْسِلْ الْمَاءَ إِلَى جَارِكَ فَقَالَ الْأَنْصَارِيُّ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَنْ كَانَ ابْنَ عَمَّتِكَ فَتَلَوَّنَ وَجْهُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَالَ اسْقِ يَا زُبَيْرُ ثُمَّ احْبِسْ الْمَاءَ حَتَّى يَرْجِعَ إِلَى الْجَدْرِ ثُمَّ أَرْسِلْ الْمَاءَ إِلَى جَارِكَ وَاسْتَوْعَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِلزُّبَيْرِ حَقَّهُ فِيْ صَرِيْحِ الْحُكْمِ حِيْنَ أَحْفَظَهُ الْأَنْصَارِيُّ كَانَ أَشَارَ عَلَيْهِمَا بِأَمْرٍ لَهُمَا فِيْهِ سَعَةٌ قَالَ الزُّبَيْرُ فَمَا أَحْسِبُ هَذِهِ الْآيَاتِ إِلَّا نَزَلَتْ فِيْ ذَلِكَ {فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُوْنَ حَتّٰى يُحَكِّمُوْكَ فِيْمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ}.
‘উরওয়াহ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, হাররা বা মাদীনাহর কঙ্করময় ভূমিতে একটি পানির নালাকে কেন্দ্র করে একজন আনসার যুবায়র (রাঃ)-এর সাথে ঝগড়া করেছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে যুবায়র! প্রথমত তুমি তোমার জমিতে পানি দাও, তারপর তুমি প্রতিবেশীর জমিতে পানি ছেড়ে দেবে। আনসারী বললেন, হে আল্লাহ্ররসূল! সে আপনার ফুফাত ভাই, তাই এই ফয়সালা। এতে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর চেহারা রক্তিম হয়ে গেল। তারপর তিনি বললেন, হে যুবায়র! তুমি তোমার জমিতে পানি দাও। তারপর সেচ নালা ভর্তি করে পানি রাখো, অতঃপর তোমার প্রতিবেশিকে পানি দাও।
আনসারী যখন রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে রাগানি¦ত করলেন তখন তিনি তার হক পুরোপুরি যুবায়র (রাঃ)-কে প্রদানের জন্য স্পষ্ট নির্দেশ দিলেন। তাদেরকে প্রথমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এমন একটি নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে প্রশস্ততা ছিল।
যুবায়র (রাঃ) বলেন, فَلاَوَرَبِّكَلاَيُؤْمِنُونَحَتَّىيُحَكِّمُوكَفِيمَاشَجَرَبَيْنَهُمْ আয়াতটি এ উপলক্ষে অবতীর্ণ হয়েছে বলে আমি মনে করি। [২৩৬০] (আ.প্র. ৪২২৪, ই.ফা. ৪২২৭)
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ حَوْشَبٍ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ مَا مِنْ نَبِيٍّ يَمْرَضُ إِلَّا خُيِّرَ بَيْنَ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَكَانَ فِيْ شَكْوَاهُ الَّذِيْ قُبِضَ فِيْهِ أَخَذَتْهُ بُحَّةٌ شَدِيْدَةٌ فَسَمِعْتُهُ يَقُوْلُ : {مَعَ الَّذِيْنَ أَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِنَ النَّبِيِّيْنَ وَالصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَآءِ وَالصَّالِحِيْنَ} فَعَلِمْتُ أَنَّهُ خُيِّرَ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক নাবী অন্তিম সময়ে পীড়িত হলে তাঁকে দুনিয়া ও আখিরাতের যে কোন একটি গ্রহণ করতে বলা হয়। যে অসুখে তাঁকে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে সে অসুখে তাঁর ভীষণ শ্বাসকষ্ট আরম্ভ হয়েছিল। সে সময় আমি তাঁকে مَعَالَّذِينَأَنْعَمَاللهُعَلَيْهِمْمِنْالنَّبِيِّينَوَالصِّدِّيقِينَوَالشُّهَدَاءِوَالصَّالِحِينَ তাঁরা নাবীগণ, সত্যপরায়ণ, শহীদ ও সৎকর্মশীল যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ বর্ষণ করেছেন, তাঁদের সঙ্গী হবেন (সূরাহ আন-নিসা ৪/৬৯) বলতে শুনেছি। এরপর আমি বুঝে নিয়েছি যে, তাঁকে (দুনিয়া বা আখিরাতে) যে কোন একটি বেছে নেয়ার অবকাশ দেয়া হয়েছে। [৪৪৩৫] (আ.প্র. ৪২২৫, ই.ফা. ৪২২৮)
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ قَالَ كُنْتُ أَنَا وَأُمِّيْ مِنْ الْمُسْتَضْعَفِيْنَ مِنْ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ.
‘উবাইদুল্লাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন যে, আমি এবং আমার আম্মা (আয়াতে বর্ণিত) অসহায়দের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। [১৩৫৭] (আ.প্র. ৪২২৬, ই.ফা. ৪২২৯)
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ تَلَا : {إِلَّا الْمُسْتَضْعَفِيْنَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَآءِ وَالْوِلْدَانِ} قَالَ : كُنْتُ أَنَا وَأُمِّيْ مِمَّنْ عَذَرَ اللهُ. وَيُذْكَرُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ {حَصِرَتْ} ضَاقَتْ. {تَلْوُوْا} أَلْسِنَتَكُمْ بِالشَّهَادَةِ وَقَالَ غَيْرُهُ {الْمُرَاغَمُ} الْمُهَاجَرُ رَاغَمْتُ هَاجَرْتُ قَوْمِي. {مَوْقُوْتًا}: مُوَقَّتًا وَقْتَهُ عَلَيْهِمْ.
ইবনু আবূ মুলাইকাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) إِلاَّالْمُسْتَضْعَفِينَمِنْالرِّجَالِوَالنِّسَاءِوَالْوِلْدَانِ “তবে যেসব অসহায় পুরুষ, নারী ও শিশু .......” (সূরাহ আন-নিসা ৪/৯৮) আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন এবং বললেন, আল্লাহ যাদের অক্ষমতাকে অনুমোদন করেছেন আমি এবং আমার আম্মা তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত حَصِرَتْসংকুচিত হয়েছে। تَلْوُواأَلْسِنَتَكُمْبِالشَّهَادَةِসাক্ষ্য দিতে তাদের জিহ্বা বক্র হয়। الْمُهَاجَرُالْمُرَاغَمُ হিজরাতের স্থান, رَاغَمْتُقَوْمِيআমার গোত্রকে ত্যাগ করেছি, مَوْقُوتًا এবং مُوَقَّتًاতাদের উপর সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। [১৩৫৭] (আ.প্র. ৪২২৭, ই.ফা. ৪২৩০)
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ قَالَا حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَدِيٍّ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ يَزِيْدَ عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ {فَمَا لَكُمْ فِي الْمُنَافِقِيْنَ فِئَتَيْنِ} رَجَعَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ أُحُدٍ وَكَانَ النَّاسُ فِيْهِمْ فِرْقَتَيْنِ فَرِيْقٌ يَقُوْلُ اقْتُلْهُمْ وَفَرِيْقٌ يَقُوْلُ : لَا فَنَزَلَتْ : {فَمَا لَكُمْ فِي الْمُنَافِقِيْنَ فِئَتَيْنِ} وَقَالَ : إِنَّهَا طَيْبَةُ، تَنْفِي الْخَبَثَ كَمَا تَنْفِي النَّارُ خَبَثَ الْفِضَّةِ.
যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
فَمَالَكُمْفِيالْمُنَافِقِينَفِئَتَيْنِ উহূদের যুদ্ধ থেকে একদল লোক দলত্যাগ করে ফিরে এসেছিল, এরপর তাদের ব্যাপারে লোকেরা দু’দল হয়ে গেল, একদল বলছে তাদেরকে হত্যা করে ফেল; অপরদল বলছে তাদেরকে হত্যা করো না, তখন অবতীর্ণ হল ঃ فَمَالَكُمْفِيالْمُنَافِقِينَفِئَتَيْنِ অর্থাৎ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, এই মাদীনাহ হল পবিত্র স্থান, আগুন যেভাবে রৌপ্যের কালিমা দূর করে এটাও অপবিত্রতা দূর করে দেয়। [১৮৮৪; মুসলিম ১৫/৮৮, হাঃ ১৩৮৪, আহমাদ ২১৬৫৫] (আ.প্র. ৪২২৮, ই.ফা. ৪২৩১)
آدَمُ بْنُ أَبِيْ إِيَاسٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا مُغِيْرَةُ بْنُ النُّعْمَانِ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيْدَ بْنَ جُبَيْرٍ قَالَ آيَةٌ اخْتَلَفَ فِيْهَا أَهْلُ الْكُوْفَةِ فَرَحَلْتُ فِيْهَا إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَسَأَلْتُهُ عَنْهَا فَقَالَ نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ {وَإِنْ كُنْتُمْ مَرْضٰى أَوْ عَلٰى سَفَرٍ أَوْ جَآءَ أَحَدٌ مِّنْكُمْ مِّنَ الْغَآئِطِ} هِيَ آخِرُ مَا نَزَلَ وَمَا نَسَخَهَا شَيْءٌ.
সা‘ঈদ ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, এই আয়াত সম্পর্কে কূফাবাসীগণ ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করল। (কেউ বলেন মানসূখ, কেউ বলেন মানসূখ নয়। এ ব্যাপারে আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে গেলাম এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, উত্তরে তিনি বললেন, وَمَنْيَقْتُلْمُؤْمِنًامُتَعَمِّدًافَجَزَاؤُهُجَهَنَّمُ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে এবং এটি শেষের দিকে অবতীর্ণ আয়াত; এটাকে কোন কিছু রহিত করেনি। [৩৮৫৫; মুসলিম ৫৪/হাঃ ৩০২৩] (আ.প্র. ৪২২৯, ই.ফা. ৪২৩২)
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو عَنْ عَطَاءٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا {وَلَا تَقُوْلُوْا لِمَنْ أَلْقَى إِلَيْكُمُ السَّلَامَ لَسْتَ مُؤْمِنًا} قَالَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : كَانَ رَجُلٌ فِيْ غُنَيْمَةٍ لَهُ فَلَحِقَهُ الْمُسْلِمُوْنَ فَقَالَ : السَّلَامُ عَلَيْكُمْ فَقَتَلُوْهُ، وَأَخَذُوْا غُنَيْمَتَهُ فَأَنْزَلَ اللهُ فِيْ ذَلِكَ إِلَى قَوْلِهِ : {عَرَضَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا} تِلْكَ الْغُنَيْمَةُ. قَالَ : قَرَأَ ابْنُ عَبَّاسٍ السَّلَامَ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, وَلاَتَقُولُوالِمَنْأَلْقَىإِلَيْكُمْالسَّلاَمَلَسْتَمُؤْمِنًا আয়াতের ঘটনা হচ্ছে এই যে, এক ব্যক্তির কিছু ছাগল ছিল, মুসলিমদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হলে সে তাঁদেরকে বলল “আস্সালামু আলাইকুম”, মুসলিমরা তাকে হত্যা করল এবং তার ছাগলগুলো নিয়ে নিল, এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করলেন عَرَضَالْحَيَاةِالدُّنْيَا পার্থিব সম্পদের লালসায়আর সে সম্পদ হচ্ছে এ ছাগল পাল।
‘আত্বা (রহ.) বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) السَّلاَمَ পড়েছেন। (আ.প্র. ৪২৩০, ই.ফা. ৪২৩৩)
إِسْمَاعِيْلُ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ السَّاعِدِيُّ أَنَّهُ رَأَى مَرْوَانَ بْنَ الْحَكَمِ فِي الْمَسْجِدِ فَأَقْبَلْتُ حَتَّى جَلَسْتُ إِلَى جَنْبِهِ فَأَخْبَرَنَا أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمْلَى عَلَيْهِ {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ} و {وَالْمُجَاهِدُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ} فَجَاءَهُ ابْنُ أُمِّ مَكْتُوْمٍ وَهْوَ يُمِلُّهَا عَلَيَّ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَاللهِ لَوْ أَسْتَطِيْعُ الْجِهَادَ لَجَاهَدْتُ وَكَانَ أَعْمَى فَأَنْزَلَ اللهُ عَلَى رَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم وَفَخِذُهُ عَلَى فَخِذِيْ فَثَقُلَتْ عَلَيَّ حَتَّى خِفْتُ أَنْ تَرُضَّ فَخِذِيْ ثُمَّ سُرِّيَ عَنْهُ فَأَنْزَلَ اللهُ {غَيْرَ أُولِي الضَّرَرِ}.
যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَوَالْمُجَاهِدُونَفِيسَبِيلِاللهِ আয়াতটি লেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি আমাকে বলছিলেন এমন সময় ইবনু উম্মু মাকতুম (রাঃ) তাঁর কাছে আসলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আল্লাহ্র শপথ, যদি আমার জিহাদ করার ক্ষমতা থাকত তা হলে অবশ্যই জিহাদ করতাম। তিনি অন্ধ ছিলেন। এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপর ওয়াহী নাযিল করলেন, এমন অবস্থায় যে তাঁর উরু আমার উরুর উপর ছিল তা আমার কাছে এতই ভারী লাগছিল যে, আমি আমার উরু ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা করছিলাম। তারপর তাঁর থেকে এই অবস্থা কেটে গেল, আর আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন ঃ غَيْرَأُولِيالضَّرَرِঅক্ষম ব্যক্তিরা ব্যতীত (সূরাহ আন-নিসা ৪/৯৫)। [২৮৩২] (আ.প্র. ৪২৩১, ই.ফা. ৪২৩৪)
حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ دَعَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم زَيْدًا فَكَتَبَهَا فَجَاءَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُوْمٍ فَشَكَا ضَرَارَتَهُ فَأَنْزَلَ اللهُ غَيْرَ أُوْلِي الضَّرَرِ.
বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বললেন, যখন لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَ..... আয়াতটি অবতীর্ণ হল, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যায়দ (রাঃ)-কে ডাকলেন। তিনি তা লিখে নিলেন। ইবনু উম্মু মাকতুম (রাঃ) তাঁর অক্ষমতার ওযর পেশ করলেন, আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন ঃ غَيْرَأُولِيالضَّرَرِ অক্ষম ব্যক্তিরা ব্যতীত (সূরাহ আন-নিসা ৪/৯৫)। [২৮৩১] (আ.প্র. ৪২৩২, ই.ফা. ৪২৩৫)
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ} قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ادْعُوْا فُلَانًا فَجَاءَهُ وَمَعَهُ الدَّوَاةُ وَاللَّوْحُ أَوِ الْكَتِفُ فَقَالَ اكْتُبْ {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُجَاهِدُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ} وَخَلْفَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ابْنُ أُمِّ مَكْتُوْمٍ فَقَالَ : يَا رَسُوْلَ اللهِ أَنَا ضَرِيْرٌ فَنَزَلَتْ مَكَانَهَا {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ غَيْرَ أُولِي الضَّرَرِ وَالْمُجَاهِدُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ}.
বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَوَالْمُجَاهِدُونَفِيسَبِيلِاللهِ আয়াতটি যখন অবতীর্ণ হল, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন অমুককে ডেকে আন। এরপর দোয়াত, কাঠ অথবা হাড় খণ্ড নিয়ে তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে আসলেন। তিনি বললেন, লিখে নাও ঃ لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَوَالْمُجَاهِدُونَ ..... فِيسَبِيلِاللهِরসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পেছনে ছিলেন ইবনু উম্মু মাকতুম (রাঃ)। তিনি বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমি অক্ষম ব্যক্তি। এরপর তখনই অবতীর্ণ হল ঃ لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَغَيْرَأُولِيالضَّرَرِوَالْمُجَاهِدُونَفِيسَبِيلِاللهِ অর্থাৎ “যারা কোন প্রকার ওযর ব্যতীত বাড়িতে বসে থাকে তারা এবং আল্লাহ্র পথে জিহাদকারীগণ সমান হতে পারে না।” [২৮৩১] (আ.প্র. ৪২৩৩, ই.ফা. ৪২৩৬)
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ ح و حَدَّثَنِيْ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ الْكَرِيْمِ أَنَّ مِقْسَمًا مَوْلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ الْحَارِثِ أَخْبَرَهُ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ} عَنْ بَدْرٍ وَالْخَارِجُوْنَ إِلَى بَدْرٍ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বদরের যুদ্ধে যোগদানকারী আর বদর যুদ্ধে অনুপস্থিত মু’মিনগণ সমান নয়। [৩৯৫৪] (আ.প্র. ৪২৩৪, ই.ফা. ৪২৩৭)
عَبْدُ اللهِ بْنُ يَزِيْدَ الْمُقْرِئُ حَدَّثَنَا حَيْوَةُ وَغَيْرُهُ قَالَا حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَبُو الْأَسْوَدِ قَالَ قُطِعَ عَلَى أَهْلِ الْمَدِيْنَةِ بَعْثٌ فَاكْتُتِبْتُ فِيْهِ فَلَقِيْتُ عِكْرِمَةَ مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَأَخْبَرْتُهُ فَنَهَانِيْ عَنْ ذَلِكَ أَشَدَّ النَّهْيِ ثُمَّ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ أَنَّ نَاسًا مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ كَانُوْا مَعَ الْمُشْرِكِيْنَ يُكَثِّرُوْنَ سَوَادَ الْمُشْرِكِيْنَ عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَأْتِي السَّهْمُ فَيُرْمَى بِهِ فَيُصِيْبُ أَحَدَهُمْ فَيَقْتُلُهُ أَوْ يُضْرَبُ فَيُقْتَلُ فَأَنْزَلَ اللهُ : {إِنَّ الَّذِيْنَ تَوَفّٰهُمُ الْمَلٰٓئِكَةُ ظَالِمِيْٓ أَنْفُسِهِمْ}الآيَةَ رَوَاهُ اللَّيْثُ عَنْ أَبِي الْأَسْوَدِ.
আবুল আসওয়াদ মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুর রহমান (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, একদল সৈন্য পাঠানোর জন্যে মাদীনাহ বাসীদের উপর নির্দেশ দেয়া হলে আমাকেও তাতে অন্তর্ভুক্ত করা হল। আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর মুক্ত গোলাম ইকরামাহর সঙ্গে দেখা করলাম এবং তাঁকে এ ব্যাপারে জানালাম। তিনি আমাকে এ ব্যাপারে কঠোরভাবে নিষেধ করলেন, তারপর বললেন কিছু সংখ্যক মুসলিম মুশরিকদের সঙ্গে থেকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বিরুদ্ধে মুশরিকদের দল ভারী করেছিল, তীর এসে তাদের কারো উপর পড়ত এবং তাকে মেরে ফেলত অথবা তাদের কেউ মার খেত এবং নিহত হত তখন আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন ঃ إِنَّ الَّذِينَ تَوَفَّاهُمْ الْمَلاَئِكَةُ ظَالِمِي أَنْفُسِهِمْ আবুল আসওয়াদ থেকে লাইস এটা বর্ণনা করেছেন। [৭০৮৫] (আ.প্র. ৪২৩৫, ই.ফা. ৪২৩৮)
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا {إِلَّا الْمُسْتَضْعَفِيْنَ} قَالَ : كَانَتْ أُمِّيْ مِمَّنْ عَذَرَ اللهُ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
إِلاَّ الْمُسْتَضْعَفِينَ সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, আল্লাহ তা‘আলা যাদের অক্ষমতা কবূল করেছেন আমার মাতা তাঁদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। [১৩৫৭] (আ.প্র. ৪২৩৬, ই.ফা. ৪২৩৯)
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ يَحْيَى عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّيْ الْعِشَاءَ إِذْ قَالَ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ ثُمَّ قَالَ قَبْلَ أَنْ يَسْجُدَ اللهُمَّ نَجِّ عَيَّاشَ بْنَ أَبِيْ رَبِيْعَةَ اللهُمَّ نَجِّ سَلَمَةَ بْنَ هِشَامٍ اللهُمَّ نَجِّ الْوَلِيْدَ بْنَ الْوَلِيْدِ اللهُمَّ نَجِّ الْمُسْتَضْعَفِيْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ اللهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ اللهُمَّ اجْعَلْهَا سِنِيْنَ كَسِنِيْ يُوْسُفَ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘ইশার সলাত আদায় করছিলেন, তিনি সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বললেন, তারপর সাজদাহ্ করার পূর্বে বললেন, হে আল্লাহ! আয়্যাশ ইবনু আবূ রাবিয়াকে মুক্ত করুন। হে আল্লাহ! সালামাহ ইবনু হিশামকে মুক্ত করুন। হে ‘আল্লাহ! ওয়ালিদ ইবনু ওয়ালিদকে মুক্ত করুন। হে আল্লাহ! অক্ষম মু’মিনদেরকে মুক্ত করুন। হে আল্লাহ! মুযার গোত্রের উপর কঠিন শাস্তি অবতীর্ণ করুন। হে আল্লাহ! তাদের উপর ইউসুফ (‘আ.)-এর যুগের দুর্ভিক্ষের মত দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দিন। [৭৯৭] (আ.প্র. ৪২৩৭, ই.ফা. ৪২৪০)
عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا : {يَسْتَفْتُوْنَكَ فِي النِّسَآءِ قُلْ اللهُ يُفْتِيْكُمْ فِيْهِنَّ} إِلَى قَوْلِهِ : {وَتَرْغَبُوْنَ أَنْ تَنْكِحُوْهُنَّ} قَالَتْ عَائِشَةُ : هُوَ الرَّجُلُ تَكُوْنُ عِنْدَهُ الْيَتِيْمَةُ هُوَ وَلِيُّهَا وَوَارِثُهَا فَأَشْرَكَتْهُ فِيْ مَالِهِ حَتَّى فِي الْعَذْقِ فَيَرْغَبُ أَنْ يَنْكِحَهَا وَيَكْرَهُ أَنْ يُزَوِّجَهَا رَجُلًا فَيَشْرَكُهُ فِيْ مَالِهِ بِمَا شَرِكَتْهُ فَيَعْضُلُهَا فَنَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। وَتَرْغَبُونَ أَنْ تَنْكِحُوهُنَّ يَسْتَفْتُونَكَ فِي النِّسَاءِ قُلْ اللهُ يُفْتِيكُمْ فِيهِنَّ আয়াত সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, সে হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যার নিকট ইয়াতীম বালিকা থাকে সে তার অভিভাবক এবং তার মুরুব্বী, এরপর সেই বালিকা সেই অভিভাবকের সম্পদের অংশীদার হয়ে যায়, এমনকি খেজুর বাগানেও। সে ব্যক্তি তাকে বিয়েও করে না এবং অন্য কারো নিকট বিয়ে দিতেও অপছন্দ করে এ আশঙ্কায় যে, তার যেই সম্পদে বালিকা অংশীদার সেই সম্পদে অন্য ব্যক্তি অংশীদার হয়ে যাবে। এভাবে সেই ব্যক্তি ঐ বালিকাকে আটকে রাখে। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। [২৪৯৪] (আ.প্র. ৪২৩৯, ই.ফা. ৪২৪২)
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا : {وَإِنِ امْرَأَةٌ خَافَتْ مِنْمبَعْلِهَا نُشُوْزًا أَوْ إِعْرَاضًا} قَالَتْ الرَّجُلُ تَكُوْنُ عِنْدَهُ الْمَرْأَةُ لَيْسَ بِمُسْتَكْثِرٍ مِنْهَا يُرِيْدُ أَنْ يُفَارِقَهَا فَتَقُوْلُ أَجْعَلُكَ مِنْ شَأْنِيْ فِيْ حِلٍّ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ فِيْ ذَلِكَ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
وَإِنْ امْرَأَةٌ خَافَتْ مِنْ بَعْلِهَا نُشُوزًا أَوْ إِعْرَاضًا আয়াত সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, কোন ব্যক্তির বিবাহ বন্ধনে কোন মহিলা থাকে কিন্তু স্বামী তার প্রতি আকৃষ্ট নয় বরং তাকে আলাদা করে দিতে চায়, তখন স্ত্রী বলে আমার এই দাবী থেকে আমি তোমাকে অব্যাহতি দিচ্ছি, এ সম্পর্কে এ আয়াত অবতীর্ণ হল। [২৪৫০] (আ.প্র. ৪২৪০, ই.ফা. ৪২৪৩)
عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ قَالَ حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ عَنِ الْأَسْوَدِ قَالَ كُنَّا فِيْ حَلْقَةِ عَبْدِ اللهِ فَجَاءَ حُذَيْفَةُ حَتَّى قَامَ عَلَيْنَا فَسَلَّمَ ثُمَّ قَالَ لَقَدْ أُنْزِلَ النِّفَاقُ عَلَى قَوْمٍ خَيْرٍ مِنْكُمْ قَالَ الْأَسْوَدُ سُبْحَانَ اللهِ إِنَّ اللهَ يَقُوْلُ : {إِنَّ الْمُنَافِقِيْنَ فِي اَلدَّرْكِ الْأَسْفَلِ مِنَ النَّارِ} فَتَبَسَّمَ عَبْدُ اللهِ وَجَلَسَ حُذَيْفَةُ فِيْ نَاحِيَةِ الْمَسْجِدِ فَقَامَ عَبْدُ اللهِ فَتَفَرَّقَ أَصْحَابُهُ فَرَمَانِيْ بِالْحَصَا فَأَتَيْتُهُ فَقَالَ حُذَيْفَةُ عَجِبْتُ مِنْ ضَحِكِهِ وَقَدْ عَرَفَ مَا قُلْتُ لَقَدْ أُنْزِلَ النِّفَاقُ عَلَى قَوْمٍ كَانُوْا خَيْرًا مِنْكُمْ ثُمَّ تَابُوْا فَتَابَ اللهُ عَلَيْهِمْ.
আসওয়াদ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ)-এর মজলিসে ছিলাম, সেখানে হুযাইফাহ আসলেন এবং আমাদের সম্মুখে দণ্ডায়মান হয়ে সালাম দিলেন। এরপর বললেন, তোমাদের চেয়ে উত্তম গোত্রের উপরও মুনাফিকী এসেছিল। আসওয়াদ বললেন, সুবহানাল্লাহ! অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “মুনাফিকগণ জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে থাকবে”। ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) হেসে উঠলেন। হুযাইফাহ (রাঃ) মসজিদের এক কোণে গিয়ে বসলেন, ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) উঠে গেলে তাঁর শিষ্যবর্গও চলে গেলেন। এরপর হুযাইফাহ (রাঃ) আমার দিকে একটি পাথর টুকরো নিক্ষেপ করে আমাকে ডাকলেন। আমি তার নিকট গেলে তিনি বললেন, আমি তার হাসিতে বিস্মিত হলাম অথচ আমি যা বলেছি তা তিনি বুঝেছেন। এমন এক গোত্র যারা তোমাদের চেয়ে উত্তম তাদের মধ্যেও মুনাফিকী সৃষ্টি করা হয়েছিল। তারপর তারা তাওবাহ করেছে এবং আল্লাহ তা‘আলা তাদের তাওবাহ গ্রহণ করেছেন। (আ.প্র. ৪২৪১, ই.ফা. ৪২৪৪)
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ قَالَ حَدَّثَنِي الْأَعْمَشُ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا يَنْبَغِيْ لِأَحَدٍ أَنْ يَقُوْلَ أَنَا خَيْرٌ مِنْ يُوْنُسَ بْنِ مَتَّى.
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন যে, “আমি ইউনুস ইবনু মাত্তা (‘আ.) থেকে উত্তম” এটা বলা কারো জন্য শোভনীয় নয়। [৩৪১২] (আ.প্র. ৪২৪২, ই.ফা. ৪২৪৫)
مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ حَدَّثَنَا هِلَالٌ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ قَالَ أَنَا خَيْرٌ مِنْ يُوْنُسَ بْنِ مَتَّى فَقَدْ كَذَبَ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি বলে “আমি ইউনুস ইবনু মাত্তা থেকে উত্তম” সে মিথ্যা বলে। [৩৪১৫] (আ.প্র. ৪২৪৩, ই.ফা. ৪২৪৬)
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ، سَمِعْتُ الْبَرَاءَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ : آخِرُ سُوْرَةٍ نَزَلَتْ بَرَاءَةَ وَآخِرُ آيَةٍ نَزَلَتْ : {يَسْتَفْتُوْنَكَ}.
আবূ ইসহাক (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
আমি বারাআ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, সর্বশেষ নাযিলকৃত সূরাহ হচ্ছে “বারাআত” এবং সর্বশেষ নাযিলকৃত আয়াত হচ্ছে يَسْتَفْتُونَكَ قُلْ اللهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلاَلَةِ। [৪৩৬৪; মুসলিম ২৩/৩, হাঃ ১৬১৮] (আ.প্র. ৪২৪৪, ই.ফা. ৪২৪৭)
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ قَيْسٍ عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ قَالَتْ الْيَهُوْدُ لِعُمَرَ إِنَّكُمْ تَقْرَءُوْنَ آيَةً لَوْ نَزَلَتْ فِيْنَا لَاتَّخَذْنَاهَا عِيْدًا فَقَالَ عُمَرُ إِنِّيْ لَأَعْلَمُ حَيْثُ أُنْزِلَتْ وَأَيْنَ أُنْزِلَتْ وَأَيْنَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ أُنْزِلَتْ يَوْمَ عَرَفَةَ وَإِنَّا وَاللهِ بِعَرَفَةَ قَالَ سُفْيَانُ وَأَشُكُّ كَانَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَمْ لَا {الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ}.
ত্বরিক ইবনু শিহাব থেকে বর্ণিতঃ
ইয়াহূদীগণ ‘উমার ফারূক (রাঃ)-কে বলল যে, আপনারা এমন একটি আয়াত পড়ে থাকেন তা যদি আমাদের মধ্যে নাযিল হত, তবে আমরা সেটাকে “ঈদ” হিসেবে গ্রহণ করতাম। ‘উমার (রাঃ) বললেন, আমি জানি এটা কখন নাযিল হয়েছে, কোথায় নাযিল হয়েছে এবং নাযিলের সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোথায় ছিলেন, আয়াতটি আরাফাতের দিন নাযিল হয়েছিল। আল্লাহ্র শপথ আমরা সবাই ‘আরাফাতে ছিলাম, সেই আয়াতটি হল الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করে দিলাম। সুফ্ইয়ান সাওরী বলেন, এ ব্যাপারে আমার সন্দেহ আছে । [৪৫] (আ.প্র. ৪২৪৫, ই.ফা. ৪২৪৮)
إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ خَرَجْنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ بَعْضِ أَسْفَارِهِ حَتَّى إِذَا كُنَّا بِالْبَيْدَاءِ أَوْ بِذَاتِ الْجَيْشِ انْقَطَعَ عِقْدٌ لِيْ فَأَقَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى الْتِمَاسِهِ وَأَقَامَ النَّاسُ مَعَهُ وَلَيْسُوْا عَلَى مَاءٍ وَلَيْسَ مَعَهُمْ مَاءٌ فَأَتَى النَّاسُ إِلَى أَبِيْ بَكْرٍ الصِّدِّيْقِ فَقَالُوْا أَلَا تَرَى مَا صَنَعَتْ عَائِشَةُ أَقَامَتْ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَبِالنَّاسِ وَلَيْسُوْا عَلَى مَاءٍ وَلَيْسَ مَعَهُمْ مَاءٌ فَجَاءَ أَبُوْ بَكْرٍ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَاضِعٌ رَأْسَهُ عَلَى فَخِذِيْ قَدْ نَامَ فَقَالَ حَبَسْتِ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسَ وَلَيْسُوْا عَلَى مَاءٍ وَلَيْسَ مَعَهُمْ مَاءٌ قَالَتْ عَائِشَةُ فَعَاتَبَنِيْ أَبُوْ بَكْرٍ وَقَالَ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَقُوْلَ وَجَعَلَ يَطْعُنُنِيْ بِيَدِهِ فِيْ خَاصِرَتِيْ وَلَا يَمْنَعُنِيْ مِنْ التَّحَرُّكِ إِلَّا مَكَانُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى فَخِذِيْ فَقَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَصْبَحَ عَلَى غَيْرِ مَاءٍ فَأَنْزَلَ اللهُ آيَةَ التَّيَمُّمِ فَتَيَمَّمُوْا فَقَالَ أُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ مَا هِيَ بِأَوَّلِ بَرَكَتِكُمْ يَا آلَ أَبِيْ بَكْرٍ قَالَتْ فَبَعَثْنَا الْبَعِيْرَ الَّذِيْ كُنْتُ عَلَيْهِ فَإِذَا الْعِقْدُ تَحْتَهُ.
নাবী-পত্নী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে এক সফরে বের হলাম, বাইদা কিংবা যাতুল জাইশ নামক স্থানে পৌঁছার পর আমার গলার হার হারিয়ে গেল। তা খোঁজার জন্যে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেখানে অবস্থান করলেন এবং লোকেরাও তাঁর সঙ্গে অবস্থান করল। সেখানেও কোন পানি ছিল না এবং তাদের সঙ্গেও পানি ছিল না। এরপর লোকেরা আবূ বাক্র (রাঃ)-এর কাছে আসল এবং বলল, ‘আয়িশাহ (রাঃ) যা করেছেন আপনি তা দেখেছেন কি? রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং সকল লোকটি আটকিয়ে রেখেছেন, অথচ সেখানেও পানি নেই আবার তাদের সঙ্গেও পানি নেই। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার উরুতে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলেন। এমতাবস্থায় আবূ বাক্র (রাঃ) এলেন এবং বললেন, তুমি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং সকল লোককে আটকে রেখেছো অথচ সেখানেও পানি নেই আবার তাদের সঙ্গেও পানি নেই। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন যে, আবূ বাক্র (রাঃ) আমাকে দোষারোপ করলেন এবং আল্লাহ যা চেয়েছেন তা বলেছেন এবং তাঁর অঙ্গুলি দিয়ে আমার কোমরে ধাক্কা দিতে লাগলেন, আমার কোলে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অবস্থানই আমাকে নড়াচড়া করতে বাধা দিল। পানিবিহীন অবস্থায় ভোরে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘুম থেকে উঠলেন। তখন আল্লাহ তা‘আলা তায়াম্মুমের আয়াত অবতীর্ণ করলেন, তখন সবাই তায়াম্মুম করল। তখন উসাইদ ইবনু হুযাইর বললেন, হে আবূ বাক্র-এর বংশধর! এটাই আপনাদের কারণে পাওয়া প্রথম বারাকাত নয়।
‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, যে উটের উপর আমি ছিলাম, তাকে আমরা উঠালাম তখন দেখি হারটি তার নিচে। [৩৩৪] (আ.প্র. ৪২৪৬, ই.ফা. ৪২৪৯)
يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَمْرٌو أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ الْقَاسِمِ حَدَّثَهُ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا سَقَطَتْ قِلَادَةٌ لِيْ بِالْبَيْدَاءِ وَنَحْنُ دَاخِلُوْنَ الْمَدِيْنَةَ فَأَنَاخَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَنَزَلَ فَثَنَى رَأْسَهُ فِيْ حَجْرِيْ رَاقِدًا أَقْبَلَ أَبُوْ بَكْرٍ فَلَكَزَنِيْ لَكْزَةً شَدِيْدَةً وَقَالَ حَبَسْتِ النَّاسَ فِيْ قِلَادَةٍ فَبِي الْمَوْتُ لِمَكَانِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ أَوْجَعَنِيْ ثُمَّ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اسْتَيْقَظَ وَحَضَرَتْ الصُّبْحُ فَالْتَمِسَ الْمَاءُ فَلَمْ يُوْجَدْ فَنَزَلَتْ {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْآ إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ} الآيَةَ فَقَالَ أُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ لَقَدْ بَارَكَ اللهُ لِلنَّاسِ فِيْكُمْ يَا آلَ أَبِيْ بَكْرٍ مَا أَنْتُمْ إِلَّا بَرَكَةٌ لَهُمْ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মদিনায় প্রবেশের পথে বাইদা নামক স্থানে আমার গলার হারটি পড়ে গেল। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেখানে উট বসিয়ে অবস্থান করলেন। তিনি আমার কোলে মাথা রেখে শুয়েছিলেন। আবূ বাক্র (রাঃ) এসে আমাকে জোরে থাপ্পড় লাগালেন এবং বললেন একটি হার হারিয়ে তুমি সকল লোককে আটকে রেখেছো। এদিকে তিনি আমাকে ব্যথা দিয়েছেন, অপরদিকে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ অবস্থায় আছেন, এতে আমি মৃত্যু যাতনা ভোগ করছিলাম। তারপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জাগ্রত হলেন, ফাজ্র সলাতের সময় হল এবং পানি খোঁজ করে পাওয়া গেল না, তখন অবতীর্ণ হল ঃ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلاَةِ فَاغسْلُوْا وَجُوْهكُم ..... ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা যখন সলাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন ধৌত করে নিবে নিজেদের মুখমণ্ডল এবং হাত কনুই পর্যন্ত। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৬)
এরপর উসায়দ ইবনু হুযায়র বললেন, হে আবূ বাক্রের বংশধর! আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের কারণে মানুষের জন্যে বারাকাত অবতীর্ণ করেছেন। মানুষের জন্য তোমরা হলে কল্যাণ আর কল্যাণ। [৩৩৪] (আ.প্র. ৪২৪৭, ই.ফা. ৪২৫০)
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ مُخَارِقٍ عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ سَمِعْتُ ابْنَ مَسْعُوْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ شَهِدْتُ مِنَ الْمِقْدَادِ ح و حَدَّثَنِيْ حَمْدَانُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا أَبُو النَّضْرِ حَدَّثَنَا الْأَشْجَعِيُّ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ مُخَارِقٍ عَنْ طَارِقٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَ الْمِقْدَادُ يَوْمَ بَدْرٍ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّا لَا نَقُوْلُ لَكَ كَمَا قَالَتْ بَنُوْ إِسْرَائِيْلَ لِمُوْسَى {فَاذْهَبْ أَنْتَ وَرَبُّكَ فَقَاتِلَآ إِنَّا هَا هُنَا قَاعِدُوْنَ} وَلَكِنْ امْضِ وَنَحْنُ مَعَكَ فَكَأَنَّهُ سُرِّيَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ وَرَوَاهُ وَكِيْعٌ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ مُخَارِقٍ عَنْ طَارِقٍ أَنَّ الْمِقْدَادَ قَالَ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ থেকে বর্ণিতঃ
বদর যুদ্ধের দিন মিক্দাদ (রাঃ) বলেছিলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! ইসরাঈলীরা মূসা (‘আ.)-কে যেমন বলেছিল, “যাও তুমি ও তোমার প্রতিপালক যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে থাকব” আমরা আপনাকে সে রকম বলব না বরং আপনি এগিয়ে যান, আমরা আপনার সঙ্গেই আছি, তখন যেন রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে সব দুশ্চিন্তা দূর হয়ে গেল। এই হাদীসটি ওয়াকা-সুফ্ইয়ান থেকে, তিনি মুখারিক থেকে এবং তিনি (মুখারিক) তারিক থেকে বর্ণনা করেছেন যে, মিক্দাদ এটা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলেছিলেন। [৩৯৫২] (আ.প্র. ৪২৪৮, ই.ফা. ৪২৫১)
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيُّ حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَلْمَانُ أَبُوْ رَجَاءٍ مَوْلَى أَبِيْ قِلَابَةَ عَنْ أَبِيْ قِلَابَةَ أَنَّهُ كَانَ جَالِسًا خَلْفَ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيْزِ فَذَكَرُوْا وَذَكَرُوْا فَقَالُوْا وَقَالُوْا قَدْ أَقَادَتْ بِهَا الْخُلَفَاءُ فَالْتَفَتَ إِلَى أَبِيْ قِلَابَةَ وَهْوَ خَلْفَ ظَهْرِهِ فَقَالَ مَا تَقُوْلُ يَا عَبْدَ اللهِ بْنَ زَيْدٍ أَوْ قَالَ مَا تَقُوْلُ يَا أَبَا قِلَابَةَ قُلْتُ مَا عَلِمْتُ نَفْسًا حَلَّ قَتْلُهَا فِي الإِسْلَامِ إِلَّا رَجُلٌ زَنَى بَعْدَ إِحْصَانٍ أَوْ قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ حَارَبَ اللهَ وَرَسُوْلَهُ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ عَنْبَسَةُ حَدَّثَنَا أَنَسٌ بِكَذَا وَكَذَا قُلْتُ إِيَّايَ حَدَّثَ أَنَسٌ قَالَ قَدِمَ قَوْمٌ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَكَلَّمُوْهُ فَقَالُوْا قَدْ اسْتَوْخَمْنَا هَذِهِ الْأَرْضَ فَقَالَ هَذِهِ نَعَمٌ لَنَا تَخْرُجُ فَاخْرُجُوْا فِيْهَا فَاشْرَبُوْا مِنَ الْبَانِهَا وَأَبْوَالِهَا فَخَرَجُوْا فِيْهَا فَشَرِبُوْا مِنْ أَبْوَالِهَا وَأَلْبَانِهَا وَاسْتَصَحُّوْا وَمَالُوْا عَلَى الرَّاعِيْ فَقَتَلُوْهُ وَاطَّرَدُوا النَّعَمَ فَمَا يُسْتَبْطَأُ مِنْ هَؤُلَاءِ قَتَلُوا النَّفْسَ وَحَارَبُوا اللهَ وَرَسُوْلَهُ وَخَوَّفُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ سُبْحَانَ اللهِ فَقُلْتُ تَتَّهِمُنِيْ قَالَ حَدَّثَنَا بِهَذَا أَنَسٌ قَالَ وَقَالَ يَا أَهْلَ كَذَا إِنَّكُمْ لَنْ تَزَالُوْا بِخَيْرٍ مَا أُبْقِيَ هَذَا فِيْكُمْ أَوْ مِثْلُ هَذَا.
আবূ ক্বিলাবাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। তিনি ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহ.)-এর পেছনে উপবিষ্ট ছিলেন। তাঁরা কাসামাত দণ্ড সম্পর্কিত হাদীসটি আলোচনা করলেন এবং এর অবস্থা সম্পর্কে আলাপ করলেন, তাঁরা মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে বললেন এবং এও বললেন যে, খুলাফায়ে রাশিদীন এই পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন। এরপর তিনি আবূ কিলাবার প্রতি তাকালেন, আবূ কিলাবাহ তাঁর পেছনে ছিলেন। তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ নামে কিংবা আবূ কিলাবাহ নামে ডেকে বললেন, এই ব্যাপারে তোমার মতামত কী? আমি বললাম, বিয়ের পর ব্যভিচার, কিসাস ব্যতীত খুন এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার কোন একটি ব্যতীত অন্য কোন কারণে কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া ইসলামে বৈধ বলে আমার জানা নেই।
আনবাসা বললেন, আনাস (রাঃ) আমাদেরকে হাদীস এভাবে বর্ণনা করেছেন (অর্থাৎ হাদীসে আরনিন)। আমি (আবূ ক্বিলাবাহ) বললাম, আমাকেও আনাস (রাঃ) এই হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, একদল লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দরবারে এসে তাঁর সঙ্গে আলাপ করল, তারা বলল, আমরা এ দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেদেরকে খাপ খাওয়াতে পারছি না। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এগুলো আমার উট, ঘাস খাওয়ার জন্যে বের হচ্ছে, তোমরা এগুলোর সঙ্গে যাও এবং এদের দুধ ও পেশাব পান কর। তারা ওগুলোর সঙ্গে বেরিয়ে গেল এবং দুধ ও প্রস্রাব পান করে সুস্থ হয়ে উঠল, এরপর রাখালের উপর আক্রমণ করে তাকে হত্যা করে পশুগুলো লুট করে নিয়ে গেল। এখন তাদেরকে হত্যা না করার পক্ষে আর কোন যুক্তিই থাকল না। তারা নরহত্যা করেছে, আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে ভয় দেখিয়েছে। ‘আনবাসা আশ্চর্য হয়ে বলল, সুবহানাল্লাহ! আমি বললাম, আমার এই হাদীস সম্পর্কে তুমি কি আমাকে মিথ্যা অপবাদ দেবে? ‘আনবাসা বলল, আনাস (রাঃ) আমাদেরকে এই হাদীস বর্ণনা করেছেন, আবূ কিলাবাহ বললেন, তখন ‘আনবাসা বলল, হে এই দেশবাসী (অর্থাৎ সিরিয়াবাসী) এ রকম ব্যক্তিবর্গ যতদিন তোমাদের মধ্যে থাকবে ততদিন তোমরা কল্যাণের মধ্যে থাকবে। [২৩৩] (আ.প্র. ৪২৪৯, ই.ফা. ৪২৫২)
مُحَمَّدُ بْنُ سَلَامٍ أَخْبَرَنَا الْفَزَارِيُّ عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَسَرَتْ الرُّبَيِّعُ وَهْيَ عَمَّةُ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ثَنِيَّةَ جَارِيَةٍ مِنَ الْأَنْصَارِ فَطَلَبَ الْقَوْمُ الْقِصَاصَ فَأَتَوْا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالْقِصَاصِ فَقَالَ أَنَسُ بْنُ النَّضْرِ عَمُّ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ لَا وَاللهِ لَا تُكْسَرُ سِنُّهَا يَا رَسُوْلَ اللهِ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَا أَنَسُ كِتَابُ اللهِ الْقِصَاصُ فَرَضِيَ الْقَوْمُ وَقَبِلُوا الْأَرْشَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللهِ مَنْ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللهِ لَأَبَرَّهُ.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, রুবাঈ যিনি আনাস (রাঃ)-এ ফুফু, এক আনসার মহিলার সামনের একটি বড় দাঁত ভেঙ্গে ফেলেছিল। এরপর আহত মহিলার গোত্র এর কিসাস দাবী করে। তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট এলো, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কিসাসের নির্দেশ দিলেন, আনাস ইবনু মালিকের চাচা আনাস ইবনু নযর বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আল্লাহ্র শপথ রুবাঈ-এর দাঁত ভাঙ্গা হবে না। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে আনাস! আল্লাহ্র কিতাব তো “বদলা”র বিধান দেয়। পরবর্তীতে বিরোধীপক্ষ রাযী হয়ে মুক্তিপণ বা দিয়ত গ্রহণ করল। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহ্র কতক বান্দা আছে যারা আল্লাহ্র নামে কসম করলে আল্লাহ তা‘আলা তাদের কসম সত্যে পরিণত করেন। [২৭০৩] (আ.প্র. ৪২৫০, ই.ফা. ৪২৫৩)
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ مَنْ حَدَّثَكَ أَنَّ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم كَتَمَ شَيْئًا مِمَّا أَنْزَلَ اللهُ عَلَيْهِ فَقَدْ كَذَبَ وَاللهُ يَقُوْلُ : {يٰٓأَيُّهَا الرَّسُوْلُ بَلِّغْ مَآ أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ}الْآيَةَ
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, যদি কেউ তোমাকে বলে যে, তাঁর অবতীর্ণ বিষয়ের সামান্য কিছুও মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গোপন করেছেন তা হলে অবশ্যই, সে মিথ্যা বলেছে। আল্লাহ বলেছেন, “হে রসূল! আপনি তা পৌঁছে দিন যা আপনার প্রতি আপনার রবের তরফ থেকে অবতীর্ণ করা হয়েছে।” [৩২৩৪] (আ.প্র. ৪২৫১, ই.ফা. ৪২৫৪)
عَلِيُّ بْنُ سَلَمَةَ حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ سُعَيْرٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أُنْزِلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ {لَا يُؤَاخِذُكُمُ اللهُ بِاللَّغْوِ فِيْٓ أَيْمَانِكُمْ} فِيْ قَوْلِ الرَّجُلِ لَا وَاللهِ وَبَلَى وَاللهِ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
لاَ يُؤَاخِذُكُمْ اللهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে মানুষের উদ্দেশ্যবিহীন উক্তিلاَ وَاللهِ না আল্লাহ্র শপথ, بَلَى وَاللهِ হ্যাঁ আল্লাহ্র শপথ ইত্যাদি উপলক্ষে। [৬৬৬৩] (আ.প্র. ৪২৫২, ই.ফা. ৪২৫৫)
أَحْمَدُ ابْنُ أَبِيْ رَجَاءٍ حَدَّثَنَا النَّضْرُ عَنْ هِشَامٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ أَبَاهَا كَانَ لَا يَحْنَثُ فِيْ يَمِيْنٍ حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ كَفَّارَةَ الْيَمِيْنِ قَالَ أَبُوْ بَكْرٍ لَا أَرَى يَمِيْنًا أُرَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا إِلَّا قَبِلْتُ رُخْصَةَ اللهِ وَفَعَلْتُ الَّذِيْ هُوَ خَيْرٌ
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁর পিতা শপথই ভঙ্গ করতেন না। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা শপথ ভঙ্গের কাফ্ফারার বিধান অবতীর্ণ করলেন। আবূ বাক্র (রাঃ) বলেছেন, শপথকৃত কাজের উল্টোটি যদি আমি উত্তম ধারণা করি তবে আমি আল্লাহ প্রদত্ত সুযোগটি গ্রহণ করি এবং উত্তম কাজটি সম্পাদন করি। [৬৬২১] (আ.প্র. ৪২৫৩, ই.ফা. ৪২৫৬)
عَمْرُوْ بْنُ عَوْنٍ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ قَيْسٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا نَغْزُوْ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلَيْسَ مَعَنَا نِسَاءٌ فَقُلْنَا أَلَا نَخْتَصِيْ فَنَهَانَا عَنْ ذَلِكَ فَرَخَّصَ لَنَا بَعْدَ ذَلِكَ أَنْ نَتَزَوَّجَ الْمَرْأَةَ بِالثَّوْبِ ثُمَّ قَرَأَ {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تُحَرِّمُوْا طَيِّبٰتِ مَآ أَحَلَّ اللهُ لَكُمْ}.
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে যুদ্ধে বের হতাম, তখন আমাদের সঙ্গে স্ত্রীগণ থাকত না, তখন আমরা বলতাম আমরা কি খাসি হয়ে যাব না? তিনি আমাদেরকে এ থেকে নিষেধ করলেন এবং কাপড়ের বিনিময়ে হলেও মহিলাদেরকে বিয়ে করার অর্থাৎ নিকাহে মুত‘আর অনুমতি দিলেন এবং পাঠ করলেন ঃ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تُحَرِّمُوا طَيِّبَاتِ مَا أَحَلَّ اللهُ لَكُمْ। [৫০৭১, ৫০৭৫; মুসলিম ১৬/২, হাঃ ১৪০৪, আহমাদ ৪১১৩] (আ.প্র. ৪২৫৪, ই.ফা. ৪২৫৭)
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيْزِ قَالَ حَدَّثَنِيْ نَافِعٌ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ نَزَلَ تَحْرِيْمُ الْخَمْرِ وَإِنَّ فِي الْمَدِيْنَةِ يَوْمَئِذٍ لَخَمْسَةَ أَشْرِبَةٍ مَا فِيْهَا شَرَابُ الْعِنَبِ.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, মদ নিষিদ্ধ হওয়ার বিধান যখন নাযিল হল, তখন মাদীনাতে পাঁচ প্রকারের মদের রেওয়াজ ছিল, আঙ্গুরের পানিগুলো এর মধ্যে গণ্য ছিল না। [৫৫৭৯] (আ.প্র. ৪২৫৫, ই.ফা. ৪২৫৮)
يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ صُهَيْبٍ قَالَ قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ مَا كَانَ لَنَا خَمْرٌ غَيْرُ فَضِيخِكُمْ هَذَا الَّذِيْ تُسَمُّوْنَهُ الْفَضِيخَ فَإِنِّيْ لَقَائِمٌ أَسْقِيْ أَبَا طَلْحَةَ وَفُلَانًا وَفُلَانًا إِذْ جَاءَ رَجُلٌ فَقَالَ وَهَلْ بَلَغَكُمْ الْخَبَرُ فَقَالُوْا وَمَا ذَاكَ قَالَ حُرِّمَتْ الْخَمْرُ قَالُوْا أَهْرِقْ هَذِهِ الْقِلَالَ يَا أَنَسُ قَالَ فَمَا سَأَلُوْا عَنْهَا وَلَا رَاجَعُوْهَا بَعْدَ خَبَرِ الرَّجُلِ.
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, তোমরা যেটাকে ফাযীখ অর্থাৎ কাঁচা খুরমা ভিজানো পানি নাম রেখেছ সেই ফাযীখ ব্যতীত আমাদের অন্য কোন মদ ছিল না। একদিন আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আবূ ত্বলহা, অমুক এবং অমুককে তা পান করাচ্ছিলাম। তখনই এক ব্যক্তি এসে বলল, আপনাদের কাছে এ সংবাদ এসেছে কি? তাঁরা বললেন, ঐ সংবাদ কী? সে বলল, মদ হারাম করে দেয়া হয়েছে, তাঁরা বললেন, হে আনাস! এই বড় বড় মটকাগুলো থেকে মদ ঢেলে ফেলে দাও। আনাস (রাঃ) বললেন যে, এই ব্যক্তির সংবাদের পর তাঁরা এ ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেসও করেননি এবং দ্বিতীয়বার পানও করেননি। [২৪৬৪] (আ.প্র. ৪২৫৬, ই.ফা. ৪২৫৯)
صَدَقَةُ بْنُ الْفَضْلِ أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ عَمْرٍو عَنْ جَابِرٍ قَالَ صَبَّحَ أُنَاسٌ غَدَاةَ أُحُدٍ الْخَمْرَ فَقُتِلُوْا مِنْ يَوْمِهِمْ جَمِيْعًا شُهَدَاءَ وَذَلِكَ قَبْلَ تَحْرِيْمِهَا.
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উহূদের যুদ্ধের দিন ভোরে কিছু লোক মদ পান করেছিলেন এবং সেদিন তাঁরা সবাই শহীদ হয়েছেন। এই মদ্যপানের ঘটনা ছিল তা হারাম হওয়ার আগের ঘটনা। [২৮১৫] (আ.প্র. ৪২৫৭, ই.ফা. ৪২৬০)
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ الْحَنْظَلِيُّ أَخْبَرَنَا عِيْسَى وَابْنُ إِدْرِيْسَ عَنْ أَبِيْ حَيَّانَ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَلَى مِنْبَرِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ أَمَّا بَعْدُ أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّهُ نَزَلَ تَحْرِيْمُ الْخَمْرِ وَهْيَ مِنْ خَمْسَةٍ مِنْ الْعِنَبِ وَالتَّمْرِ وَالْعَسَلِ وَالْحِنْطَةِ وَالشَّعِيْرِ وَالْخَمْرُ مَا خَامَرَ الْعَقْلَ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, আমি ‘‘উমার (রাঃ)-কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মিম্বরে বসে বলতে শুনেছি যে, এরপর হে লোক সকল! মদপানের নিষেধাজ্ঞা অবতীর্ণ হয়েছে আর তা হচ্ছে পাঁচ প্রকার, খুরমা থেকে, আঙ্গুর থেকে, মধু থেকে, গম থেকে এবং যব থেকে আর মদ হচ্ছে যা সুস্থ বিবেককে আচ্ছন্ন করে ফেলে। [৫৫৮১, ৫৫৮৮, ৫৫৮৯, ৭৩৩৭] (আ.প্র. ৪২৫৮, ই.ফা. ৪২৬১)
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ حَدَّثَنَا ثَابِتٌ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ الْخَمْرَ الَّتِيْ أُهْرِيْقَتْ الْفَضِيخُ وَزَادَنِيْ مُحَمَّدٌ الْبِيْكَنْدِيُّ عَنْ أَبِي النُّعْمَانِ قَالَ كُنْتُ سَاقِيَ الْقَوْمِ فِيْ مَنْزِلِ أَبِيْ طَلْحَةَ فَنَزَلَ تَحْرِيْمُ الْخَمْرِ فَأَمَرَ مُنَادِيًا فَنَادَى فَقَالَ أَبُوْ طَلْحَةَ اخْرُجْ فَانْظُرْ مَا هَذَا الصَّوْتُ قَالَ فَخَرَجْتُ فَقُلْتُ هَذَا مُنَادٍ يُنَادِيْ أَلَا إِنَّ الْخَمْرَ قَدْ حُرِّمَتْ فَقَالَ لِي اذْهَبْ فَأَهْرِقْهَا قَالَ فَجَرَتْ فِيْ سِكَكِ الْمَدِيْنَةِ قَالَ وَكَانَتْ خَمْرُهُمْ يَوْمَئِذٍ الْفَضِيخَ فَقَالَ بَعْضُ الْقَوْمِ قُتِلَ قَوْمٌ وَهْيَ فِيْ بُطُوْنِهِمْ قَالَ فَأَنْزَلَا للهُ: {لَيْسَ عَلَى الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ جُنَاحٌ فِيْمَا طَعِمُوْآ}.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ঢেলে দেয়া মদগুলো ছিল ফাযীখ। আবূ নু‘মান থেকে মুহাম্মাদ ইবনু সাল্লাম আরও অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, আনাস (রাঃ) বলেছেন, আমি আবূ ত্বলহা (রাঃ)-এর ঘরে লোকেদেরকে মদ পান করাচ্ছিলাম, তখনই মদের নিষেধাজ্ঞা অবতীর্ণ হল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একজন ঘোষককে তা প্রচারের নির্র্দেশ দিলেন। এরপর সে ঘোষণা দিল। আবূ ত্বল্হা বললেন, বেরিয়ে দেখ তো শব্দ কিসের? আনাস (রাঃ) বলেন, আমি বেরুলাম এবং বললাম যে, একজন ঘোষক ঘোষণা দিচ্ছে যে, জেনে রাখ মদ হারাম করে দেয়া হয়েছে। এরপর তিনি আমাকে বললেন যাও, এগুলো সব ঢেলে দাও। আনাস (রাঃ) বলেন, সেদিন মাদীনাহ মনোওয়ারার রাস্তায় রাস্তায় মদের স্রোত প্রবাহিত হয়েছিল। তিনি বলেন, সে যুগে তাদের মদ ছিল ফাযীখ, তখন একজন বললেন, যাঁরা পেটে মদ নিয়ে শহীদ হয়েছেন তাঁদের কী অবস্থা হবে? তিনি বলেন, এরপর আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন لَيْسَ عَلَى الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جُنَاحٌ فِيمَا طَعِمُوا। [২৪৬৪] (আ.প্র. ৪২৫৯, ই.ফা. ৪২৬২)
مُنْذِرُ بْنُ الْوَلِيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْجَارُوْدِيُّ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مُوْسَى بْنِ أَنَسٍ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ خَطَبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم خُطْبَةً مَا سَمِعْتُ مِثْلَهَا قَطُّ قَالَ لَوْ تَعْلَمُوْنَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيْلًا وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيْرًا قَالَ فَغَطَّى أَصْحَابُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وُجُوْهَهُمْ لَهُمْ خَنِيْنٌ فَقَالَ رَجُلٌ مَنْ أَبِيْ قَالَ فُلَانٌ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ : {لَا تَسْأَلُوْا عَنْ أَشْيَآءَ إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ} رَوَاهُ النَّضْرُ وَرَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ عَنْ شُعْبَةَ.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এমন একটি খুতবা দিলেন যেমনটি আমি আর কখনো শুনিনি। তিনি বলেছেন, “আমি যা জানি তা যদি তোমরা জানতে তবে তোমরা হাসতে খুব কমই এবং অধিক অধিক করে কাঁদতে”। তিনি বলেন, সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) নিজ নিজ চেহারা আবৃত করে গুনগুন করে কাঁদতে শুরু করলেন, এরপর এক ব্যক্তি (‘আবদুল্লাহ ইবনু হুযাইফাহ বা অন্য কেউ) বলল, আমার পিতা কে? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “অমুক”। তখন এই আয়াত অবতীর্ণ হল لاَ تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ এই হাদীসটি শু’বাহ থেকে নযর এবং রাওহ ইবনু ‘উবাদাহ বর্ণনা করেছেন। [৯৩; মুসলিম ৪৩/৩৭, হাঃ ২৩৫৯] (আ.প্র. ৪২৬০, ই.ফা. ৪২৬৩)
الْفَضْلُ بْنُ سَهْلٍ حَدَّثَنَا أَبُو النَّضْرِ حَدَّثَنَا أَبُوْ خَيْثَمَةَ حَدَّثَنَا أَبُو الْجُوَيْرِيَةِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ قَوْمٌ يَسْأَلُوْنَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم اسْتِهْزَاءً فَيَقُوْلُ الرَّجُلُ مَنْ أَبِيْ وَيَقُوْلُ الرَّجُلُ تَضِلُّ نَاقَتُهُ أَيْنَ نَاقَتِيْ فَأَنْزَلَ اللهُ فِيْهِمْ هَذِهِ الْآيَةَ : {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْالَا تَسْأَلُوْا عَنْ أَشْيَآءَ إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ} حَتَّى فَرَغَ مِنَ الآيَةِ كُلِّهَا.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কিছু লোক ছিল তারা ঠাট্টা করে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে প্রশ্ন করত, কেউ বলত আমার পিতা কে? আবার কেউ বলত আমার উষ্ট্রী হারিয়ে গেছে তা কোথায়? তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেছেন ..... يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ। (আ.প্র. ৪২৬১, ই.ফা. ৪২৬৪)
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ قَالَ الْبَحِيْرَةُ الَّتِيْ يُمْنَعُ دَرُّهَا لِلطَّوَاغِيْتِ فَلَا يَحْلُبُهَا أَحَدٌ مِنْ النَّاسِ وَالسَّائِبَةُ كَانُوْا يُسَيِّبُوْنَهَا لِآلِهَتِهِمْ لَا يُحْمَلُ عَلَيْهَا شَيْءٌ قَالَ وَقَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَأَيْتُ عَمْرَو بْنَ عَامِرٍ الْخُزَاعِيَّ يَجُرُّ قُصْبَهُ فِي النَّارِ كَانَ أَوَّلَ مَنْ سَيَّبَ السَّوَائِبَ وَالْوَصِيْلَةُ النَّاقَةُ الْبِكْرُ تُبَكِّرُ فِيْ أَوَّلِ نِتَاجِ الإِبِلِ ثُمَّ تُثَنِّيْ بَعْدُ بِأُنْثَى وَكَانُوْا يُسَيِّبُوْنَهَا لِطَوَاغِيْتِهِمْ إِنْ وَصَلَتْ إِحْدَاهُمَا بِالْأُخْرَى لَيْسَ بَيْنَهُمَا ذَكَرٌ وَالْحَامِ فَحْلُ الإِبِلِ يَضْرِبُ الضِّرَابَ الْمَعْدُوْدَ فَإِذَا قَضَى ضِرَابَهُ وَدَعُوْهُ لِلطَّوَاغِيْتِ وَأَعْفَوْهُ مِنَ الْحَمْلِ فَلَمْ يُحْمَلْ عَلَيْهِ شَيْءٌ وَسَمَّوْهُ الْحَامِيَ و قَالَ لِيْ أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ سَمِعْتُ سَعِيْدًا قَالَ يُخْبِرُهُ بِهَذَا قَالَ وَقَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ وَرَوَاهُ ابْنُ الْهَادِ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيْدٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
সা‘ঈদ ইবনু মুসায়্যাব (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
الْبَحِيرَةُবাহীরা জন্তুর স্তন প্রতিমার উদ্দেশে সংরক্ষিত থাকে কেউ তা দোহন করে না। السَّائِبَةُসাইবা, যে জন্তু তারা তাদের উপাস্যের নামে ছেড়ে দিত এবং তা দিয়ে বোঝা বহন করা হত না। তিনি বলেন, আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন যে, আমি ‘আমর ইবনু আমির খুযায়ীকে জাহান্নামের মধ্যে দেখেছি সে তার নাড়িভুঁড়ি টানছে, সে-ই প্রথম ব্যক্তি যে সায়িবা প্রথা প্রথম চালু করে। وَالْوَصِيلَةُওয়াসীলাহ্, যে উষ্ট্রী প্রথমবারে মাদী বাচ্চা প্রসব করে এবং দ্বিতীয়বারেও মাদী বাচ্চা প্রসব করে, ঐ উষ্ট্রীকে তারা তাদের তাগূতের উদ্দেশে ছেড়ে দিত। وَالْحَامِহাম, নর উট যা দ্বারা কয়েকবার প্রজনন কার্য নেয়া হয়, প্রজনন কার্য সমাপ্ত হলে সেটাকে তারা তাদের প্রতিমার জন্যে ছেড়ে দেয় এবং বোঝা বহন থেকে ওটাকে মুক্তি দেয়। সেটির উপর কিছু বহন করা হয় না। এটাকে তারা ‘হাম’ নামে অভিহিত করত।
আমাকে আবুল ইয়ামান বলেছেন যে, শু‘আয়ব, ইমাম যুহরী (রহ.) থেকে আমাদেরকে অবহিত করেছেন, যুহরী বলেন, আমি সা‘ঈদ ইবনু মুসাইয়্যিব (রহ.) থেকে শুনেছি, তিনি তাকে এ ব্যাপারে অবহিত করেছেন। সা‘ঈদ ইবনু মুসাইয়্যিব বলেছেন, আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে এই রকম শুনেছি। ইবনু হাদ এটা বর্ণনা করেছেন ইবনু শিহাব থেকে। আর তিনি সা‘ঈদ থেকে, তিনি আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে যে, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে শুনেছি। [৩৫২১] (আ.প্র. ৪২৬২, ই.ফা. ৪২৬৫)
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِيْ يَعْقُوْبَ أَبُوْ عَبْدِ اللهِ الْكَرْمَانِيُّ حَدَّثَنَا حَسَّانُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا يُوْنُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَأَيْتُ جَهَنَّمَ يَحْطِمُ بَعْضُهَا بَعْضًا وَرَأَيْتُ عَمْرًا يَجُرُّ قُصْبَهُ وَهْوَ أَوَّلُ مَنْ سَيَّبَ السَّوَائِبَ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমি জাহান্নামকে দেখেছি যে, তার একাংশ অন্য অংশকে ভেঙ্গে ফেলছে বা আক্রমণ করছে, ‘আমরকে দেখেছি সে তার নাড়িভুঁড়ি টেনে নিয়ে হাঁটছে, সে-ই প্রথম ব্যক্তি যে ‘সায়ীবা’র রেওয়াজ চালু করেছিল। [১০৪৪] (আ.প্র. ৪২৬৩, ই.ফা. ৪২৬৬)
أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ أَخْبَرَنَا الْمُغِيْرَةُ بْنُ النُّعْمَانِ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيْدَ بْنَ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ خَطَبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّكُمْ مَحْشُوْرُوْنَ إِلَى اللهِ حُفَاةً عُرَاةً غُرْلًا ثُمَّ قَالَ : {كَمَا بَدَأْنَآ أَوَّلَ خَلْقٍ نُّعِيْدُه” ط وَعْدًا عَلَيْنَا ط إِنَّا كُنَّا فٰعِلِيْنَ} إِلَى آخِرِ الْآيَةِ ثُمَّ قَالَ : أَلَا وَإِنَّ أَوَّلَ الْخَلَائِقِ يُكْسَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِبْرَاهِيْمُ أَلَا وَإِنَّهُ يُجَاءُ بِرِجَالٍ مِنْ أُمَّتِيْ فَيُؤْخَذُ بِهِمْ ذَاتَ الشِّمَالِ فَأَقُوْلُ يَا رَبِّ أُصَيْحَابِيْ فَيُقَالُ إِنَّكَ لَا تَدْرِيْ مَا أَحْدَثُوْا بَعْدَكَ فَأَقُوْلُ كَمَا قَالَ الْعَبْدُ الصَّالِحُ : {وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيْدًا مَّا دُمْتُ فِيْهِمْ جفَلَمَّا تَوَفَّيْتَنِيْ كُنْتَ أَنْتَ الرَّقِيْبَ عَلَيْهِمْ} فَيُقَالُ : إِنَّ هَؤُلَاءِ لَمْ يَزَالُوْا مُرْتَدِّيْنَ عَلَى أَعْقَابِهِمْ مُنْذُ فَارَقْتَهُمْ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক দিন খুতবা দিলেন, বললেন, হে লোক সকল! তোমরা নগ্ন পদ, উলঙ্গ এবং খতনাবিহীন অবস্থায় আল্লাহ্র নিকট একত্রিত হবে, তারপর তিনি পড়লেন, كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ وَعْدًا عَلَيْنَا إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ যেভাবে আমি প্রথম সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব, প্রতিশ্রুতি পালন আমার কর্তব্য, আমি তা পালন করবই। আয়াতের শেষ পর্যন্ত। (সূরাহ আম্বিয়া ২১/১০৪)
তারপর তিনি বললেন, ক্বিয়ামাতের দিন সর্বপ্রথম যাকে বস্ত্র পরিধান করানো হবে তিনি হচ্ছেন ইবরাহীম (‘আ.)। তোমরা জেনে রাখ, আমার উম্মতের কতগুলো লোককে হাজির করা হবে এবং তাদেরকে বামদিকে অর্থাৎ জাহান্নামের দিকে দেয়া হবে। আমি তখন বলব, প্রভু হে! এগুলো তো আমার কতক সহাবী, তখন বলা হবে যে, আপনার পর তারা কী নবোদ্ভাবিত কাজ করেছে তা আপনি জানেন না।
এরপর পুণ্যবান বান্দা যেমন বলেছিলেন আমি তেমন বলব ঃ كُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيدًا مَا دُمْتُ فِيهِمْ فَلَمَّا تَوَفَّيْتَنِي كُنْتَ أَنْتَ الرَّقِيبَ عَلَيْهِمْ “আমি যতদিন তাদের ছিলাম ততদিন তাদের খোঁজখবর নিয়েছি, অতঃপর আপনি যখন আমাকে উঠিয়ে নিয়েছেন তখন থেকে আপনিই তাদের রক্ষক”।
এরপর বলা হবে আপনি তাদেরকে ছেড়ে আসার পর থেকে তারা পেছনে ফিরে গিয়ে ধর্মত্যাগী হয়েছে। [৩৩৪৯] (আ.প্র. ৪২৬৪, ই.ফা. ৪২৬৭)
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا الْمُغِيْرَةُ بْنُ النُّعْمَانِ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّكُمْ مَحْشُوْرُوْنَ وَإِنَّ نَاسًا يُؤْخَذُ بِهِمْ ذَاتَ الشِّمَالِ فَأَقُوْلُ كَمَا قَالَ الْعَبْدُ الصَّالِحُ. {وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيْدًا مَّا دُمْتُ فِيْهِمْ} إِلَى قَوْلِهِ {الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ}
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, তোমাদের উঠিয়ে একত্রিত করা হবে এবং কিছু সংখ্যক লোককে বাম দিকে নিয়ে যাওয়া হবে, তখন আমি নেককার বান্দার অর্থাৎ মূসা (‘আ.)-এর মতো বলব, وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيداً مَا دُمْتُ فِيهِمْ فَلَمَّا تَوَفَّيْتَنِي كُنْتَ أَنْتَ الرَّقِيبَ عَلَيْهِمْ وَأَنْتَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ - إِنْ تُعَذِّبْهُمْ فَإِنَّهُمْ عِبَادُكَ وَإِنْ تَغْفِرْ لَهُمْ فَإِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ “আমি যতদিন তাদের মাঝে ছিলাম, ততদিন তাদের খোঁজখবর নিয়েছি, তারপর যখন আপনি আমাকে উঠিয়ে নিয়েছেন তখন থেকে আপনিই তাদের তত্ত্বাবধায়ক। আপনি সব কিছুর ওপরে ক্ষমতাবান। আপনি যদি তাদেরকে শাস্তি দেন তাহলে তারা তো আপনার বান্দা। আর যদি তাদেরকে ক্ষমা করেন তাহলে আপনি পরাক্রমশালী ও সুবিজ্ঞ।” [৩৩৪৯] (আ.প্র. ৪২৬৫, ই.ফা. ৪২৬৮)
عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ خَمْسٌ {إِنَّ اللهَ عِنْدَه” عِلْمُ السَّاعَةِ ج وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ ج وَيَعْلَمُ مَا فِي الْأَرْحَامِ ط وَمَا تَدْرِيْ نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًا ط وَمَا تَدْرِيْ نَفْسٌمبِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوْتُ إِنَّ اللهَ عَلِيْمٌ خَبِيْرٌ }.
সালিম ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, অদৃশ্যের চাবি পাঁচটি “নিশ্চয় আল্লাহ্রই কাছে রয়েছে ক্বিয়ামাত সম্বন্ধীয় জ্ঞান এবং তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন, আর তিনিই জানেন যা কিছু আছে গর্ভাধারে। কেউ জানে না আগামীকাল সে কী উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না কোথায় তার মৃত্যু ঘটবে। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু জানেন, সব খবর রাখেন” (সূরাহ লুকমান ৩১/৩৪)। [১০৩৯] (আ.প্র. ৪২৬৬, ই.ফা. ৪২৬৯)
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ {قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلٰى أَنْ يَّبْعَثَ عَلَيْكُمْ عَذَابًا مِّنْ فَوْقِكُمْ} قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَعُوْذُ بِوَجْهِكَ قَالَ {أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ} قَالَ أَعُوْذُ بِوَجْهِكَ {أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ أَوْ يَلْبِسَكُمْ شِيَعًا وَّيُذِيْقَ بَعْضَكُمْ بَأْسَ بَعْضٍ} قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَذَا أَهْوَنُ أَوْ هَذَا أَيْسَرُ.
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন এই আয়াত قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلَى أَنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عَذَابًا مِنْ فَوْقِكُمْ অবতীর্ণ হল তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি, আবার যখন أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ অবতীর্ণ হল, তখনও বললেন, আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি এবং যখন أَوْ يَلْبِسَكُمْ شِيَعًا وَيُذِيقَ بَعْضَكُمْ بَأْسَ بَعْضٍ অবতীর্ণ হল তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটা অপেক্ষাকৃত হালকা, তিনি هَذَا أَهْوَنُ কিংবা هَذَا أَيْسَرُ বলেছেন। [৭৩১৩, ৭৪০৬] (আ.প্র. ৪২৬৭, ই.ফা. ৪২৭০)
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ عَدِيٍّ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ {وَلَمْ يَلْبِسُوْآ إِيْمَانَهُمْ بِظُلْمٍ} قَالَ أَصْحَابُهُ وَأَيُّنَا لَمْ يَظْلِمْ فَنَزَلَتْ {إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيْمٌ}.
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ আয়াত অবতীর্ণ হল, তখন তাঁর সহাবাগণ বললেন, “যুল্ম করেনি আমাদের মধ্যে এমন কোন্ ব্যক্তি আছে?” এরপর অবতীর্ণ হল إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ “নিশ্চয় র্শিক মহা যুল্ম” (সূরাহ লুক্বমান ৩১/১৩)। [৩২] (আ.প্র. ৪২৬৮, ই.ফা. ৪২৭১)
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ مَهْدِيٍّ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ عَمِّ نَبِيِّكُمْ يَعْنِي ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا يَنْبَغِيْ لِعَبْدٍ أَنْ يَقُوْلَ أَنَا خَيْرٌ مِنْ يُوْنُسَ بْنِ مَتَّى.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, “আমি ইউনুস ইবনু মাত্তা থেকে উত্তম” এমন কথা বলা কারও জন্যে শোভনীয় নয়। [৩৩৯৫] (আ.প্র. ৪২৬৯, ই.ফা. ৪২৭২)
آدَمُ بْنُ أَبِيْ إِيَاسٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ أَخْبَرَنَا سَعْدُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ سَمِعْتُ حُمَيْدَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا يَنْبَغِيْ لِعَبْدٍ أَنْ يَقُوْلَ أَنَا خَيْرٌ مِنْ يُوْنُسَ بْنِ مَتَّى.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, “আমি ইউনুস ইবনু মাত্তা (‘আ.) থেকে উত্তম”, এমন কথা বলা কারো জন্য শোভনীয় নয়। [৩৪১৫] (আ.প্র. ৪২৭০, ই.ফা. ৪২৭৩)
عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ حَبِيْبٍ قَالَ عَطَاءٌ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ قَاتَلَ اللهُ الْيَهُوْدَ لَمَّا حَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِمْ شُحُوْمَهَا جَمَلُوْهُ ثُمَّ بَاعُوْهُ فَأَكَلُوْهَا وَقَالَ أَبُوْ عَاصِمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيْدِ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ كَتَبَ إِلَيَّ عَطَاءٌ سَمِعْتُ جَابِرًا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদেরকে অভিসম্পাত করেছেন, যখন তিনি তাদের উপর চর্বি নিষিদ্ধ করেছেন তখন তারা ওটাকে তরল করে জমা করেছে, তারপর বিক্রি করে তার মূল্য ভক্ষণ করেছে। আবূ আসিম (রহ.) ......... হাদীস বর্ণনা করেছেন জাবির (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে। [২২৩৬] (আ.প্র. ৪২৭২, ই.ফা. ৪২৭৫)
حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَمْرٍو عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَا أَحَدَ أَغْيَرُ مِنْ اللهِ وَلِذَلِكَ حَرَّمَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَلَا شَيْءَ أَحَبُّ إِلَيْهِ الْمَدْحُ مِنْ اللهِ وَلِذَلِكَ مَدَحَ نَفْسَهُ قُلْتُ سَمِعْتَهُ مِنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ نَعَمْ قُلْتُ وَرَفَعَهُ قَالَ نَعَمْ
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নিষিদ্ধ কার্যে মু’মিনদেরকে বাধা দানকারী আল্লাহ্র চেয়ে অধিক কেউ নেই, এজন্যই প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য যাবতীয় অশ্লীলতা নিষিদ্ধ করেছেন, আল্লাহ্র প্রশংসা প্রকাশ করার চেয়ে প্রিয় তাঁর কাছে অন্য কিছু নেই, সেজন্যেই আল্লাহ আপন প্রশংসা নিজেই করেছেন।
‘আম্র ইবনু মুররাহ্ (রহ.) বলেন, আমি আবূ ওয়ায়িলকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি তা ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ থেকে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, এটাকে কি তিনি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বাণী হিসেবে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। [৪৬৩৭, ৫২২০, ৭৪০৩; মুসলিম ৪৯/৬, হাঃ ২৭৬০, আহমাদ ৩৬১৬] (আ.প্র. ৪২৭৩, ই.ফা. ৪২৭৬)
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا عُمَارَةُ حَدَّثَنَا أَبُوْ زُرْعَةَ حَدَّثَنَا أَبُوْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَا تَقُوْمُ السَّاعَةُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا فَإِذَا رَآهَا النَّاسُ آمَنَ مَنْ عَلَيْهَا فَذَاكَ حِيْنَ لَا يَنْفَعُ نَفْسًا إِيْمَانُهَا لَمْ تَكُنْ آمَنَتْ مِنْ قَبْلُ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়ের পূর্ব পর্যন্ত ক্বিয়ামাত অনুষ্ঠিত হবে না। লোকেরা যখন তা দেখবে, তখন পৃথিবীর সকলে ঈমান আনবে এবং সেটি হচ্ছে এমন সময় “পূর্বে ঈমান আনেনি এমন ব্যক্তির ঈমান তার কাজে আসবে না”। [৮৫; মুসলিম ৪/৭২, হাঃ ১৫৭, আহমাদ ৭১৬৪] (আ.প্র. ৪২৭৪, ই.ফা. ৪২৭৭)
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ هَمَّامٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَا تَقُوْمُ السَّاعَةُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا فَإِذَا طَلَعَتْ وَرَآهَا النَّاسُ آمَنُوْا أَجْمَعُوْنَ وَذَلِكَ حِيْنَ لَا يَنْفَعُ نَفْسًا إِيْمَانُهَا ثُمَّ قَرَأَ الآيَةَ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যতক্ষণ না পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয় ঘটবে ততক্ষণ ক্বিয়ামাত হবে না, যখন সেদিক থেকে সূর্য উদিত হবে এবং লোকেরা তা দেখবে তখন সবাই ঈমান গ্রহণ করবে, এটাই সময় যখন কোন ব্যক্তিকে তার ঈমান কল্যাণ সাধন করবে না। তারপর তিনি আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন। [৮৫] (আ.প্র. ৪২৭৫, ই.ফা. ৪২৭৮)
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قُلْتُ أَنْتَ سَمِعْتَ هَذَا مِنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ نَعَمْ وَرَفَعَهُ قَالَ لَا أَحَدَ أَغْيَرُ مِنْ اللهِ فَلِذَلِكَ حَرَّمَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَلَا أَحَدَ أَحَبُّ إِلَيْهِ الْمِدْحَةُ مِنْ اللهِ فَلِذَلِكَ مَدَحَ نَفْسَهُ.
‘আম্র ইবনু মুররাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ ওয়ায়িলকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি এটা ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ এবং তিনি এটাকে মারফু‘ হাদীস হিসেবে বর্ণনা করেছেন। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, অন্যায়কে ঘৃণাকারী আল্লাহ্র তুলনায় অন্য কেউ নেই, এজন্যেই তিনি প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য যাবতীয় অশ্লীলতা নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন, আবার আল্লাহ্র চেয়ে প্রশংসা-প্রীতি অন্য কারো নেই, তাই তিনি নিজে নিজের প্রশংসা করেছেন। [৪৬৩৪] (আ.প্র. ৪২৭৬, ই.ফা. ৪২৭৯)
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى الْمَازِنِيِّ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ مِنَ الْيَهُوْدِ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَدْ لُطِمَ وَجْهُهُ وَقَالَ يَا مُحَمَّدُ إِنَّ رَجُلًا مِنْ أَصْحَابِكَ مِنَ الْأَنْصَارِ لَطَمَ فِيْ وَجْهِيْ قَالَ ادْعُوْهُ فَدَعَوْهُ قَالَ لِمَ لَطَمْتَ وَجْهَهُ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ مَرَرْتُ بِالْيَهُوْدِ فَسَمِعْتُهُ يَقُوْلُ وَالَّذِي اصْطَفَى مُوْسَى عَلَى الْبَشَرِ فَقُلْتُ وَعَلَى مُحَمَّدٍ وَأَخَذَتْنِيْ غَضْبَةٌ فَلَطَمْتُهُ قَالَ لَا تُخَيِّرُوْنِيْ مِنْ بَيْنِ الْأَنْبِيَاءِ فَإِنَّ النَّاسَ يَصْعَقُوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَأَكُوْنُ أَوَّلَ مَنْ يُفِيْقُ فَإِذَا أَنَا بِمُوْسَى آخِذٌ بِقَائِمَةٍ مِنْ قَوَائِمِ الْعَرْشِ فَلَا أَدْرِيْ أَفَاقَ قَبْلِيْ أَمْ جُزِيَ بِصَعْقَةِ الطُّوْرِ
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ইয়াহূদী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দরবারে উপস্থিত হল। তার মুখমণ্ডলে চপেটাঘাত খেয়ে সে বলল, হে মুহাম্মাদ! আপনার এক আনসারী সহাবী আমার মুখমণ্ডলে চপেটাঘাত করেছে। তিনি বললেন, তাকে ডেকে আন। তারা ওকে ডেকে আনল, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “একে চপেটাঘাত করেছ কেন?” সে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি এই ইয়াহূদীর পার্শ্ব দিয়ে অতিক্রম করছিলাম। তখন শুনলাম সে বলছে তাঁরই শপথ যিনি মূসা (‘আ.)-কে মানবজাতির উপর মনোনীত করেছেন, আমি বললাম মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপরও মনোনীত করেছেন কি? এরপর আমার রাগ চেপে গিয়েছিল, তাই তাকে চপেটাঘাত করেছি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা আমাকে অন্যান্য নাবীর থেকে উত্তম বলো না। কারণ ক্বিয়ামাত দিবসে সব মানুষই জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়বে, সর্বপ্রথম আমিই জ্ঞান ফিরে পাব। তিনি বলেন, তখন আমি দেখব যে, মূসা (‘আ.) আকাশের খুঁটি ধরে আছেন, আমি বুঝতে পারব না যে, তিনি কি আমার পূর্বে জ্ঞান ফিরে পেয়েছেন নাকি তূর পর্বতের জ্ঞানশূন্যতার পুরস্কার হিসেবে তাঁকে পুনরায় জ্ঞানশূন্য করা হয়নি। [২৪১২] (আ.প্র. ৪২৭৭, ই.ফা. ৪২৮০)
مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ عَنْ عَمْرِو بْنِ حُرَيْثٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ زَيْدٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْكَمْأَةُ مِنَ الْمَنِّ وَمَاؤُهَا شِفَاءُ الِلْعَيْنِ.
সা‘ঈদ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, الْكَمْأَةُ জাতীয় উদ্ভিদ মান্না-এর মতো এবং এর পানি চক্ষুরোগ আরোগ্যকারী। [৪৪৭৮] (আ.প্র. ৪২৭৮, ই.ফা. ৪২৮১)
عَبْدُ اللهِ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَمُوْسَى بْنُ هَارُوْنَ قَالَا حَدَّثَنَا الْوَلِيْدُ بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ الْعَلَاءِ بْنِ زَبْرٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ بُسْرُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ إِدْرِيْسَ الْخَوْلَانِيُّ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا الدَّرْدَاءِ يَقُوْلُ كَانَتْ بَيْنَ أَبِيْ بَكْرٍ وَعُمَرَ مُحَاوَرَةٌ فَأَغْضَبَ أَبُوْ بَكْرٍ عُمَرَ فَانْصَرَفَ عَنْهُ عُمَرُ مُغْضَبًا فَاتَّبَعَهُ أَبُوْ بَكْرٍ يَسْأَلُهُ أَنْ يَسْتَغْفِرَ لَهُ فَلَمْ يَفْعَلْ حَتَّى أَغْلَقَ بَابَهُ فِيْ وَجْهِهِ فَأَقْبَلَ أَبُوْ بَكْرٍ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَبُو الدَّرْدَاءِ وَنَحْنُ عِنْدَهُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَّا صَاحِبُكُمْ هَذَا فَقَدْ غَامَرَ قَالَ وَنَدِمَ عُمَرُ عَلَى مَا كَانَ مِنْهُ فَأَقْبَلَ حَتَّى سَلَّمَ وَجَلَسَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَصَّ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْخَبَرَ قَالَ أَبُو الدَّرْدَاءِ وَغَضِبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَجَعَلَ أَبُوْ بَكْرٍ يَقُوْلُ وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ لَأَنَا كُنْتُ أَظْلَمَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَلْ أَنْتُمْ تَارِكُوْنَ لِيْ صَاحِبِيْ هَلْ أَنْتُمْ تَارِكُوْنَ لِيْ صَاحِبِيْ إِنِّيْ قُلْتُ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَيْكُمْ جَمِيْعًا فَقُلْتُمْ كَذَبْتَ وَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ صَدَقْتَ
قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ غَامَرَ سَبَقَ بِالْخَيْرِ
আবূ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আবূ বাক্র (রাঃ) ও ‘উমার (রাঃ)-এর মধ্যে বিতর্ক হল, আবূ বাক্র (রাঃ) ‘উমার (রাঃ)-কে রাগিয়ে দিয়েছিলেন, এরপর রাগানি¦ত অবস্থায় ‘উমার (রাঃ) সেখান থেকে চলে গেলেন, আবূ বাক্র (রাঃ) তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে করতে তাঁর পিছু নিলেন কিন্তু ‘উমার (রাঃ) ক্ষমা করলেন না, বরং তাঁর সম্মুখের দরজা বন্ধ করে দিলেন। এরপর আবূ বাক্র (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দরবারে আসলেন। আবূ দারদা (রাঃ) বলেন, আমরা তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে ছিলাম, ঘটনা শোনার পর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তোমাদের এই সঙ্গী আবূ বাক্র আগে কল্যাণ লাভ করেছে। তিনি বলেন, এতে ‘উমার লজ্জিত হলেন এবং সালাম করে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পাশে বসে পড়লেন ও সবকথা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে বর্ণনা করলেন। আবূ দারদা (রাঃ) বলেন, এতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অসন্তুষ্ট হলেন। আবূ বাক্র সিদ্দীক (রাঃ) বারবার বলছিলেন, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমি অধিক দোষী ছিলাম। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা আমার খাতিরে আমার সাথীর ত্রুটি উপেক্ষা করবে কি? তোমরা আমার খাতিরে আমার সঙ্গীর ত্রুটি উপেক্ষা করবে কি? এমন একদিন ছিল যখন আমি বলেছিলাম, “হে মানুষেরা! আমি তোমাদের সকলের জন্য রসূল, তখন তোমরা বলেছিলে, “তুমি মিথ্যা বলেছ” আর আবূ বাক্র (রাঃ) বলেছিল, “আপনি সত্য বলেছেন”।
ইমাম আবূ ‘আবদুল্লাহ বুখারী (রহ.) বলেন, غَامَرَআগে কল্যাণ লাভ করেছে। [৩৬৬১] (আ.প্র. ৪২৭৯, ই.ফা. ৪২৮২)
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قِيْلَ لِبَنِيْ إِسْرَائِيْلَ {وَّادْخُلُوا الْبَابَ سُجَّدًا وَّقُوْلُوْا حِطَّةٌ نَّغْفِرْ لَكُمْ خَطٰيٰكُمْ} فَبَدَّلُوْا فَدَخَلُوْا يَزْحَفُوْنَ عَلَى أَسْتَاهِهِمْ وَقَالُوْا حَبَّةٌ فِيْ شَعَرَةٍ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ইসরাঈলীদেরকে আদেশ করা হয়েছিল যে, “নতশিরে প্রবেশ কর এবং বল, ক্ষমা চাই, আমি তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করব” (সূরাহ আল-‘আরাফ ১৫৮)। এরপর তারা তার উল্টো করল, তারা নিজেদের নিতম্বে ভর দিয়ে মাটিতে বসে বসে প্রবেশ করল এবং বলল, حَبَّةٌ فِي شَعَرَةٍ যবের ভিতর বিচি চাই। [৩৪০৩) (আ.প্র. ৪২৮০, ই.ফা. ৪২৮৩)
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَدِمَ عُيَيْنَةُ بْنُ حِصْنِ بْنِ حُذَيْفَةَ فَنَزَلَ عَلَى ابْنِ أَخِيْهِ الْحُرِّ بْنِ قَيْسٍ وَكَانَ مِنْ النَّفَرِ الَّذِيْنَ يُدْنِيْهِمْ عُمَرُ وَكَانَ الْقُرَّاءُ أَصْحَابَ مَجَالِسِ عُمَرَ وَمُشَاوَرَتِهِ كُهُوْلًا كَانُوْا أَوْ شُبَّانًا فَقَالَ عُيَيْنَةُ لِابْنِ أَخِيْهِ يَا ابْنَ أَخِيْ هَلْ لَكَ وَجْهٌ عِنْدَ هَذَا الْأَمِيْرِ فَاسْتَأْذِنْ لِيْ عَلَيْهِ قَالَ سَأَسْتَأْذِنُ لَكَ عَلَيْهِ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَاسْتَأْذَنَ الْحُرُّ لِعُيَيْنَةَ فَأَذِنَ لَهُ عُمَرُ فَلَمَّا دَخَلَ عَلَيْهِ قَالَ هِيْ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ فَوَاللهِ مَا تُعْطِيْنَا الْجَزْلَ وَلَا تَحْكُمُ بَيْنَنَا بِالْعَدْلِ فَغَضِبَ عُمَرُ حَتَّى هَمَّ أَنْ يُوْقِعَ بِهِ فَقَالَ لَهُ الْحُرُّ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ إِنَّ اللهَ تَعَالَى قَالَ لِنَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم {خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الْجَاهِلِيْنَ}وَإِنَّ هَذَا مِنَ الْجَاهِلِيْنَ وَاللهِ مَا جَاوَزَهَا عُمَرُ حِيْنَ تَلَاهَا عَلَيْهِ وَكَانَ وَقَّافًا عِنْدَ كِتَابِ اللهِ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, “উয়াইনাহ ইবনু হিস্ন ইবনু হুযাইফাহ এসে তাঁর ভাতিজা হুর ইবনু কাইসের কাছে অবস্থান করলেন। ‘উমার (রাঃ) যাদেরকে পার্শ্বে রাখতেন হুর ছিলেন তাদের একজন। কারীগণ, যুবক-বৃদ্ধ সকলেই ‘উমার ফারূক (রাঃ)-এর মজলিসের সদস্য এবং উপদেষ্টা ছিলেন। এরপর ‘উয়াইনাহ তাঁর ভাতিজাকে ডেকে বললেন, এই আমীরের কাছে তো তোমার একটা মর্যাদা আছে, সুতরাং তুমি আমার জন্য তাঁর কাছে প্রবেশের অনুমতি নিয়ে দাও। তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমি তাঁর কাছে আপনার প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করব।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এরপর হুর অনুমতি প্রার্থনা করলেন উয়াইনাহর জন্যে এবং ‘উমার (রাঃ) অনুমতি দিলেন। উয়াইনাহ ‘উমারের কাছে গিয়ে বললেন, হ্যাঁ আপনি তো আমাদেরকে অধিক অধিক দানও করেন না এবং আমাদের মাঝে সুবিচারও করেন না। ‘উমার (রাঃ) রাগানি¦ত হলেন এবং তাঁকে কিছু একটা করতে উদ্যত হলেন। তখন হুর বললেন, হে আমিরুল মু’মিনীন! আল্লাহ তা‘আলা তো তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলেছেন, “ক্ষমা অবলম্বন কর, সৎকাজের আদেশ দাও এবং মূর্খদেরকে উপেক্ষা কর” আর এই ব্যক্তি তো অবশ্যই মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ্র কসম ‘উমার (রাঃ) আয়াতের নির্দেশ অমান্য করেননি। ‘উমার আল্লাহ্র কিতাবের বিধানের সামনে চুপ হয়ে যেতেন। [৭২৮৬] (আ.প্র. ৪২৮১, ই.ফা. ৪২৮৪)
يَحْيَى حَدَّثَنَا وَكِيْعٌ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ {خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ} قَالَ مَا أَنْزَلَ اللهُ إِلَّا فِيْ أَخْلَاقِ النَّاسِ
‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
خُذْ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ আয়াতটি আল্লাহ তা‘আলা মানুষের চরিত্র সম্পর্কেই অবতীর্ণ করেছেন। [৪৬৪৪] (আ.প্র. ৪২৮২, ই.ফা. ৪২৮৫)
وَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ بَرَّادٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ قَالَ أَمَرَ اللهُ نَبِيَّهُ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَأْخُذَ الْعَفْوَ مِنْ أَخْلَاقِ النَّاسِ أَوْ كَمَا قَالَ.
‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে মানুষের আচরণের ব্যাপারে ক্ষমা অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছেন। [৪৬৪৩] (আ.প্র. ৪২৮৩, ই.ফা. ৪২৮৫ শেষাংশ)
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيْمِ حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ سُلَيْمَانَ أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ أَخْبَرَنَا أَبُوْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ قُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا سُوْرَةُ الْأَنْفَالِ قَالَ نَزَلَتْ فِيْ بَدْرٍ {الشَّوْكَةُ} الْحَدُّ {مُرْدَفِيْنَ} فَوْجًا بَعْدَ فَوْجٍ رَدِفَنِيْ وَأَرْدَفَنِيْ جَاءَ بَعْدِيْ {ذُوْقُوْا} بَاشِرُوْا وَجَرِّبُوْا وَلَيْسَ هَذَا مِنْ ذَوْقِ الْفَمِ {فَيَرْكُمَهُ} يَجْمَعَهُ {شَرِّدْ} فَرِّقْ {وَإِنْ جَنَحُوْا} طَلَبُوا السِّلْمُ وَالسَّلْمُ وَالسَّلَامُ وَاحِدٌ {يُثْخِنَ} يَغْلِبَ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {مُكَاءً} إِدْخَالُ أَصَابِعِهِمْ فِيْ أَفْوَاهِهِمْ {وَتَصْدِيَةً} الصَّفِيْرُ {لِيُثْبِتُوْكَ} لِيَحْبِسُوْكَ.
সা‘ঈদ ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম সূরাহ আল-আনফাল সম্পর্কে, তিনি বললেন, বাদরের যুদ্ধ সম্পর্কে নাযিল হয়েছে।
الشَّوْكَةُ-الْحَدُّশক্তি, مُرْدَفِينَএকদল সৈন্যের পর আরেক দল, رَدِفَنِي এবং أَرْدَفَنِي আমার পেছন পেছন এসেছে, ذُوقُواসরাসরি জড়িয়ে পড় এবং অভিজ্ঞতা অর্জন কর, মুখে আস্বাদন করা হয়, فَيَرْكُمَهُএরপর তাকে একত্রিত করবেন, شَرِّدْবিচ্ছিন্ন করে দাও, وَإِنْ جَنَحُواযদি তারা চায়, السِّلْمُ، السِّلْمُ এবং السَّلاَمُএকই অর্থ সন্ধি, يُثْخِنَজয়ী হওয়া, মুফাস্সির মুজাহিদ বলেন, مُكَاءًতাদের অঙ্গুলিসমূহ মুখে ঢুকিয়ে দেয়া, শিস দেয়া, تَصْدِيَةًকরতালি, لِيُثْبِتُوكَতোমাকে আটকে রাখার জন্যে। [৪০২৯] (আ.প্র. ৪২৮৪, ই.ফা. ৪২৮৬)
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ عَنْ ابْنِ أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ {إِنَّ شَرَّ الدَّوَآبِّ عِنْدَ اللهِ الصُّمُّ الْبُكْمُ الَّذِيْنَ لَا يَعْقِلُوْنَ} قَالَ هُمْ نَفَرٌ مِنْ بَنِيْ عَبْدِ الدَّارِ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
إِنَّ شَرَّ الدَّوَابِّ عِنْدَ اللهِ الصُّمُّ الْبُكْمُ الَّذِينَ لاَ يَعْقِلُونَ সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, তারা হচ্ছে বানী আবদুদ্দার গোষ্ঠীর একটি দল। (আ.প্র. ৪২৮৫, ই.ফা. ৪২৮৭)
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا رَوْحٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ سَمِعْتُ حَفْصَ بْنَ عَاصِمٍ يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُعَلَّى رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنْتُ أُصَلِّيْ فَمَرَّ بِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَدَعَانِيْ فَلَمْ آتِهِ حَتَّى صَلَّيْتُ ثُمَّ أَتَيْتُهُ فَقَالَ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَأْتِيَ أَلَمْ يَقُلْ اللهُ {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِيْبُوْا لِلهِ وَلِلرَّسُوْلِ إِذَا دَعَاكُمْ} ثُمَّ قَالَ لَأُعَلِّمَنَّكَ أَعْظَمَ سُوْرَةٍ فِي الْقُرْآنِ قَبْلَ أَنْ أَخْرُجَ فَذَهَبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِيَخْرُجَ فَذَكَرْتُ لَهُ.
وَقَالَ مُعَاذٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ سَمِعَ حَفْصًا سَمِعَ أَبَا سَعِيْدٍ رَجُلًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا وَقَالَ هِيَ الْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ السَّبْعُ الْمَثَانِي.
আবূ সা‘ঈদ ইবনু মুয়াল্লা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একদা সলাতে রত ছিলাম, এমন সময় রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার পাশ দিয়ে গেলেন এবং আমাকে ডাকলেন। সলাত শেষ না করা পর্যন্ত আমি তাঁর কাছে যাইনি, তারপর গেলাম। তিনি বললেন, তোমাকে আসতে বাধা দিল কিসে? আল্লাহ কি বলেননি “রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমাদেরকে ডাকলে। আল্লাহ ও রসূলের ডাকে সাড়া দেবে?” তারপর তিনি বললেন, আমি মাসজিদ থেকে বের হবার পূর্বে তোমাকে একটি অতি সওয়াবযুক্ত সূরাহ শিক্ষা দেব। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন আমি তাঁর নিকট প্রতিশ্র“তির কথা স্মরণ করিয়ে দিলাম।
মু‘আয বললেন, ...... হাফ্স শুনেছেন একজন সহাবী আবূ সা‘ঈদ ইবনুল মু‘আল্লাকে এই হাদীস বর্ণনা করতে, রসূল বললেনসেই সূরাটি হচ্ছে الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ সাত আয়াতবিশিষ্ট ও পুনঃ পুনঃ পঠিত। [৪৪৭৪] (আ.প্র. ৪২৮৬, ই.ফা. ৪২৮৮)
أَحْمَدُ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُعَاذٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ الْحَمِيْدِ هُوَ ابْنُ كُرْدِيْدٍ صَاحِبُ الزِّيَادِيِّ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَبُوْ جَهْلٍ {اللّٰهُمَّ إِنْ كَانَ هٰذَا هُوَ الْحَقَّ مِنْ عِنْدِكَ فَأَمْطِرْ عَلَيْنَا حِجَارَةً مِّنَ السَّمَآءِ أَوِ ائْتِنَا بِعَذَابٍ أَلِيْمٍ} فَنَزَلَتْ {وَمَا كَانَ اللهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيْهِمْ ط وَمَا كَانَ اللهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُوْنَ (33) وَمَا لَهُمْ أَلَّا يُعَذِّبَهُمُ اللهُ وَهُمْ يَصُدُّوْنَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ} الْآيَةَ.
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ জাহল বলেছিল, “হে আল্লাহ! এটা যদি তোমার পক্ষ থেকে সত্য হয়, তবে আমাদের উপর আকাশ হতে প্রস্তর বর্ষণ কর কিংবা আমাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তি দাও।” তখনই অবতীর্ণ হল وَمَا كَانَ اللهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيهِمْ وَمَا كَانَ اللهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ وَمَا لَهُمْ أَنْ لاَ يُعَذِّبَهُمْ اللهُ وَهُمْ يَصُدُّونَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ الْآيَةَ “আর আল্লাহ্ তো এরূপ নন যে, তিনি তাদের শাস্তি দেবেন অথচ আপনি তাদের মধ্যে থাকবেন এবং আল্লাহ্ এমনও নন যে, তিনি তাদের শাস্তি দেবেন অথচ তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে। আর তাদের এমন কী আছে যে জন্য আল্লাহ্ তাদের শাস্তি দেবেন না, অথচ তারা মাসজিদে হারামে যেতে বাধা প্রদান করে? আর তারা সে মাসজিদের তত্ত্বাবধায়কও নয়। তার তত্ত্বাবধায়ক তো মুত্তাকীরা ব্যতীত আর কেউ নয়। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না” (সূরাহ আনফাল ৮/৩৩-৩৪)। [৪৬৪৯; মুসলিম ৫০/৫, হাঃ ২৭৯৬] (আ.প্র. ৪২৮৭, ই.ফা. ৪২৮৯)
مُحَمَّدُ بْنُ النَّضْرِ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُعَاذٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ الْحَمِيْدِ صَاحِبِ الزِّيَادِيِّ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ قَالَ قَالَ أَبُوْ جَهْلٍ {اللّٰهُمَّ إِنْ كَانَ هٰذَا هُوَ الْحَقَّ مِنْ عِنْدِكَ فَأَمْطِرْ عَلَيْنَا حِجَارَةً مِّنَ السَّمَآءِ أَوِ ائْتِنَا بِعَذَابٍ أَلِيْمٍ} فَنَزَلَتْ {وَمَا كَانَ اللهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيْهِمْ ط وَمَا كَانَ اللهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُوْنَ (33) وَمَا لَهُمْ أَلَّا يُعَذِّبَهُمُ اللهُ وَهُمْ يَصُدُّوْنَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ} الْآيَةَ.
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ জাহল বলেছিল। এরপর অবতীর্ণ হল وَمَا كَانَ اللهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيهِمْ وَمَا كَانَ اللهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ وَمَا لَهُمْ أَنْ لاَ يُعَذِّبَهُمْ اللهُ وَهُمْ يَصُدُّونَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ الْآيَةَ “হে আল্লাহ! যদি এ কুরআন তোমার পক্ষ থেকে সত্য হয় তাহলে আমাদের উপর আসমান থেকে প্রস্তর বর্ষণ কর অথবা দাও আমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আর আল্লাহ্ তো এরূপ নন যে, তিনি তাদের শাস্তি দেবেন অথচ আপনি তাদের মধ্যে থাকবেন এবং আল্লাহ্ এমনও নন যে, তিনি তাদের শাস্তি দেবেন অথচ তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে। আর তাদের এমন কী আছে যে জন্য আল্লাহ্ তাদের শাস্তি দেবেন না, অথচ তারা মাসজিদে হারামে যেতে বাধা প্রদান করে?” (সূরা আনফাল ৮/৩২-৩৪) [৪৬৪৮] (আ.প্র. ৪২৮৮, ই.ফা. ৪২৯০)
الْحَسَنُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيْزِ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا حَيْوَةُ عَنْ بَكْرِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ بُكَيْرٍ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَجُلًا جَاءَهُ فَقَالَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَلَا تَسْمَعُ مَا ذَكَرَ اللهُ فِيْ كِتَابِهِ {وَإِنْ طَآئِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ اقْتَتَلُوْا} إِلَى آخِرِ الآيَةِ فَمَا يَمْنَعُكَ أَنْ لَا تُقَاتِلَ كَمَا ذَكَرَ اللهُ فِيْ كِتَابِهِ فَقَالَ يَا ابْنَ أَخِيْ أَغْتَرُّ بِهَذِهِ الْآيَةِ وَلَا أُقَاتِلُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَغْتَرَّ بِهَذِهِ الْآيَةِ الَّتِيْ يَقُوْلُ اللهُ تَعَالَى {وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا} إِلَى آخِرِهَا قَالَ فَإِنَّ اللهَ يَقُوْلُ{وَقَاتِلُوْهُمْ حَتّٰى لَا تَكُوْنَ فِتْنَةٌ} قَالَ ابْنُ عُمَرَ قَدْ فَعَلْنَا عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ كَانَ الإِسْلَامُ قَلِيْلًا فَكَانَ الرَّجُلُ يُفْتَنُ فِيْ دِيْنِهِ إِمَّا يَقْتُلُوْنَهُ وَإِمَّا يُوْثِقُوْنَهُ حَتَّى كَثُرَ الإِسْلَامُ فَلَمْ تَكُنْ فِتْنَةٌ فَلَمَّا رَأَى أَنَّهُ لَا يُوَافِقُهُ فِيْمَا يُرِيْدُ قَالَ فَمَا قَوْلُكَ فِيْ عَلِيٍّ وَعُثْمَانَ قَالَ ابْنُ عُمَرَ مَا قَوْلِيْ فِيْ عَلِيٍّ وَعُثْمَانَ أَمَّا عُثْمَانُ فَكَانَ اللهُ قَدْ عَفَا عَنْهُ فَكَرِهْتُمْ أَنْ يَعْفُوَ عَنْهُ وَأَمَّا عَلِيٌّ فَابْنُ عَمِّ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَخَتَنُهُ وَأَشَارَ بِيَدِهِ وَهَذِهِ ابْنَتُهُ أَوْ بِنْتُهُ حَيْثُ تَرَوْنَ.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে বলল, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আল্লাহ তাঁর কিতাবে যা উল্লেখ করেছেন আপনি কি তা শোনেন না? وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا.....মু’মিনদের দু’দল দ্বন্দে¡ লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে ......... সুতরাং আল্লাহ্র কিতাবের নির্দেশ মুতাবিক যুদ্ধ করতে কোন্ বস্তু আপনাকে নিষেধ করছে? এরপর তিনি বললেন, হে ভাতিজা! এই আয়াতের তাবীল বা ব্যাখ্যা করে যুদ্ধ না করা আমার কাছে অধিক প্রিয় ........ وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا “যে স্বেচ্ছায় মু’মিন খুন করে” আয়াত তাবীল করার তুলনায়। সে ব্যক্তি বলল, আল্লাহ বলেছেন, وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ “তোমরা ফিতনা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ করবে”, ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে আমরা তা করেছি যখন ইসলাম দুর্বল ছিল। ফলে লোক তার দ্বীন নিয়ে ফিতনায় পড়ত, হয়ত কাফিররা তাকে হত্যা করত নতুবা বেঁধে রাখত, ক্রমে ক্রমে ইসলামের প্রসার ঘটল এবং ফিতনা থাকল না। সে লোকটি যখন দেখল যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) তার উদ্দেশ্যের অনুকূল নন তখন সে বলল যে, ‘আলী (রাঃ) এবং ‘উসমান (রাঃ) সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন যে, ‘আলী (রাঃ) এবং ‘উসমান (রাঃ) সম্পর্কে আমার কোন কথা নেই, তবে ‘উসমান (রাঃ)-কে আল্লাহ তা‘আলা নিজেই ক্ষমা করে দিয়েছেন কিন্তু তোমরা তাঁকে ক্ষমা করতে রাযী নও। আর ‘আলী (রাঃ), তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর চাচাত ভাই এবং জামাতা, তিনি অঙ্গুলি নির্দেশ করে বললেন, ঐ উনি হচ্ছেন রসূলের কন্যা, যেথায় তোমরা তাঁর ঘর দেখছ, هذِهِ ابْنَتُهُ বলেছেন কিংবা هذِهِ بْنَتُهُ বলেছেন। [৩১৩০] (আ.প্র. ৪২৮৯, ই.ফা. ৪২৯১)
أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا بَيَانٌ أَنَّ وَبَرَةَ حَدَّثَهُ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ جُبَيْرٍ قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا أَوْ إِلَيْنَا ابْنُ عُمَرَ فَقَالَ رَجُلٌ كَيْفَ تَرَى فِيْ قِتَالِ الْفِتْنَةِ فَقَالَ وَهَلْ تَدْرِيْ مَا الْفِتْنَةُ كَانَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم يُقَاتِلُ الْمُشْرِكِيْنَ وَكَانَ الدُّخُوْلُ عَلَيْهِمْ فِتْنَةً وَلَيْسَ كَقِتَالِكُمْ عَلَى الْمُلْكِ.
সা‘ঈদ ইবনু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইবনু ‘উমার (রাঃ) আমাদের কাছে এলেন। বর্ণনাকারী إِلَيْنَا অথবা عَلَيْنَا শব্দ বলেছেন। এরপর এক ব্যক্তি বলল, ফিতনা সম্পর্কিত যুদ্ধের ব্যাপারে আপনার অভিমত কী? ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, ফিতনা কী তা তুমি জান? মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন। সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে অভিযান ছিল ফিতনা। আর তা তোমাদের রাজত্বের জন্য যুদ্ধ করার মতো নয়। [৩১৩০] (আ.প্র. ৪২৯০, ই.ফা. ৪২৯২)
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا لَمَّا نَزَلَتْ {إِنْ يَّكُنْ مِّنْكُمْ عِشْرُوْنَ صٰبِرُوْنَ يَغْلِبُوْا مِائَتَيْنِ} وَإِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ مِائَةٌ فَكُتِبَ عَلَيْهِمْ أَنْ لَا يَفِرَّ وَاحِدٌ مِنْ عَشَرَةٍ فَقَالَ سُفْيَانُ غَيْرَ مَرَّةٍ أَنْ لَا يَفِرَّ عِشْرُوْنَ مِنْ مِائَتَيْنِ ثُمَّ نَزَلَتْ {الْاٰنَ خَفَّفَ اللهُ عَنْكُمْ} الْآيَةَ فَكَتَبَ أَنْ لَا يَفِرَّ مِائَةٌ مِنْ مِائَتَيْنِ وَزَادَ سُفْيَانُ مَرَّةً نَزَلَتْ {حَرِّضْ الْمُؤْمِنِيْنَ عَلَى الْقِتَالِ إِنْ يَّكُنْ مِّنْكُمْ عِشْرُوْنَ صَابِرُوْنَ} قَالَ سُفْيَانُ وَقَالَ ابْنُ شُبْرُمَةَ وَأُرَى الْأَمْرَ بِالْمَعْرُوْفِ وَالنَّهْيَ عَنِ الْمُنْكَرِ مِثْلَ هَذَا.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(আল্লাহ্র বাণী ঃ) إِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ যখন অবতীর্ণ হল। এরপর দশজন কাফিরের বিপরীত একজন মুসলিম থাকলেও পলায়ন না করা ফরয করে দেয়া হল। সুফ্ইয়ান ইবনু ‘উয়াইনাহ (রাঃ) আবার বর্ণনা করেন, দু’শ জন কাফিরের বিপক্ষে ২০ জন মুসলিম থাকলেও পলায়ন করা যাবে না। তারপর অবতীর্ণ হল الْآنَ خَفَّفَ اللهُ عَنْكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمْ ضَعْفاً فَإِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ مِائَةٌ صَابِرَةٌ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ وَإِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ أَلْفٌ يَغْلِبُوا أَلْفَيْنِ بِإِذْنِ اللهِ وَاللهُ مَعَ الصَّابِرِينَল্ল আল্লাহ এখন তোমাদের বোঝা হালকা করে দিয়েছেন এবং তিনি জানেন যে, তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। সুতরাং যদি তোমাদের মধ্যে একশ’ জন দৃঢ়পদ লোক থাকে তবে তারা দু’শ জনের উপর জয়লাভ করবে, আর তোমাদের মধ্যে এক হাজার থাকলে আল্লাহ্র হুকুমে তারা দু’হাজারের উপর জয়লাভ করবে। আর আল্লাহ আছেন দৃঢ়পদ লোকদের সঙ্গে। (সূরাহ আল-আনফাল ৮/৬৬)
এরপর দু’শ কাফিরের বিপক্ষে একশ’জন মুসলিম থাকলে পালিয়ে না যাওয়া (আল্লাহ) ফরয করে দিলেন। সুফ্ইয়ান ইবনু উয়াইনাহ (রহ.) একবার বর্ণনা করেছেন যে, (তাতে কিছু অতিরিক্ত আছে যেমন,) حَرِّضْ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ إِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ অবতীর্ণ হল, সুফ্ইয়ান বলেন, ইবনু শুবরুমাহ বলেছেন, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধএর ব্যাপারটাও আমি এমনই মনে করি। [৪৬৫৩] (আ.প্র. ৪২৯১, ই.ফা. ৪২৯৩)
يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ السُّلَمِيُّ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ الْمُبَارَكِ أَخْبَرَنَا جَرِيْرُ بْنُ حَازِمٍ قَالَ أَخْبَرَنِي الزُّبَيْرُ بْنُ خِرِّيْتٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ {إِنْ يَّكُنْ مِّنْكُمْ عِشْرُوْنَ صٰبِرُوْنَ يَغْلِبُوْا مِائَتَيْنِ} شَقَّ ذَلِكَ عَلَى الْمُسْلِمِيْنَ حِيْنَ فُرِضَ عَلَيْهِمْ أَنْ لَا يَفِرَّ وَاحِدٌ مِنْ عَشَرَةٍ فَجَاءَ التَّخْفِيْفُ فَقَالَ {اَلْئٰنَ خَفَّفَ اللهُ عَنْكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيْكُمْ ضَعْفًا ط فَإِنْ يَّكُنْ مِّنْكُمْ مِّائَةٌ صَابِرَةٌ يَّغْلِبُوْا مِائَتَيْنِ} قَالَ فَلَمَّا خَفَّفَ اللهُ عَنْهُمْ مِنَ الْعِدَّةِ نَقَصَ مِنْ الصَّبْرِ بِقَدْرِ مَا خُفِّفَ عَنْهُمْ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন إِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ আয়াতটি অবতীর্ণ হল তখন দশ জনের বিপরীতে একজনের পলায়নও নিষিদ্ধ করা হল, তখন এটা মুসলিমদের উপর দুঃসাধ্য মনে হল তারপর তা লাঘবের বিধান এলো الْآنَ خَفَّفَ اللهُ عَنْكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمْ ضُعْفًا فَإِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ مِائَةٌ صَابِرَةٌ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তাদেরকে সংখ্যার দিক থেকে যখন হালকা করে দিলেন, সেই সংখ্যা হ্রাসের সমপরিমাণ তাদের ধৈর্র্যও হ্রাস পেল। [৪৬৫২] (আ.প্র. ৪২৯২, ই.ফা. ৪২৯৪)
أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ آخِرُ آيَةٍ نَزَلَتْ {يَسْتَفْتُوْنَكَ قُلِ اللهُ يُفْتِيْكُمْ فِي الْكَلَالَةِ} وَآخِرُ سُوْرَةٍ نَزَلَتْ بَرَاءَةٌ
বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সর্বশেষে যে আয়াত অবতীর্ণ হয়, তা হল يَسْتَفْتُونَكَ قُلْ اللهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلاَلَةِলোকেরা আপনার কাছে বিধান জানতে চায়। আপনি বলুন ঃ আল্লাহ্ তোমাদের বিধান দিচ্ছেন “কালালা” (পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি) সম্বন্ধে (সূরাহ আন-নিসা ৪/১৭৬)। এবং সর্বশেষে যে সূরাটি অবতীর্ণ হয়, তা হল সূরায়ে বারাআত। [৪৩৬৪] (আ.প্র. ৪২৯৩, ই.ফা. ৪২৯৫)
سَعِيْدُ بْنُ عُفَيْرٍ قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُقَيْلٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ وَأَخْبَرَنِيْ حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَعَثَنِيْ أَبُوْ بَكْرٍ فِيْ تِلْكَ الْحَجَّةِ فِيْ مُؤَذِّنِيْنَ بَعَثَهُمْ يَوْمَ النَّحْرِ يُؤَذِّنُوْنَ بِمِنًى أَنْ لَا يَحُجَّ بَعْدَ الْعَامِ مُشْرِكٌ وَلَا يَطُوْفَ بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ قَالَ حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ثُمَّ أَرْدَفَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِعَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ وَأَمَرَهُ أَنْ يُؤَذِّنَ بِبَرَاءَةَ قَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ فَأَذَّنَ مَعَنَا عَلِيٌّ يَوْمَ النَّحْرِ فِيْ أَهْلِ مِنًى بِبَرَاءَةَ وَأَنْ لَا يَحُجَّ بَعْدَ الْعَامِ مُشْرِكٌ وَلَا يَطُوْفَ بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ বাক্র (রাঃ) নবম হিজরীর হাজ্জে আমাকে এ আদেশ দিয়ে পাঠিয়ে দেন যে, আমি কুরবানীর দিন ঘোষণাকারীদের সঙ্গে মিনায় (সমবেত লোকদের) এ ঘোষণা করে দেই যে, এ বছরের পর কোন মুশরিক হাজ্জ করতে পারবে না। আল্লাহ্র ঘর নগ্নদেহে তাওয়াফ করবে না।
হুমায়দ ইবনু ‘আবদুর রহমান (রাঃ) বলেন ঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘আলী (রাঃ)-কে পুনরায় এ নির্দেশ দিয়ে প্রেরণ করলেন যে, তুমি সূরায়ে বারাআতের বিধানসমূহ ঘোষণা করে দাও। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, মীনায় অবস্থানকারীদের মাঝে (কুরবানীর পর) ‘আলী (রাঃ) আমাদের সঙ্গে ছিলেন এবং সূরায়ে বারাআতের বিধানসমূহ ঘোষণা করলেন, এ বছরের পর কোন মুশরিক হাজ্জ করতে পারবে না। কেউ নগ্ন অবস্থায় ঘর তওয়াফ করবে না। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহ.) বলেন ঃ اَذَنَهُمْ অর্থ, তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। [৩৬৯] (আ.প্র. ৪২৯৪, ই.ফা. ৪২৯৬)
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ عُقَيْلٌ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ فَأَخْبَرَنِيْ حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ بَعَثَنِيْ أَبُوْ بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِيْ تِلْكَ الْحَجَّةِ فِي الْمُؤَذِّنِيْنَ بَعَثَهُمْ يَوْمَ النَّحْرِ يُؤَذِّنُوْنَ بِمِنًى أَنْ لَا يَحُجَّ بَعْدَ الْعَامِ مُشْرِكٌ وَلَا يَطُوْفَ بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ قَالَ حُمَيْدٌ ثُمَّ أَرْدَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِعَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ فَأَمَرَهُ أَنْ يُؤَذِّنَ بِبَرَاءَةَ قَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ فَأَذَّنَ مَعَنَا عَلِيٌّ فِيْ أَهْلِ مِنًى يَوْمَ النَّحْرِ بِبَرَاءَةَ وَأَنْ لَا يَحُجَّ بَعْدَ الْعَامِ مُشْرِكٌ وَلَا يَطُوْفَ بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ বাক্র (রাঃ) আমাকে সে কুরবানীর দিন ঘোষণাকারীদের সঙ্গে মিনায় এ (কথা) ঘোষণা করার জন্য পাঠালেন যে, এ বছরের পরে আর কোন মুশরিক হাজ্জ করতে পারবে না। আল্লাহ্র ঘর নগ্ন অবস্থায় কাউকে তওয়াফ করতে দেয়া হবে না। হুমাইদ (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পরে পুনরায় ‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিবকে পাঠালেন এবং বললেন ঃ সূরায়ে বারাআতের নির্দেশাবলী ঘোষণা করে দাও। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, ‘আলী (রাঃ) আমাদের সঙ্গেই মীনাবাসীদের মধ্যে সূরায়ে বারাআত কুরবানীর দিন ঘোষণা করলেন এ বছরের পরে কোন মুশরিক হাজ্জ করতে পারবে না এবং নগ্নদেহে আল্লাহ্র ঘরের তাওয়াফ করবে না। [৩৬৯] (আ.প্র. ৪২৯৫, ই.ফা. ৪২৯৭)
إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا أَبِيْ عَنْ صَالِحٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ حُمَيْدَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ بَعَثَهُ فِي الْحَجَّةِ الَّتِيْ أَمَّرَهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهَا قَبْلَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ فِيْ رَهْطٍ يُؤَذِّنُوْنَ فِي النَّاسِ أَنْ لَا يَحُجَّنَّ بَعْدَ الْعَامِ مُشْرِكٌ وَلَا يَطُوْفَ بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ فَكَانَ حُمَيْدٌ يَقُوْلُ يَوْمُ النَّحْرِ يَوْمُ الْحَجِّ الْأَكْبَرِ مِنْ أَجْلِ حَدِيْثِ أَبِيْ هُرَيْرَةَ.
ইসহাক (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিদায় হাজ্জের পূর্বের বছর আবূ বাক্র (রাঃ)-কে যে হাজ্জের আমীর বানিয়ে পাঠিয়েছিলেন, সেই হাজ্জে তিনি যেন লোকেদের মধ্যে ঘোষণা দেন, এ বছরের পর কোন মুশরিক হাজ্জ করতে পারবে না এবং নগ্নদেহে কেউ আল্লাহ্র ঘর তাওয়াফ করতে পারবে না।
হুমায়দ ইবনু ‘আবদুর রহমান বলেন, [আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)]’র হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, হাজ্জুল আকবারের দিন হল কুরবানীর দিন। [৩৬৯] (আ.প্র. ৪২৯৬, ই.ফা. ৪২৯৮)
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ وَهْبٍ قَالَ كُنَّا عِنْدَ حُذَيْفَةَ فَقَالَ مَا بَقِيَ مِنْ أَصْحَابِ هَذِهِ الْآيَةِ إِلَّا ثَلَاثَةٌ وَلَا مِنَ الْمُنَافِقِيْنَ إِلَّا أَرْبَعَةٌ فَقَالَ أَعْرَابِيٌّ إِنَّكُمْ أَصْحَابَ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم تُخْبِرُوْنَا فَلَا نَدْرِيْ فَمَا بَالُ هَؤُلَاءِ الَّذِيْنَ يَبْقُرُوْنَ بُيُوْتَنَا وَيَسْرِقُوْنَ أَعْلَاقَنَا قَالَ أُوْلَئِكَ الْفُسَّاقُ أَجَلْ لَمْ يَبْقَ مِنْهُمْ إِلَّا أَرْبَعَةٌ أَحَدُهُمْ شَيْخٌ كَبِيْرٌ لَوْ شَرِبَ الْمَاءَ الْبَارِدَ لَمَا وَجَدَ بَرْدَهُ
যায়দ ইবনু ওয়াহ্ব (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা হুযাইফাহ (রাঃ)-এর কাছে ছিলাম, তখন তিনি বলেন, এ আয়াতের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের মধ্যে শুধু তিনজন মুসলিম এবং চারজন মুনাফিক বেঁচে আছে। এমন সময় একজন বেদুঈন বলেন, আপনারা সকলে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহাবী। আমাদের এমন লোকদের অবস্থা সম্পর্কে খবর দিন যারা আমাদের ঘরে সিঁদ কেটে ঘরের অতি মূল্যবান জিনিসগুলো চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে, কেননা তাদের অবস্থা সম্পর্কে আমরা জানি না। হুযাইফাহ (রাঃ) বলেন, তারা সবাই ফাসিক। হ্যাঁ, তাদের মধ্য হতে চার ব্যক্তি এখনও জীবিততাদের মধ্যে একজন এতই বৃদ্ধ যে, শীতল পানি পান করার পর তার শীতলতা অনুভব করতে পারে না। (আ.প্র. ৪২৯৭, ই.ফা. ৪২৯৯)
الْحَكَمُ بْنُ نَافِعٍ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ الْأَعْرَجَ حَدَّثَهُ أَنَّهُ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ يَكُوْنُ كَنْزُ أَحَدِكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شُجَاعًا أَقْرَعَ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, তোমাদের মধ্যে কারো জমাকৃত সম্পদ (যার যাকাত আদায় করা হয় না) ক্বিয়ামাতের দিন বিষাক্ত সর্পের রূপ ধারণ করবে। [১৪০৩] (আ.প্র. ৪২৯৮, ই.ফা. ৪৩০০)
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ حُصَيْنٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ قَالَ مَرَرْتُ عَلَى أَبِيْ ذَرٍّ بِالرَّبَذَةِ فَقُلْتُ مَا أَنْزَلَكَ بِهَذِهِ الْأَرْضِ قَالَ كُنَّا بِالشَّأْمِ فَقَرَأْتُ {وَالَّذِيْنَ يَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُوْنَهَا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيْمٍ} قَالَ مُعَاوِيَةُ مَا هَذِهِ فِيْنَا مَا هَذِهِ إِلَّا فِيْ أَهْلِ الْكِتَابِ قَالَ قُلْتُ إِنَّهَا لَفِيْنَا وَفِيْهِمْ.
যায়দ ইবনু ওয়াহ্ব (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একদা রাবাযা নামক স্থানে আবূ যার (রাঃ)-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমি (তাকে) জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কেন এ ভূমিতে এসেছেন? তিনি বললেন, আমি সিরিয়ায় ছিলাম, তখন আমি [মু‘আবিয়াহ (রাঃ)-এর সামনে] এ আয়াত পাঠ করে শোনালাম। وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلاَ يُنْفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ “আর যারা জমা করে রাখে স্বর্ণ ও রৌপ্য এবং তা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে না, তাদেরকে আপনি শুনিয়ে দিন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ।” (সূরাহ বারাআত ৯/৩৪)
মু‘আবিয়াহ (রাঃ) এ আয়াত শুনে বললেন, এ আয়াত আমাদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়নি। বরং আহলে কিতাবদের (ইয়াহূদী ও নাসারাদের) ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে। আমি বললাম, এ আয়াত আমাদের ও তাদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। (এ তর্কবিতর্কের কারণে চলে এসেছি।) [১৪০৬] (আ.প্র. ৪২৯৯, ই.ফা. ৪৩০১)
وَقَالَ أَحْمَدُ بْنُ شَبِيْبِ بْنِ سَعِيْدٍ أَبِيْ عَنْ يُوْنُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ خَالِدِ بْنِ أَسْلَمَ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ فَقَالَ هَذَا قَبْلَ أَنْ تُنْزَلَ الزَّكَاةُ فَلَمَّا أُنْزِلَتْ جَعَلَهَا اللهُ طُهْرًا لِلْأَمْوَالِ.
খালিদ ইবনু আসলাম (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘উমার (রাঃ)-এর সঙ্গে বের হলাম। তখন তিনি বললেন, এ আয়াতটি যাকাতের বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বের। এরপর যাকাতের বিধান অবতীর্ণ হলে আল্লাহ তা সম্পদের পরিশুদ্ধকারী করেন। [১৪০৪] (আ.প্র. ৪৩০০, ই.ফা. ৪৩০২)
عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ بَكْرَةَ عَنْ أَبِيْ بَكْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ الزَّمَانَ قَدْ اسْتَدَارَ كَهَيْئَتِهِ يَوْمَ خَلَقَ اللهُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ثَلَاثٌ مُتَوَالِيَاتٌ ذُو الْقَعْدَةِ وَذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ وَرَجَبُ مُضَرَ الَّذِيْ بَيْنَ جُمَادَى وَشَعْبَانَ.
আবূ বাক্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বললেন, আল্লাহ যেদিন আসমান যমীন সৃষ্টি করেন সেদিন যেভাবে যামানা ছিল তা আজও তেমনি আছে। বারমাসে এক বছর, তার মধ্যে চার মাস পবিত্র। যার তিন মাস ধারাবাহিক যথা যিলকাদ, যিলহাজ্জ ও মুর্হারম আর মুযার গোত্রের রাজব যা জামাদিউস্সানী ও শাবান মাসের মধ্যবর্তী। [৬৭] (আ.প্র. ৪৩০১, ই.ফা. ৪৩০২)
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا حَبَّانُ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ حَدَّثَنَا ثَابِتٌ حَدَّثَنَا أَنَسٌ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الْغَارِ فَرَأَيْتُ آثَارَ الْمُشْرِكِيْنَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ لَوْ أَنَّ أَحَدَهُمْ رَفَعَ قَدَمَهُ رَآنَا قَالَ مَا ظَنُّكَ بِاثْنَيْنِ اللهُ ثَالِثُهُمَا.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ বাক্র (রাঃ) আমার কাছে বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে (সওর) গুহায় ছিলাম। তখন আমি মুশরিকদের পদচিহ্ন দেখতে পেয়ে [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে] বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! যদি তাদের কেউ পা উঠায় তাহলে আমাদের দেখে ফেলবে। তখন তিনি বললেন, এমন দু’জন সম্পর্কে তোমার কী ধারণা, যাদের তৃতীয় জন হলেন আল্লাহ। [৩৬৫৩] (আ. প্র. ৪৩০২, ই.ফা. ৪৩০৩)
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ قَالَ حِيْنَ وَقَعَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ ابْنِ الزُّبَيْرِ قُلْتُ أَبُوْهُ الزُّبَيْرُ وَأُمُّهُ أَسْمَاءُ وَخَالَتُهُ عَائِشَةُ وَجَدُّهُ أَبُوْ بَكْرٍ وَجَدَّتُهُ صَفِيَّةُ فَقُلْتُ لِسُفْيَانَ إِسْنَادُهُ فَقَالَ حَدَّثَنَا فَشَغَلَهُ إِنْسَانٌ وَلَمْ يَقُلْ ابْنُ جُرَيْجٍ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন তার ও ইবনু যুবায়র (রাঃ)-এর মধ্যে (বাইআত নিয়ে) মতভেদ ঘটল, তখন আমি বললাম, তার পিতা যুবায়র, তার মাতা আসমা (রাঃ) ও তার খালা ‘আয়িশাহ (রাঃ), তার নানা আবূ বাক্র (রাঃ) ও তার নানী সুফিয়া (রাঃ)। আমি সুফ্ইয়ানকে বললাম, এর সানাদ বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, حَدَّثَنَا এবং ইবনু জুরাইজ (রহ.) বলার আগেই অন্য এক ব্যক্তি তাকে ব্যস্ত করে ফেললেন। [৪৬৬৫, ৪৬৬৬] (আ.প্র. ৪৩০৩, ই.ফা. ৪৩০৪)
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ يَحْيَى بْنُ مَعِيْنٍ حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ ابْنُ أَبِيْ مُلَيْكَةَ وَكَانَ بَيْنَهُمَا شَيْءٌ فَغَدَوْتُ عَلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَقُلْتُ أَتُرِيْدُ أَنْ تُقَاتِلَ ابْنَ الزُّبَيْرِ فَتُحِلَّ حَرَمَ اللهِ فَقَالَ مَعَاذَ اللهِ إِنَّ اللهَ كَتَبَ ابْنَ الزُّبَيْرِ وَبَنِيْ أُمَيَّةَ مُحِلِّيْنَ وَإِنِّيْ وَاللهِ لَا أُحِلُّهُ أَبَدًا قَالَ قَالَ النَّاسُ بَايِعْ لِابْنِ الزُّبَيْرِ فَقُلْتُ وَأَيْنَ بِهَذَا الْأَمْرِ عَنْهُ أَمَّا أَبُوْهُ فَحَوَارِيُّ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يُرِيْدُ الزُّبَيْرَ وَأَمَّا جَدُّهُ فَصَاحِبُ الْغَارِ يُرِيْدُ أَبَا بَكْرٍ وَأُمُّهُ فَذَاتُ النِّطَاقِ يُرِيْدُ أَسْمَاءَ وَأَمَّا خَالَتُهُ فَأُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ يُرِيْدُ عَائِشَةَ وَأَمَّا عَمَّتُهُ فَزَوْجُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يُرِيْدُ خَدِيْجَةَ وَأَمَّا عَمَّةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَجَدَّتُهُ يُرِيْدُ صَفِيَّةَ ثُمَّ عَفِيْفٌ فِي الإِسْلَامِ قَارِئٌ لِلْقُرْآنِ وَاللهِ إِنْ وَصَلُوْنِيْ وَصَلُوْنِيْ مِنْ قَرِيْبٍ وَإِنْ رَبُّوْنِيْ رَبُّوْنِيْ أَكْفَاءٌ كِرَامٌ فَآثَرَ التُّوَيْتَاتِ وَالْأُسَامَاتِ وَالْحُمَيْدَاتِ يُرِيْدُ أَبْطُنًا مِنْ بَنِيْ أَسَدٍ بَنِيْ تُوَيْتٍ وَبَنِيْ أُسَامَةَ وَبَنِيْ أَسَدٍ إِنَّ ابْنَ أَبِي الْعَاصِ بَرَزَ يَمْشِي الْقُدَمِيَّةَ يَعْنِيْ عَبْدَ الْمَلِكِ بْنَ مَرْوَانَ وَإِنَّهُ لَوَّى ذَنَبَهُ يَعْنِي ابْنَ الزُّبَيْرِ.
ইবনু আবূ মুলাইকাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) ও ইবনু যুবায়র (রাঃ)-এর মধ্যে বাই‘আত নিয়ে মতভেদ সৃষ্টি হল, তখন আমি ইবনু ‘আব্বাসের কাছে গিয়ে বললাম, আপনি কি আল্লাহ যা হারাম করেছেন, তা হালাল করে ইবনু যুবায়রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান? তখন তিনি বললেন, আল্লাহ্র কাছে পানাহ্ চাচ্ছি, এ কাজ তো ইবনু যুবায়র ও বানী ‘উমাইয়াহর জন্যই আল্লাহ লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। আল্লাহ্র কসম! কখনও তা আমি হালাল মনে করব না, (আবূ মুলাইকাহ বলেন) তখন লোকজন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলল, আপনি ইবনু যুবায়রের পক্ষে বাই‘আত গ্রহণ করুন। তখন ইবনু ‘আব্বাস বললেন, তাতে ক্ষতির কী আছে? তিনি এটার জন্য যোগ্যতম ব্যক্তি। তাঁর পিতা যুবায়র তো নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাহায্যকারী ছিলেন, তার নানা আবূ বাক্র (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সওর গুহার সঙ্গী ছিলেন। তার মা আসমা, যার উপাধি ছিল যাতুন নেতাক। তার খালা ‘আয়িশাহ (রাঃ) উম্মুল মু’মিনীন ছিলেন, তার ফুফু খাদীজাহ (রাঃ) রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রী ছিলেন, আর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ফুফু সফীয়্যাহ ছিলেন তাঁর দাদী। এ ব্যতীত তিনি (ইবনু যুবায়র) তো ইসলামী জগতে নিষ্কলুষ ব্যক্তি ও কুরআনের ক্বারী। আল্লাহ্র কসম! যদি তারা (বানী ‘উমাইয়াহ) আমার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখে তবে তারা আমার নিকটাত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখল। আর যদি তারা আমাদের রক্ষণাবেক্ষণ করে তবে তারা সমকক্ষ মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরই রক্ষণাবেক্ষণ করল। ইবনু যুবায়র, বানী আসাদ, বানী তুয়াইত, বানী উসামাএসব গোত্রকে আমার চেয়ে নিকটতম করে নিয়েছেন। নিশ্চয়ই আবিল আস্-এর পুত্র অর্থাৎ ‘আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ান অহঙ্কারী চালচলন আরম্ভ করেছে। নিশ্চয়ই তিনি অর্থাৎ ‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) তার লেজ গুটিয়ে নিয়েছেন। [৪৬৬৪] (আ.প্র. ৪৩০৪, ই.ফা. ৪৩০৫)
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ بْنِ مَيْمُوْنٍ حَدَّثَنَا عِيْسَى بْنُ يُوْنُسَ عَنْ عُمَرَ بْنِ سَعِيْدٍ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِيْ مُلَيْكَةَ دَخَلْنَا عَلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَقَالَ أَلَا تَعْجَبُوْنَ لِابْنِ الزُّبَيْرِ قَامَ فِيْ أَمْرِهِ هَذَا فَقُلْتُ لَأُحَاسِبَنَّ نَفْسِيْ لَهُ مَا حَاسَبْتُهَا لِأَبِيْ بَكْرٍ وَلَا لِعُمَرَ وَلَهُمَا كَانَا أَوْلَى بِكُلِّ خَيْرٍ مِنْهُ وَقُلْتُ ابْنُ عَمَّةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَابْنُ الزُّبَيْرِ وَابْنُ أَبِيْ بَكْرٍ وَابْنُ أَخِيْ خَدِيْجَةَ وَابْنُ أُخْتِ عَائِشَةَ فَإِذَا هُوَ يَتَعَلَّى عَنِّيْ وَلَا يُرِيْدُ ذَلِكَ فَقُلْتُ مَا كُنْتُ أَظُنُّ أَنِّيْ أَعْرِضُ هَذَا مِنْ نَفْسِيْ فَيَدَعُهُ وَمَا أُرَاهُ يُرِيْدُ خَيْرًا وَإِنْ كَانَ لَا بُدَّ لَأَنْ يَرُبَّنِيْ بَنُوْ عَمِّيْ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ يَرُبَّنِيْ غَيْرُهُمْ.
ইবনু আবূ মুলাইকাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর ঘরে প্রবেশ করলাম। তিনি বললেন, তোমরা কি ইবনু যুবায়রের বিষয়ে বিস্মিত হবে না? তিনি তো তার এ কাজে (খিলাফতের কাজে) দাঁড়িয়েছেন। [ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন] আমি বললাম, আমি অবশ্য মনে মনে তার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করি, কিন্তু আবূ বাক্র (রাঃ) কিংবা ‘উমার (রাঃ)-এর ব্যাপারে এতটুকু চিন্তা-ভাবনা করিনি। সব দিক থেকে তাঁর চেয়ে তারা উভয়ে উত্তম ছিলেন। আমি বললাম, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ফুফু সফীয়্যাহ (রাঃ)-এর সন্তান, যুবায়রের ছেলে, আবূ বাক্র (রাঃ)-এর নাতি। খাদীজাহ (রাঃ)-এর ভাতিজা, ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর বোন আসমার ছেলে। কিন্তু তিনি (নিজেকে বড় মনে করে) আমার থেকে দূরে সরে থাকেন এবং তিনি আমার সহযোগিতা কামনা করেন না। আমি বললাম, আমি নিজে থেকে এজন্য তা প্রকাশ করি না যে, হয়ত তিনি তা প্রত্যাখ্যান করবেন এবং আমি মনে করি না যে, তিনি এটা ভাল করছেন। কারণ অন্য কোন ব্যক্তি দেশের শাসক হওয়ার চেয়ে আমার চাচার ছেলে অর্থাৎ আমার আপনজন শাসক হওয়া আমার নিকট উত্তম। [৪৬৬৪] (আ.প্র. ৪৩০৪, ই.ফা. ৪৩০৬)
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ ابْنِ أَبِيْ نُعْمٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بُعِثَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِشَيْءٍ فَقَسَمَهُ بَيْنَ أَرْبَعَةٍ وَقَالَ أَتَأَلَّفُهُمْ فَقَالَ رَجُلٌ مَا عَدَلْتَ فَقَالَ يَخْرُجُ مِنْ ضِئْضِئِ هَذَا قَوْمٌ يَمْرُقُوْنَ مِنْ الدِّيْنِ.
আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে কিছু জিনিস প্রেরণ করা হল। এরপর তিনি সেগুলো চারজনের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। আর বললেন, তাদেরকে (এর দ্বারা) আকৃষ্ট করছি। তখন এক ব্যক্তি বলল, আপনি সুবিচার করেননি। (এটা শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)) বললেন, এ ব্যক্তির বংশ থেকে এমন সব লোক জন্ম নেবে যারা দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে। [৩৩৪৪] (আ.প্র. ৪৩০৫, ই.ফা. ৪৩০৭)
بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ أَبُوْ مُحَمَّدٍ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ أَبِيْ مَسْعُوْدٍ قَالَ لَمَّا أُمِرْنَا بِالصَّدَقَةِ كُنَّا نَتَحَامَلُ فَجَاءَ أَبُوْ عَقِيْلٍ بِنِصْفِ صَاعٍ وَجَاءَ إِنْسَانٌ بِأَكْثَرَ مِنْهُ فَقَالَ الْمُنَافِقُوْنَ إِنَّ اللهَ لَغَنِيٌّ عَنْ صَدَقَةِ هَذَا وَمَا فَعَلَ هَذَا الآخَرُ إِلَّا رِئَاءً فَنَزَلَتْ {الَّذِيْنَ يَلْمِزُوْنَ الْمُطَّوِّعِيْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ فِي الصَّدَقَاتِ وَالَّذِيْنَ لَا يَجِدُوْنَ إِلَّا جُهْدَهُمْ} الآيَةَ.
আবূ মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন আমাদের সদাকাহ দানের আদেশ দেয়া হল, তখন আমরা মজুরীর বিনিময়ে বোঝা বহন করতাম। একদিন আবূ ‘আকীল (রাঃ) অর্ধ সা’ খেজুর (দান করার উদ্দেশে) নিয়ে আসলেন এবং অন্য এক ব্যক্তি (‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ) তার চেয়ে অধিক মালামাল নিয়ে উপস্থিত হলেন। মুনাফিকরা বলতে লাগল, আল্লাহ এ ব্যক্তির সদাকাহর মুখাপেক্ষী নন। আর দ্বিতীয় ব্যক্তি [‘আবদুর রহমান ইবন ‘আওফ (রাঃ)] শুধু মানুষ দেখানোর জন্য অধিক মালামাল দান করেছে। এ সময় এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় “মু‘মিনদের মধ্যে যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সদাকাহ দেয় এবং যারা নিজেদের পরিশ্রমলব্ধ বস্তু ব্যতীত ব্যয় করার কিছুই পায় না, তাদেরকে যারা দোষারোপ করে ও ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে, আল্লাহ তাদের বিদ্রুপ করেন। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (সূরাহ বারাআত ৯/৭৯)। [১৪১৫] (আ.প্র. ৪৩০৭, ই.ফা. ৪৩০৮)
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ قُلْتُ لِأَبِيْ أُسَامَةَ أَحَدَّثَكُمْ زَائِدَةُ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ شَقِيْقٍ عَنْ أَبِيْ مَسْعُوْدٍ الْأَنْصَارِيِّ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُ بِالصَّدَقَةِ فَيَحْتَالُ أَحَدُنَا حَتَّى يَجِيْءَ بِالْمُدِّ وَإِنَّ لِأَحَدِهِمْ الْيَوْمَ مِائَةَ أَلْفٍ كَأَنَّهُ يُعَرِّضُ بِنَفْسِهِ.
আবূ মাস‘ঊদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সদাকাহ করার নির্দেশ দিলে আমাদের মধ্য হতে কেউ কেউ অত্যন্ত পরিশ্রম করে, (গম অথবা খেজুর ইত্যাদি) এক মুদ্দ আনতে পারত কিন্তু এখন আমাদের মধ্যে কারো কারো এক লাখ পরিমাণ (দিরহাম) রয়েছে। আবূ মাস‘ঊদ (রাঃ) যেন (এ কথা বলে) নিজের দিকে ইশারা করলেন। [১৪১৫] (আ.প্র. ৪৩০৮, ই.ফা. ৪৩০৯)
عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ أَبِيْ أُسَامَةَ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا تُوُفِّيَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ جَاءَ ابْنُهُ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهُ أَنْ يُعْطِيَهُ قَمِيْصَهُ يُكَفِّنُ فِيْهِ أَبَاهُ فَأَعْطَاهُ ثُمَّ سَأَلَهُ أَنْ يُصَلِّيَ عَلَيْهِ فَقَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِيُصَلِّيَ عَلَيْهِ فَقَامَ عُمَرُ فَأَخَذَ بِثَوْبِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ تُصَلِّيْ عَلَيْهِ وَقَدْ نَهَاكَ رَبُّكَ أَنْ تُصَلِّيَ عَلَيْهِ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّمَا خَيَّرَنِي اللهُ فَقَالَ {اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لَا تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ إِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِيْنَ مَرَّةً} وَسَأَزِيْدُهُ عَلَى السَّبْعِيْنَ قَالَ إِنَّهُ مُنَافِقٌ قَالَ فَصَلَّى عَلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَنْزَلَ اللهُ {وَلَا تُصَلِّ عَلٰٓى أَحَدٍ مِّنْهُمْ مَّاتَ أَبَدًا وَّلَا تَقُمْ عَلٰى قَبْرِهٰ}.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই মারা গেল, তখন তার ছেলে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দরবারে আসলেন এবং তার পিতাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জামাটি দিয়ে কাফন দেবার আবেদন করলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জামা প্রদান করলেন, এরপর তিনি জানাযার সলাত আদায়ের জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে আবেদন জানালেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জানাযার সলাত পড়ানোর জন্য (বসা থেকে) উঠে দাঁড়ালেন, ইত্যবসরে ‘উমার (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাপড় টেনে ধরে আবেদন করলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি কি তার জানাযার সলাত আদায় করতে যাচ্ছেন? অথচ আপনার রব আপনাকে তার জন্য দু‘আ করতে নিষেধ করেছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহ তা‘আলা এ ব্যাপারে আমাকে (দু‘আ) করা বা না করার সুযোগ দিয়েছেন। আর আল্লাহ তো ইরশাদ করেছেন, “তুমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর আর না কর; যদি সত্তরবারও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর তবু আমি তাদের ক্ষমা করব না”। সুতরাং আমি তার জন্য সত্তরবারের চেয়েও বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করব। ‘উমার (রাঃ) বললেন, সে তো মুনাফিক, শেষ পর্যন্ত রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার জানাযার সলাত আদায় করলেন, এরপর এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। “তাদের (মুনাফিকদের) কেউ মারা গেলে আপনি কক্ষণো তাদের জানাযাহ্র সলাত আদায় করবেন না এবং তাদের কবরের কাছেও দাঁড়াবেন না। [১২৬৯; মুসলিম ৪৪/২, হাঃ ২৪০০, আহমাদ ৯৫] (আ.প্র. ৪৩০৯, ই.ফা. ৪৩১০)
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ و قَالَ غَيْرُهُ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ عُقَيْلٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ لَمَّا مَاتَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ ابْنُ سَلُوْلَ دُعِيَ لَهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِيُصَلِّيَ عَلَيْهِ فَلَمَّا قَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَثَبْتُ إِلَيْهِ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَتُصَلِّيْ عَلَى ابْنِ أُبَيٍّ وَقَدْ قَالَ يَوْمَ كَذَا كَذَا وَكَذَا قَالَ أُعَدِّدُ عَلَيْهِ قَوْلَهُ فَتَبَسَّمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ أَخِّرْ عَنِّيْ يَا عُمَرُ فَلَمَّا أَكْثَرْتُ عَلَيْهِ قَالَ إِنِّيْ خُيِّرْتُ فَاخْتَرْتُ لَوْ أَعْلَمُ أَنِّيْ إِنْ زِدْتُ عَلَى السَّبْعِيْنَ يُغْفَرْ لَهُ لَزِدْتُ عَلَيْهَا قَالَ فَصَلَّى عَلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ انْصَرَفَ فَلَمْ يَمْكُثْ إِلَّا يَسِيْرًا حَتَّى نَزَلَتْ الْآيَتَانِ مِنْ بَرَاءَةَ{وَلَا تُصَلِّ عَلٰى أَحَدٍ مِّنْهُمْ مَّاتَ أَبَدً}ا إِلَى قَوْلِهِ{وَهُمْ فَاسِقُوْنَ} قَالَ فَعَجِبْتُ بَعْدُ مِنْ جُرْأَتِيْ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَاللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ
‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালূল মারা গেল, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে তার জানাযাহর সলাত আদায়ের জন্য আহ্বান করা হল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন (জানাযার জন্য) উঠে দাঁড়ালেন, আমি তাঁর কাছে গিয়ে আরয করলাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি ইবনু উবাই-এর জানাযার সলাত পড়াবেন? অথচ সে লোক অমুক দিন অমুক অমুক কথা বলেছে। ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বলেন, আমি তার কথাগুলো রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সামনে এক একটি করে উল্লেখ করছিলাম। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মুচকি হাসি দিয়ে আমাকে বললেন, হে ‘উমার! আমাকে যেতে দাও। আমি বারবার বলাতে তিনি বললেন, আল্লাহ আমাকে করা বা না করার অবকাশ দিয়েছেন। আমি তা গ্রহণ করেছি। আমি যদি জানতে পারি যে, সত্তরবারের চেয়েও বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করলে তাকে আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দেবেন, তবে আমি সত্তরবারের অধিক ক্ষমা প্রার্থনা করব। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার জানাযার সলাত আদায় করলেন এবং (জানাযাহ) থেকে ফিরে আসার পরই সূরাহ বারাআতের এ আয়াত অবতীর্ণ হয়, “তাদের কেউ মারা গেলে কখনও তার জানাযাহর সলাত আদায় করবে না। এরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি অবিশ্বাস করেছে এবং ফাসিক অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। (সূরাহ বারাআত ৯/৮৪)
‘উমার (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সামনে আমার এ দুঃসাহসের জন্য পরে আমি আশ্চর্য হতাম। বস্তুতঃ আল্লাহ ও তার রসূল অধিক জ্ঞাত। [১৩৬৬] (আ.প্র. ৪৩১০, ই.ফা. ৪৩১১)
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ قَالَ لَمَّا تُوُفِّيَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ جَاءَ ابْنُهُ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَعْطَاهُ قَمِيْصَهُ وَأَمَرَهُ أَنْ يُكَفِّنَهُ فِيْهِ ثُمَّ قَامَ يُصَلِّيْ عَلَيْهِ فَأَخَذَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ بِثَوْبِهِ فَقَالَ تُصَلِّيْ عَلَيْهِ وَهُوَ مُنَافِقٌ وَقَدْ نَهَاكَ اللهُ أَنْ تَسْتَغْفِرَ لَهُمْ قَالَ إِنَّمَا خَيَّرَنِي اللهُ أَوْ أَخْبَرَنِي اللهُ فَقَالَ {اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لَا تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ إِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِيْنَ مَرَّةً فَلَنْ يَّغْفِرَ اللهُ} فَقَالَ سَأَزِيْدُهُ عَلَى سَبْعِيْنَ قَالَ فَصَلَّى عَلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَصَلَّيْنَا مَعَهُ ثُمَّ أَنْزَلَ اللهُ عَلَيْهِ {وَلَا تُصَلِّ عَلٰٓى أَحَدٍ مِّنْهُمْ مَّاتَ أَبَدًا وَّلَا تَقُمْ عَلٰى قَبْرِهٰإِنَّهُمْ كَفَرُوْا بِاللهِ وَرَسُوْلِهٰ وَمَاتُوْا وَهُمْ فَاسِقُوْنَ}.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন (মুনাফিক) ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই মারা গেল, তখন তার ছেলে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে আসলেন। তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)] তার নিজ জামাটি তাকে দিয়ে দিলেন এবং এর দ্বারা তার পিতার কাফনের ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দিলেন। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার জানাযার সলাত আদায়ের জন্য উঠে দাঁড়ালেন। তখন ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাপড় ধরে নিবেদন করলেন, [হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)] আপনি কি তার (‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই)-এর জানাযাহর সলাত আদায় করবেন? সে তো মুনাফিক, অথচ আল্লাহ তা‘আলা তাদের (মুনাফিকদের) জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে আপনাকে নিষেধ করেছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, (হে ‘উমার!) আল্লাহ আমাকে করা বা না করার অবকাশ দিয়েছেন, অথবা বলেছেন, আল্লাহ আমাকে অবহিত করেছেন এবং বলেছেন, “আপনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন অথবা নাই করেন (উভয়ই সমান)। যদি আপনি তাদের জন্য সত্তর বারও ক্ষমা প্রার্থনা করেন তবুও আল্লাহ তাদেরকে কখনই ক্ষমা করবেন না।” (সূরাহ বারাআত ৯/৮০)
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আমি সত্তরবারের চেয়েও অধিকবার ক্ষমা প্রার্থনা করব। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার জানাযাহর সলাত আদায় করলেন। আমরাও তার সঙ্গে জানাযাহর সলাত আদায় করলাম। এরপর এ আয়াত অবতীর্ণ হল, “তাদের (মুনাফিকদের) কেউ মারা গেলে আপনি তার জানাযাহর সলাত কখনও আদায় করবেন না এবং তার কবরের পার্শ্বে দাঁড়াবেন না। তারা তো আল্লাহ ও তার রসূলকে অস্বীকার করেছে এবং ফাসিক অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করেছে” (সূরাহ বারাআত ৯/৮৪)। [১২৬৯] (আ.প্র. ৪৩১১, ই.ফা. ৪৩১২)
يَحْيَى حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ سَمِعْتُ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ حِيْنَ تَخَلَّفَ عَنْ تَبُوْكَ وَاللهِ مَا أَنْعَمَ اللهُ عَلَيَّ مِنْ نِعْمَةٍ بَعْدَ إِذْ هَدَانِيْ أَعْظَمَ مِنْ صِدْقِيْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ لَا أَكُوْنَ كَذَبْتُهُ فَأَهْلِكَ كَمَا هَلَكَ الَّذِيْنَ كَذَبُوْا حِيْنَ أُنْزِلَ الْوَحْيُ {سَيَحْلِفُوْنَ بِاللهِ لَكُمْ إِذَا انْقَلَبْتُمْ إِلَيْهِمْ} إِلَى قَوْلِهِ {الْفَاسِقِيْنَ}.
‘আবদুল্লাহ ইবনু কা‘ব ইবনু মালিক (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি যখন তাবূকের যুদ্ধে পিছনে রয়ে গেলেন, আল্লাহ্র কসম! তখন আল্লাহ আমাকে এমন এক নিয়ামত দান করেন যে মুসলিম হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত এত বড় নিয়ামত পাইনি। তা হল রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে সত্য কথা প্রকাশ করা। আমি তাঁর কাছে মিথ্যা বলিনি। যদি মিথ্যা বলতাম, তবে অন্যান্য (মুনাফিক ও) মিথ্যাচারী যেভাবে ধ্বংস হয়েছে, আমিও সেভাবে ধ্বংস হয়ে যেতাম। যে সময় ওয়াহী অবতীর্ণ হল “তারা তোমাদের সামনে কসম করবে যাতে তোমরা তাদের প্রতি রাজি হও। যদি তোমরা তাদের প্রতি রাজি হয়ে যাও তবুও আল্লাহ এসব ফাসিক লোকদের প্রতি রাজি হবেন না” (সূরাহ বারাআত ৯/৯৬)। [২৭৫৭] (আ.প্র. ৪৩১২, ই.ফা. ৪৩১৩)
مُؤَمَّلٌ هُوَ ابْنُ هِشَامٍ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا عَوْفٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ رَجَاءٍ حَدَّثَنَا سَمُرَةُ بْنُ جُنْدَبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَنَا أَتَانِي اللَّيْلَةَ آتِيَانِ فَابْتَعَثَانِيْ فَانْتَهَيْنَا إِلَى مَدِيْنَةٍ مَبْنِيَّةٍ بِلَبِنِ ذَهَبٍ وَلَبِنِ فِضَّةٍ فَتَلَقَّانَا رِجَالٌ شَطْرٌ مِنْ خَلْقِهِمْ كَأَحْسَنِ مَا أَنْتَ رَاءٍ وَشَطْرٌ كَأَقْبَحِ مَا أَنْتَ رَاءٍ قَالَا لَهُمْ اذْهَبُوْا فَقَعُوْا فِيْ ذَلِكَ النَّهْرِ فَوَقَعُوْا فِيْهِ ثُمَّ رَجَعُوْا إِلَيْنَا قَدْ ذَهَبَ ذَلِكَ السُّوْءُ عَنْهُمْ فَصَارُوْا فِيْ أَحْسَنِ صُوْرَةٍ قَالَا لِيْ هَذِهِ جَنَّةُ عَدْنٍ وَهَذَاكَ مَنْزِلُكَ قَالَا أَمَّا الْقَوْمُ الَّذِيْنَ كَانُوْا شَطْرٌ مِنْهُمْ حَسَنٌ وَشَطْرٌ مِنْهُمْ قَبِيْحٌ فَإِنَّهُمْ خَلَطُوْا عَمَلًا صَالِحًا وَآخَرَ سَيِّئًا تَجَاوَزَ اللهُ عَنْهُمْ
সামূরাহ্ ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের বলেছেন, রাতে দু’জন মালাক এসে আমাকে নিদ্রা থেকে জাগ্রত করলেন। এরপর আমরা এমন এক শহরে পৌঁছলাম, যা স্বর্ণ ও রৌপ্যের ইট দ্বারা নির্মিত। সেখানে এমন কিছু সংখ্যক লোকের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ ঘটল, যাদের শরীরের অর্ধেক খুবই সুশ্রী যা তোমরা কখনও দেখনি এবং আর এক অর্ধেক এত কুৎসিত যা তোমরা কখনও দেখনি। মালাক দু’জন তাদেরকে বললেন, তোমরা ঐ নহরে গিয়ে ডুব দাও। তারা সেখানে গিয়ে ডুব দিয়ে আমাদের নিকট ফিরে আসল। তখন তাদের বিশ্রী চেহারা সম্পূর্ণ দূর হয়ে গেল এবং তারা সুশ্রী চেহারা লাভ করল। মালাকদ্বয় আমাকে বললেন, এটা হল ‘জান্নাতে আদন’ এটাই হল আপনার আসল ঠিকানা। মালাকদ্বয় বললেন, (আপনি) যেসব লোকের দেহের অর্ধেক সুশ্রী এবং অর্ধেক বিশ্রী (দেখেছেন), তারা ঐ সকল লোক যারা দুনিয়াতে সৎকর্মের সঙ্গে অসৎকর্ম মিশিয়ে ফেলেছে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। [৮৪৫] (আ.প্র. ৪৩১৩, ই.ফা. ৪৩১৪)
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ لَمَّا حَضَرَتْ أَبَا طَالِبٍ الْوَفَاةُ دَخَلَ عَلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدَهُ أَبُوْ جَهْلٍ وَعَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ أُمَيَّةَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَيْ عَمِّ قُلْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أُحَاجُّ لَكَ بِهَا عِنْدَ اللهِ فَقَالَ أَبُوْ جَهْلٍ وَعَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ أُمَيَّةَ يَا أَبَا طَالِبٍ أَتَرْغَبُ عَنْ مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَأَسْتَغْفِرَنَّ لَكَ مَا لَمْ أُنْهَ عَنْكَ فَنَزَلَتْ {مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِيْنَ آمَنُوْا أَنْ يَسْتَغْفِرُوْا لِلْمُشْرِكِيْنَ وَلَوْ كَانُوْا أُوْلِيْ قُرْبَى مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُمْ أَصْحَابُ الْجَحِيْمِ}.
মুসাইয়্যাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ ত্বলিবের মৃত্যু ঘনিয়ে আসলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার কাছে গেলেন। এ সময় আবূ জাহ্ল এবং ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ উমাইয়াহ্ও সেখানে বসা ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে চাচা! আপনি পড়ুন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। আপনার মুক্তির জন্য আল্লাহ্র নিকট এটা দলীল হিসেবে পেশ করব। এ কথা শুনে আবূ জাহ্ল ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমাইয়াহ বলল, হে আবূ ত্বলিব! তুমি কি ‘আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম ত্যাগ করে দিবে? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে চাচা! আমি আপনার জন্য আল্লাহ্র তরফ থেকে যতক্ষণ আমাকে নিষেধ না করা হবে ততক্ষণ ক্ষমা চাইতে থাকব। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় “নাবী ও মুমিনদের পক্ষে উচিত নয় যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে মুশরিকদের জন্য যদি তারা নিকটাত্মীয়ও হয় যখন তাদের কাছে এ কথা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা জাহান্নামী।” (সূরাহ বারাআত ৯/১১৩) [১৩৬০] (আ.প্র. ৪৩১৪, ই.ফা. ৪৩১৫)
মুসাইয়্যাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ ত্বলিবের মৃত্যু ঘনিয়ে আসলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার কাছে গেলেন। এ সময় আবূ জাহ্ল এবং ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ উমাইয়াহ্ও সেখানে বসা ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে চাচা! আপনি পড়–ন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। আপনার মুক্তির জন্য আল্লাহ্র নিকট এটা দলীল হিসেবে পেশ করব। এ কথা শুনে আবূ জাহ্ল ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমাইয়াহ বলল, হে আবূ ত্বলিব! তুমি কি ‘আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম ত্যাগ করে দিবে? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে চাচা! আমি আপনার জন্য আল্লাহ্র তরফ থেকে যতক্ষণ আমাকে নিষেধ না করা হবে ততক্ষণ ক্ষমা চাইতে থাকব। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় “নাবী ও মুমিনদের পক্ষে উচিত নয় যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে মুশরিকদের জন্য যদি তারা নিকটাত্মীয়ও হয় যখন তাদের কাছে এ কথা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা জাহান্নামী।” (সূরাহ বারাআত ৯/১১৩) [১৩৬০] (আ.প্র. ৪৩১৪, ই.ফা. ৪৩১৫)
أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ يُوْنُسُ ح قَالَ أَحْمَدُ وَحَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ حَدَّثَنَا يُوْنُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ كَعْبٍ وَكَانَ قَائِدَ كَعْبٍ مِنْ بَنِيْهِ حِيْنَ عَمِيَ قَالَ سَمِعْتُ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ فِيْ حَدِيْثِهِ وَعَلَى الثَلَاثَةِ الَّذِيْنَ خُلِّفُوْا قَالَ فِيْ آخِرِ حَدِيْثِهِ إِنَّ مِنْ تَوْبَتِيْ أَنْ أَنْخَلِعَ مِنْ مَالِيْ صَدَقَةً إِلَى اللهِ وَإِلَى رَسُوْلِهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَمْسِكْ بَعْضَ مَالِكَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ
‘আবদুর রহমান ইবনু কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কা‘ব (রাঃ) যখন অন্ধ হয়ে পড়লেন, তখন তার ছেলেদের মধ্যে যার সাহায্যে তিনি চলাফেরা করতেন, সেই ‘আবদুল্লাহ বিন কা‘ব বলেন, আমি (আমার পিতা) কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ)-এর কাছে وَعَلَى الثَلاَثَةِ এ আয়াত- সম্পর্কে হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি তার ঘটনা বর্ণনার সর্বশেষে বলতেন, আমি আমার তওবা কবূল হওয়ার খুশীতে আমার সকল মাল আল্লাহ ও তার রসূলের পথে দান করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, কিছু মাল নিজের জন্য রেখে দাও। এটাই তোমার জন্য কল্যাণকর হবে। [২৭৫৭] (আ.প্র. ৪৩১৫, ই.ফা. ৪৩১৬)
مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ ابْنُ أَبِيْ شُعَيْبٍ حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ أَعْيَنَ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ رَاشِدٍ أَنَّ الزُّهْرِيَّ حَدَّثَهُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ سَمِعْتُ أَبِيْ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ وَهُوَ أَحَدُ الثَلَاثَةِ الَّذِيْنَ تِيْبَ عَلَيْهِمْ أَنَّهُ لَمْ يَتَخَلَّفْ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ غَزْوَةٍ غَزَاهَا قَطُّ غَيْرَ غَزْوَتَيْنِ غَزْوَةِ الْعُسْرَةِ وَغَزْوَةِ بَدْرٍ قَالَ فَأَجْمَعْتُ صِدْقِيْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم ضُحًى وَكَانَ قَلَّمَا يَقْدَمُ مِنْ سَفَرٍ سَافَرَهُ إِلَّا ضُحًى وَكَانَ يَبْدَأُ بِالْمَسْجِدِ فَيَرْكَعُ رَكْعَتَيْنِ وَنَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ كَلَامِيْ وَكَلَامِ صَاحِبَيَّ وَلَمْ يَنْهَ عَنْ كَلَامِ أَحَدٍ مِنَ الْمُتَخَلِّفِيْنَ غَيْرِنَا فَاجْتَنَبَ النَّاسُ كَلَامَنَا فَلَبِثْتُ كَذَلِكَ حَتَّى طَالَ عَلَيَّ الْأَمْرُ وَمَا مِنْ شَيْءٍ أَهَمُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَمُوْتَ فَلَا يُصَلِّيْ عَلَيَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَوْ يَمُوْتَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَكُوْنَ مِنْ النَّاسِ بِتِلْكَ الْمَنْزِلَةِ فَلَا يُكَلِّمُنِيْ أَحَدٌ مِنْهُمْ وَلَا يُصَلِّيْ وَلَا يُسَلِّمُ عَلَيَّ فَأَنْزَلَ اللهُ تَوْبَتَنَا عَلَى نَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ بَقِيَ الثُّلُثُ الْآخِرُ مِنْ اللَّيْلِ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ أُمِّ سَلَمَةَ وَكَانَتْ أُمُّ سَلَمَةَ مُحْسِنَةً فِيْ شَأْنِيْ مَعْنِيَّةً فِيْ أَمْرِيْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَا أُمَّ سَلَمَةَ تِيْبَ عَلَى كَعْبٍ قَالَتْ أَفَلَا أُرْسِلُ إِلَيْهِ فَأُبَشِّرَهُ قَالَ إِذًا يَحْطِمَكُمْ النَّاسُ فَيَمْنَعُوْنَكُمْ النَّوْمَ سَائِرَ اللَّيْلَةِ حَتَّى إِذَا صَلَّى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صَلَاةَ الْفَجْرِ آذَنَ بِتَوْبَةِ اللهِ عَلَيْنَا وَكَانَ إِذَا اسْتَبْشَرَ اسْتَنَارَ وَجْهُهُ حَتَّى كَأَنَّهُ قِطْعَةٌ مِنَ الْقَمَرِ وَكُنَّا أَيُّهَا الثَلَاثَةُ الَّذِيْنَ خُلِّفُوْا عَنِ الْأَمْرِ الَّذِيْ قُبِلَ مِنْ هَؤُلَاءِ الَّذِيْنَ اعْتَذَرُوْا حِيْنَ أَنْزَلَ اللهُ لَنَا التَّوْبَةَ فَلَمَّا ذُكِرَ الَّذِيْنَ كَذَبُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْمُتَخَلِّفِيْنَ وَاعْتَذَرُوْا بِالْبَاطِلِ ذُكِرُوْا بِشَرِّ مَا ذُكِرَ بِهِ أَحَدٌ قَالَ اللهُ سُبْحَانَهُ {يَعْتَذِرُوْنَ إِلَيْكُمْ إِذَا رَجَعْتُمْ إِلَيْهِمْ طقُلْ لَّا تَعْتَذِرُوْا لَنْ نُّؤْمِنَ لَكُمْ قَدْ نَبَّأَنَا اللهُ مِنْ أَخْبَارِكُمْ طوَسَيَرَى اللهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُوْلُه”} الْآيَةَ.
‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু কা‘ব ইবনু মালিক (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি আমার পিতা কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে শুনেছি, যে তিনজনের তাওবাহ কবূল হয়েছিল, তার মধ্যে তিনি একজন। তিনি বাদরের যুদ্ধ ও তাবূকের যুদ্ধ এ দু’টি ব্যতীত অন্য কোন যুদ্ধে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পশ্চাতে থাকেননি। কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাবূক যুদ্ধ হতে সূর্যোদয়ের সময় মদিনায় ফিরে আসলে আমি (মিথ্যার পরিবর্তে) সত্য প্রকাশের দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করলাম। তিনি [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)] যে কোন সফর হতে সাধারণত সূর্যোদয়ের সময় ফিরে আসতেন এবং সর্বপ্রথম মাসজিদে গিয়ে দু’রাক‘আত নাফল সলাত আদায় করতেন। (তাবূকের যুদ্ধ থেকে এসে) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার সঙ্গে এবং আমার সঙ্গীদের সঙ্গে কথা বলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন, অথচ আমাদের ব্যতীত অন্য যারা যুদ্ধে যাওয়া থেকে বিরত ছিল, তাদের সঙ্গে কথা বলায় কোন প্রকার বাধা প্রদান করলেন না। সুতরাং লোকেরা আমাদের সঙ্গে কথা বলা থেকে বিরত থাকতে লাগলেন। আমার কাছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার ছিল যে, যদি এ অবস্থায় আমার মৃত্যু এসে যায়, আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার জানাযাহর সলাত আদায় না করেন, অথবা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ওফাত হলে আমি মানুষের কাছে এই অবস্থায় থেকে যাব তারা কেউ আমার সঙ্গে কথাও বলবে না, আর আমার জানাযার সলাতও আদায় করবে না। এরপর (পঞ্চাশ দিন পর) আল্লাহ তা‘আলা আমার তওবা কবূল করে তাঁর [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর] প্রতি আয়াত অবতীর্ণ করেন। তখন রাতের শেষ-তৃতীয়াংশ বাকী ছিল। সে রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর কাছে ছিলেন, উম্মু সালামাহ (রাঃ) আমার প্রতি সদয় ও সহানুভূতিশীল ছিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে উম্মু সালামাহ! কা‘বের তাওবাহ কবূল করা হয়েছে। উম্মু সালামাহ (রাঃ) বললেন, তাকে সুসংবাদ দেয়ার জন্য কাউকে তার কাছে পাঠাব? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এখন খবর পেলে সব লোক এসে জমা হয়ে যাবে। তারা তোমাদের ঘুম নষ্ট করে দিবে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফাজরের সলাত আদায়ের পর আমাদের তওবা কবূল হওয়ার কথা ঘোষণা করে দিলেন। এ সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর চেহারা খুশীতে এমন চমকাচ্ছিল যেন চাঁদের টুকরা।
যেসব মুনাফিক মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অসন্তুষ্টি থেকে] রেহাই পেয়েছিল, তাদের চেয়ে তাওবাহ কবূলের ব্যাপারে আমরা তিনজন পিছনে পড়ে গিয়েছিলাম, এরপর আল্লাহ তা‘আলা আমাদের তওবা কবূল করে আয়াত অবতীর্ণ করেন।
(তাবূকের যুদ্ধে) অনুপস্থিতদের মধ্যে যারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে মিথ্যা কথা বলেছে এবং যারা মিথ্যা অজুহাত দেখিয়েছে তাদের জঘন্যভাবে নিন্দাবাদ করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, “তারা তোমাদের কাছে ওযর পেশ করবে যখন তোমরা তাদের কাছে ফিরে আসবে। আপনি বলে দিনঃ তোমরা ওযর পেশ করো না, আমরা কখনও তোমাদের বিশ্বাস করব না; আল্লাহ তো আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন তোমাদের খবর; আর ভবিষ্যতেও আল্লাহ তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য রাখবেন এবং তাঁর রসূলও” (সূরাহ বারাআত ৯/৯৪)। [২৭৫৭] (আ.প্র. ৪৩১৬, ই.ফা. ৪৩১৭)
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ وَكَانَ قَائِدَ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ سَمِعْتُ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ يُحَدِّثُ حِيْنَ تَخَلَّفَ عَنْ قِصَّةِ تَبُوْكَ فَوَاللهِ مَا أَعْلَمُ أَحَدًا أَبْلَاهُ اللهُ فِيْ صِدْقِ الْحَدِيْثِ أَحْسَنَ مِمَّا أَبْلَانِيْ مَا تَعَمَّدْتُ مُنْذُ ذَكَرْتُ ذَلِكَ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى يَوْمِيْ هَذَا كَذِبًا وَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَى رَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم لَقَدْ تَابَ اللهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِيْنَ وَالأَنْصَارِ إِلَى قَوْلِهِ وَكُوْنُوْا مَعَ الصَّادِقِيْنَ.
‘আবদুল্লাহ ইবনু কা‘ব ইবনু মালিক (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
যিনি কা‘ব ইবনু মালিক (দৃষ্টিহীন হওয়ার পরে)-এর পথপ্রদর্শক হিসেবে ছিলেন। তিনি (‘আবদুল্লাহ) বলেন, আমি কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ)-কে, তাবূক যুদ্ধে যারা পশ্চাতে থেকে গিয়েছিলেন তাদের ঘটনা বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আল্লাহ্র কসম! হয়ত আল্লাহ (রসূলুল্লাহর কাছে) সত্য কথা প্রকাশের কারণে, অন্য কাউকে এত বড় সুন্দর পরীক্ষা করেননি যতটুকু আমাকে পরীক্ষা করেছেন।
যখন আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে তাবূক যুদ্ধে না যাওয়ার সঠিক কারণ বর্ণনা করেছি তখন থেকে আজ পর্যন্ত মিথ্যা বলার ইচ্ছাও করিনি। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ওপর এ আয়াতটি নাযিল করেন لَقَدْ تَابَ اللهُ.... وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ “আল্লাহ অনুগ্রহপরায়ণ হলেন নাবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি ........... এবং সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও।” (সূরাহ বারাআত ৯/১১৭-১১৯) (আ.প্র. ৪৩১৭, ই.ফা. ৪৩১৮)
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ السَّبَّاقِ أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ الْأَنْصَارِيَّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ وَكَانَ مِمَّنْ يَكْتُبُ الْوَحْيَ قَالَ أَرْسَلَ إِلَيَّ أَبُوْ بَكْرٍ مَقْتَلَ أَهْلِ الْيَمَامَةِ وَعِنْدَهُ عُمَرُ فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ إِنَّ عُمَرَ أَتَانِيْ فَقَالَ إِنَّ الْقَتْلَ قَدْ اسْتَحَرَّ يَوْمَ الْيَمَامَةِ بِالنَّاسِ وَإِنِّيْ أَخْشَى أَنْ يَسْتَحِرَّ الْقَتْلُ بِالْقُرَّاءِ فِي الْمَوَاطِنِ فَيَذْهَبَ كَثِيْرٌ مِنَ الْقُرْآنِ إِلَّا أَنْ تَجْمَعُوْهُ وَإِنِّيْ لَأَرَى أَنْ تَجْمَعَ الْقُرْآنَ قَالَ أَبُوْ بَكْرٍ قُلْتُ لِعُمَرَ كَيْفَ أَفْعَلُ شَيْئًا لَمْ يَفْعَلْهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ عُمَرُ هُوَ وَاللهِ خَيْرٌ فَلَمْ يَزَلْ عُمَرُ يُرَاجِعُنِيْ فِيْهِ حَتَّى شَرَحَ اللهُ لِذَلِكَ صَدْرِيْ وَرَأَيْتُ الَّذِيْ رَأَى عُمَرُ قَالَ زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ وَعُمَرُ عِنْدَهُ جَالِسٌ لَا يَتَكَلَّمُ.
فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ إِنَّكَ رَجُلٌ شَابٌّ عَاقِلٌ وَلَا نَتَّهِمُكَ كُنْتَ تَكْتُبُ الْوَحْيَ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَتَتَبَّعُ الْقُرْآنَ فَاجْمَعْهُ فَوَاللهِ لَوْ كَلَّفَنِيْ نَقْلَ جَبَلٍ مِنَ الْجِبَالِ مَا كَانَ أَثْقَلَ عَلَيَّ مِمَّا أَمَرَنِيْ بِهِ مِنْ جَمْعِ الْقُرْآنِ قُلْتُ كَيْفَ تَفْعَلَانِ شَيْئًا لَمْ يَفْعَلْهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ هُوَ وَاللهِ خَيْرٌ فَلَمْ أَزَلْ أُرَاجِعُهُ حَتَّى شَرَحَ اللهُ صَدْرِيْ لِلَّذِيْ شَرَحَ اللهُ لَهُ صَدْرَ أَبِيْ بَكْرٍ وَعُمَرَ فَقُمْتُ فَتَتَبَّعْتُ الْقُرْآنَ أَجْمَعُهُ مِنْ الرِّقَاعِ وَالأَكْتَافِ وَالْعُسُبِ وَصُدُوْرِ الرِّجَالِ حَتَّى وَجَدْتُ مِنْ سُوْرَةِ التَّوْبَةِ آيَتَيْنِ مَعَ خُزَيْمَةَ الْأَنْصَارِيِّ لَمْ أَجِدْهُمَا مَعَ أَحَدٍ غَيْرِهِ {لَقَدْ جَآءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيْصٌ} إِلَى آخِرِهِمَا وَكَانَتْ الصُّحُفُ الَّتِيْ جُمِعَ فِيْهَا الْقُرْآنُ عِنْدَ أَبِيْ بَكْرٍ حَتَّى تَوَفَّاهُ اللهُ ثُمَّ عِنْدَ عُمَرَ حَتَّى تَوَفَّاهُ اللهُ ثُمَّ عِنْدَ حَفْصَةَ بِنْتِ عُمَرَ تَابَعَهُ عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ وَاللَّيْثُ عَنْ يُوْنُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ خَالِدٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ وَقَالَ مَعَ أَبِيْ خُزَيْمَةَ الْأَنْصَارِيِّ وَقَالَ مُوْسَى عَنْ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ مَعَ أَبِيْ خُزَيْمَةَ وَتَابَعَهُ يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ أَبِيْهِ وَقَالَ أَبُوْ ثَابِتٍ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ وَقَالَ مَعَ خُزَيْمَةَ أَوْ أَبِيْ خُزَيْمَةَ.
যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যিনি ওয়াহী লেখকদের মধ্যে একজন ছিলেন, তিনি বলেন, আবূ বাক্র (রাঃ) (তার খিলাফাতের সময়) এক ব্যক্তিকে আমার কাছে ইয়ামামার যুদ্ধক্ষেত্রে প্রেরণ করলেন। (আমি তার কাছে চলে আসলাম) তখন তার কাছে ‘উমার (রাঃ) বসা ছিলেন। তিনি [আবূ বাক্র (রাঃ) আমাকে] বললেন, ‘উমার (রাঃ) আমার কাছে এসে বললেন যে, ইয়ামামার যুদ্ধ তীব্র গতিতে চলছে, আমার ভয় হচ্ছে, কুরআনের অভিজ্ঞগণ (হাফিযগণ) ইয়ামামার যুদ্ধে শহীদ হয়ে যান নাকি! যদি আপনারা তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করেন তবে কুরআনের অনেক অংশ চলে যেতে পারে এবং কুরআনকে একত্রিত সংরক্ষণ করা ভাল মনে করি। আবূ বাক্র (রাঃ) বলেন, আমি ‘উমার (রাঃ)-কে বললাম, আমি এ কাজ কীভাবে করতে পারি, যা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) করে যাননি। কিন্তু ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্র কসম! এটা কল্যাণকর। ‘উমার (রাঃ) তাঁর এ কথার পুনরুক্তি করতে থাকেন, শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা এ কাজ করার জন্য আমার অন্তর খুলে দিলেন এবং আমিও ‘উমার (রাঃ)-এর মতোই মতামত পেশ করলাম। যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) বলেন, ‘উমার (রাঃ) সেখানে নীরবে বসা ছিলেন, কোন কথা বলছিলেন না। এরপর আবূ বাক্র (রাঃ) আমাকে বললেন, দেখ, তুমি যুবক এবং জ্ঞানী ব্যক্তি। আমরা তোমার প্রতি কোনরূপ খারাপ ধারণা রাখি না। কেননা, তুমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সময়ে ওয়াহী লিপিবদ্ধ করতে। সুতরাং তুমি কুরআনের আয়াত সংগ্রহ করে একত্রিত কর। আল্লাহ্র কসম! তিনি কুরআন একত্রিত করার যে নির্দেশ আমাকে দিলেন সেটি আমার কাছে এত ভারী মনে হল যে, তিনি যদি কোন একটি পর্বত স্থানান্তর করার আদেশ দিতেন তাও আমার কাছে এমন ভারী মনে হত না। আমি বললাম, যে কাজটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) করে যাননি, সে কাজটি আপনারা কীভাবে করবেন? তখন আবূ বাক্র (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্র কসম! এটাই কল্যাণকর। এরপর আমিও আমার কথার উপর বারবার জোর দিতে লাগলাম। শেষে আল্লাহ যেটা বুঝার জন্য আবূ বাক্র (রাঃ) ও ‘উমার (রাঃ)-এর অন্তর খুলে দিয়েছিলেন, আমার অন্তরকেও তা বুঝার জন্য খুলে দিলেন। এরপর আমি কুরআন সংগ্রহে লেগে গেলাম এবং হাড়, চামড়া, খেজুর ডাল ও বাকল এবং মানুষের স্মৃতি থেকে তা সংগ্রহ করলাম। অবশেষে খুযাইমাহ আনসারীর কাছে সূরায়ে তাওবার দু’টি আয়াত পেয়ে গেলাম, যা অন্য কারও নিকট হতে সংগ্রহ করতে পারিনি। لَقَدْ جَاءَكُمْ থেকে শেষ পর্যন্ত।
এরপর এ একত্রিত কুরআন আবূ বাক্র (রাঃ)-এর ওফাত পর্যন্ত তাঁর কাছেই জমা ছিল। তারপর ‘উমার (রাঃ)-এর কাছে। তার ওফাত পর্যন্ত এটি তার কাছেই ছিল। তারপর ছিল হাফসাহ বিনত ‘উমার (রাঃ)-এর কাছে। ‘উসমান এবং লাইস (রহ.) خُزَيْمَةَ শব্দের বর্ণনায় শু‘আয়ব-এর অনুসরণ করেছেন।
অন্য এক সনদেও ইবনু শিহাব থেকে এ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তাতে খুযাইমার স্থলে আবূ খুযাইমাহ আনসারী বলা হয়েছে। মূসা-এর সনদে عَنْ ابْنِ شِهَابٍ এর স্থলে حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ এবং আবূ খুযাইমাহ